ঢাকা ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




নতুন সরকার আসার শুরুতেই তদবিরে অতিষ্ঠ মন্ত্রীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৩২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

ভোর থেকে প্রায় দুপুর পযর্ন্ত লোকজন আসেন। আবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত ভিড় লেগে থাকে। সবাই কোনো না কোনো বিষয়ে তদবির নিয়েই আসেন

নতুন সরকার আসার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক, সামাজিক, ধমীর্য় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পেতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে নতুন মন্ত্রিসভা হওয়ার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে নিয়োগের জন্য অনেকই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকমীের্দর দ্বারস্থ হচ্ছেন। আবার কেউ নিজস্ব মাধ্যমে মন্ত্রী-এমপিদের কাছে ছুটছেন তদবির নিয়ে। ফলে সকাল থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত তদবিরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নতুন মন্ত্রী-এমপিরা। বাসা, অফিস, সচিবালয় এমনকি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রোগ্রমে যোগ দিয়েও রেহাই পাচ্ছেন না তারা।

খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূণর্ পদ ছাড়াও স্থানীয় পযাের্য় স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বাজার, মসজিদ-মন্দির কমিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রতিদিনই মন্ত্রী-এমপিদের কাছে যাচ্ছেন। এতে সকাল থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত তদবির নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় নতুন মন্ত্রী-এমপিদের ।

ঢাকার পাশ্বর্বতীর্ জেলার একজন সাংসদের ব্যক্তিগত কমর্কতার্ জানান, স্যার (এমপি) এই কয়দিন ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াও করতে পারেননি। নতুন দায়িত্ব পাওয়ায় একটু বেশি চাপ যাচ্ছে। তাছাড়া মানুষ নানা সমস্যা নিয়ে আসছেন। নিয়োগ, বদলি আর বিভিন্ন কমিটি সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে বেশি লোকজন আসছে। এমনকি সম্প্রতি এক এলাকার মসজিদ কমিটির সভাপতি হতেও কয়েকজন দেখা করে গেছেন বলে জানান তিনি।

আলাপকালে বতর্মান সরকারের একজন মন্ত্রী যায়যায়দিনকে বলেন, সকাল থেকে রাত পযর্ন্ত সবাইকে সময় দিতে হয়। মানুষ ভোট দিয়ে নিবাির্চত করেছেন। তাদের সমস্যা নিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে নতুন সরকার ও নতুন বছর হওয়ার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূণর্ পদে পরিবতর্ন করা হতে পারে। সেই জায়গাগুলোতে যাতে ত্যাগী ও যোগ্যরা স্থান পায় সেদিকে সতকর্ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

ওই মন্ত্রীর বাসার এক নিরাপত্তা রক্ষীর ভাষ্যমতে, ভোর থেকে প্রায় দুপুর পযর্ন্ত লোকজন আসেন। আবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত ভিড় লেগে থাকে। সবাই কোনো না কোনো বিষয়ে তদবির নিয়েই আসেন। নিজের স্বাথর্ ছাড়া তো আর কেউ আসার কথা না। একই অবস্থা সচিবালয়েও। সারাদিনই বিভিন্ন পেশার মানুষের আনাগোনাতে নিয়মিত কাজ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা।

অন্য একটি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কমর্কতার্ যায়যায়দিনকে বলেন, ‘স্যার (মন্ত্রী) সচিবালয়ে অফিস করার প্রথম দিন থেকেই উনার এলাকাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসছেন; ফুল দিচ্ছেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি নানা সমস্যা নিয়েও আলোচনা করছেন। এরমধ্যে ব্যক্তিগত সামাজিক নানা সমস্য থাকে।’

এদিকে, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় রাজনৈতিক পদে নিয়োগ পেতেও চলছে জোর তদবির। সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের টিকিটে নিবাির্চত সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের দ্বারে দ্বারেও যাচ্ছেন তারা। সরকারি লোভনীয় নানা পদে বসতে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ের কমর্কতাের্দর কাছেও তদবির নিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান, পরিচালক, মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, বিভিন্ন কপোের্রশনের পরিচালক, বিভিন্ন কমিশনের সদস্য, বিদেশে অবস্থিত দেশের দূতাবাস ও আথির্ক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ নিয়োগের দৌড়ঝঁাপ শুরু হয়েছে। বিগত সময়ে এসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়ে আসছে। সাধারণত সরকার সমথর্ক ও সরকারের শুভানুধ্যায়ী হিসেবে পরিচিতরাই এসব পদে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন কারণে পদগুলোকে ‘রাজনৈতিক পদ’ হিসেবে অনেকেই চিহ্নিত করে থাকেন। নতুন সরকারের আমলেও সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় প্রায় হাজার খানেক পদে নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।

রাজনৈতিক এসব পদ ছাড়াও জনপ্রশাসনের বিভিন্ন পদ থেকে অবসর নিয়ে যারা চুক্তিভিত্তিক আছেন, এমন কয়েকজনও চুক্তি নবায়ন করাতে মন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন। এক্ষেত্রে এলাকাপ্রীতি ও ব্যক্তিগত আনুগত্যকেও সামনে নিয়ে আসছেন অনেকেই। যাদের সরকারি পদ থেকে অবসর নেয়ার সময় ঘনিয়ে আসছে, এমন ব্যক্তিরা বসে নেই। অবসরে যাওয়ার পর যাতে পছন্দমতো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয় সেই ব্যবস্থা করতে তারাও তৎপরতা চালাচ্ছেন।

গত বছরের অক্টোবর মাসে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘সরকারি চাকরি বিল-২০১৮’ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার বিধান আছে। তবে নতুন দায়িত্ব নিয়ে সরকার এখন পযর্ন্ত চুক্তিভিত্তিক কোনো নিয়োগ দেয়নি। সরকারের শীষর্ পযাের্য়র বক্তব্যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকে নিরুৎসাহিত করার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দলীয় বিবেচনায় বিতকির্তদের নিয়োগ না দেয়ার সিদ্ধান্তও আছে। তবে সরকারের এমন মনোভাবের পরও থেমে নেই তদবিরবাজদের তৎপরতা।

সূত্রমতে, নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়ার পর থেকে তাদের একান্ত সচিব (পিএস) ও সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হতে অনেকে দৌড়ঝঁপ শুরু করেন। সরকারি কমর্কতার্ বা দলীয় কমীর্সহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের ছেলে ও বা মেয়েরাও পিএস, এপিএস হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার নজির আছে। তারা নানা বিতকের্র জন্মও দিয়েছেন। তবে এবার পিএস নিয়োগ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পরামশের্। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নতুন মন্ত্রিসভার ৪৬ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর পিএস নিয়োগ দিয়ে আদেশও জারি করে। এক্ষেত্রে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের কারো মতামত নেয়া হয়নি। সুশাসন নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

একান্ত সচিব (পিএস) সরকার নিধাির্রত করে দিলেও পছন্দের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) নিয়োগ দিতে পারছেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এপিএসদেরও এবার কড়া নজরদারিতে রাখবে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়।

নাম প্রকাশ না করার শতের্ আওয়ামী লীগের নীতিনিধার্রণী পযাের্য়র একজন নেতা যায়যায়দিনকে বলেন, ‘যারা কখনো দল করেননি, দলের দুদিের্ন পাশে দঁাড়াননি, এমন অনেকেই আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে রাজনৈতিক পদে বসছেন। চাকরি করছেন। তারা বিভিন্ন অভিযোগে জড়িয়ে দল ও সরকারকে বিতকির্ত করছেন। দলের জন্য যারা বিভিন্ন সময় অবদান রেখেছেন, একাদশ সংসদ নিবার্চনে মনোনয়ন পাননি বা আসন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে পারবেন না, যাদের দলের জন্য ত্যাগ থাকলেও যথাযথ পদ নেই, তাদেরকে মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরিগুলোর ক্ষেত্রে মূল্যায়ন করা উচিত।’

অন্যদিকে, তদবিরকে প্রশ্রয় না দিতে নতুন মন্ত্রিসভাকে শুরুতেই কঠোর নিদের্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চতুথর্ দফায় সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুনীির্তর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিন থেকেই দুনীির্তর বিরুদ্ধে সোচ্ছার। দায়িত্ব নিয়ে তিনি এ পযর্ন্ত যতগুলো বৈঠক ও সভা করেছেন, তার প্রত্যেকটিতে দুনীির্তর বিরুদ্ধে কঠোর বাতার্ দিয়েছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




নতুন সরকার আসার শুরুতেই তদবিরে অতিষ্ঠ মন্ত্রীরা

আপডেট সময় : ১২:৩২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

ভোর থেকে প্রায় দুপুর পযর্ন্ত লোকজন আসেন। আবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত ভিড় লেগে থাকে। সবাই কোনো না কোনো বিষয়ে তদবির নিয়েই আসেন

নতুন সরকার আসার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক, সামাজিক, ধমীর্য় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পেতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে নতুন মন্ত্রিসভা হওয়ার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে নিয়োগের জন্য অনেকই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকমীের্দর দ্বারস্থ হচ্ছেন। আবার কেউ নিজস্ব মাধ্যমে মন্ত্রী-এমপিদের কাছে ছুটছেন তদবির নিয়ে। ফলে সকাল থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত তদবিরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নতুন মন্ত্রী-এমপিরা। বাসা, অফিস, সচিবালয় এমনকি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রোগ্রমে যোগ দিয়েও রেহাই পাচ্ছেন না তারা।

খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূণর্ পদ ছাড়াও স্থানীয় পযাের্য় স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বাজার, মসজিদ-মন্দির কমিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রতিদিনই মন্ত্রী-এমপিদের কাছে যাচ্ছেন। এতে সকাল থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত তদবির নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় নতুন মন্ত্রী-এমপিদের ।

ঢাকার পাশ্বর্বতীর্ জেলার একজন সাংসদের ব্যক্তিগত কমর্কতার্ জানান, স্যার (এমপি) এই কয়দিন ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াও করতে পারেননি। নতুন দায়িত্ব পাওয়ায় একটু বেশি চাপ যাচ্ছে। তাছাড়া মানুষ নানা সমস্যা নিয়ে আসছেন। নিয়োগ, বদলি আর বিভিন্ন কমিটি সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে বেশি লোকজন আসছে। এমনকি সম্প্রতি এক এলাকার মসজিদ কমিটির সভাপতি হতেও কয়েকজন দেখা করে গেছেন বলে জানান তিনি।

আলাপকালে বতর্মান সরকারের একজন মন্ত্রী যায়যায়দিনকে বলেন, সকাল থেকে রাত পযর্ন্ত সবাইকে সময় দিতে হয়। মানুষ ভোট দিয়ে নিবাির্চত করেছেন। তাদের সমস্যা নিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে নতুন সরকার ও নতুন বছর হওয়ার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূণর্ পদে পরিবতর্ন করা হতে পারে। সেই জায়গাগুলোতে যাতে ত্যাগী ও যোগ্যরা স্থান পায় সেদিকে সতকর্ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

ওই মন্ত্রীর বাসার এক নিরাপত্তা রক্ষীর ভাষ্যমতে, ভোর থেকে প্রায় দুপুর পযর্ন্ত লোকজন আসেন। আবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত ভিড় লেগে থাকে। সবাই কোনো না কোনো বিষয়ে তদবির নিয়েই আসেন। নিজের স্বাথর্ ছাড়া তো আর কেউ আসার কথা না। একই অবস্থা সচিবালয়েও। সারাদিনই বিভিন্ন পেশার মানুষের আনাগোনাতে নিয়মিত কাজ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা।

অন্য একটি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কমর্কতার্ যায়যায়দিনকে বলেন, ‘স্যার (মন্ত্রী) সচিবালয়ে অফিস করার প্রথম দিন থেকেই উনার এলাকাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসছেন; ফুল দিচ্ছেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি নানা সমস্যা নিয়েও আলোচনা করছেন। এরমধ্যে ব্যক্তিগত সামাজিক নানা সমস্য থাকে।’

এদিকে, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় রাজনৈতিক পদে নিয়োগ পেতেও চলছে জোর তদবির। সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের টিকিটে নিবাির্চত সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের দ্বারে দ্বারেও যাচ্ছেন তারা। সরকারি লোভনীয় নানা পদে বসতে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ের কমর্কতাের্দর কাছেও তদবির নিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান, পরিচালক, মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, বিভিন্ন কপোের্রশনের পরিচালক, বিভিন্ন কমিশনের সদস্য, বিদেশে অবস্থিত দেশের দূতাবাস ও আথির্ক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ নিয়োগের দৌড়ঝঁাপ শুরু হয়েছে। বিগত সময়ে এসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়ে আসছে। সাধারণত সরকার সমথর্ক ও সরকারের শুভানুধ্যায়ী হিসেবে পরিচিতরাই এসব পদে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন কারণে পদগুলোকে ‘রাজনৈতিক পদ’ হিসেবে অনেকেই চিহ্নিত করে থাকেন। নতুন সরকারের আমলেও সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় প্রায় হাজার খানেক পদে নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।

রাজনৈতিক এসব পদ ছাড়াও জনপ্রশাসনের বিভিন্ন পদ থেকে অবসর নিয়ে যারা চুক্তিভিত্তিক আছেন, এমন কয়েকজনও চুক্তি নবায়ন করাতে মন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন। এক্ষেত্রে এলাকাপ্রীতি ও ব্যক্তিগত আনুগত্যকেও সামনে নিয়ে আসছেন অনেকেই। যাদের সরকারি পদ থেকে অবসর নেয়ার সময় ঘনিয়ে আসছে, এমন ব্যক্তিরা বসে নেই। অবসরে যাওয়ার পর যাতে পছন্দমতো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয় সেই ব্যবস্থা করতে তারাও তৎপরতা চালাচ্ছেন।

গত বছরের অক্টোবর মাসে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘সরকারি চাকরি বিল-২০১৮’ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার বিধান আছে। তবে নতুন দায়িত্ব নিয়ে সরকার এখন পযর্ন্ত চুক্তিভিত্তিক কোনো নিয়োগ দেয়নি। সরকারের শীষর্ পযাের্য়র বক্তব্যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকে নিরুৎসাহিত করার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দলীয় বিবেচনায় বিতকির্তদের নিয়োগ না দেয়ার সিদ্ধান্তও আছে। তবে সরকারের এমন মনোভাবের পরও থেমে নেই তদবিরবাজদের তৎপরতা।

সূত্রমতে, নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়ার পর থেকে তাদের একান্ত সচিব (পিএস) ও সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হতে অনেকে দৌড়ঝঁপ শুরু করেন। সরকারি কমর্কতার্ বা দলীয় কমীর্সহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের ছেলে ও বা মেয়েরাও পিএস, এপিএস হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার নজির আছে। তারা নানা বিতকের্র জন্মও দিয়েছেন। তবে এবার পিএস নিয়োগ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পরামশের্। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নতুন মন্ত্রিসভার ৪৬ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর পিএস নিয়োগ দিয়ে আদেশও জারি করে। এক্ষেত্রে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের কারো মতামত নেয়া হয়নি। সুশাসন নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

একান্ত সচিব (পিএস) সরকার নিধাির্রত করে দিলেও পছন্দের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) নিয়োগ দিতে পারছেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এপিএসদেরও এবার কড়া নজরদারিতে রাখবে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়।

নাম প্রকাশ না করার শতের্ আওয়ামী লীগের নীতিনিধার্রণী পযাের্য়র একজন নেতা যায়যায়দিনকে বলেন, ‘যারা কখনো দল করেননি, দলের দুদিের্ন পাশে দঁাড়াননি, এমন অনেকেই আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে রাজনৈতিক পদে বসছেন। চাকরি করছেন। তারা বিভিন্ন অভিযোগে জড়িয়ে দল ও সরকারকে বিতকির্ত করছেন। দলের জন্য যারা বিভিন্ন সময় অবদান রেখেছেন, একাদশ সংসদ নিবার্চনে মনোনয়ন পাননি বা আসন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে পারবেন না, যাদের দলের জন্য ত্যাগ থাকলেও যথাযথ পদ নেই, তাদেরকে মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরিগুলোর ক্ষেত্রে মূল্যায়ন করা উচিত।’

অন্যদিকে, তদবিরকে প্রশ্রয় না দিতে নতুন মন্ত্রিসভাকে শুরুতেই কঠোর নিদের্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চতুথর্ দফায় সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুনীির্তর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিন থেকেই দুনীির্তর বিরুদ্ধে সোচ্ছার। দায়িত্ব নিয়ে তিনি এ পযর্ন্ত যতগুলো বৈঠক ও সভা করেছেন, তার প্রত্যেকটিতে দুনীির্তর বিরুদ্ধে কঠোর বাতার্ দিয়েছেন তিনি।