আন্তর্জাতিক ডেস্ক; ধর্মীয় বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া মুসলিমদের মৃতদেহও পুড়িয়ে ফেলতে বাধ্য করতে শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষ। শ্রীলঙ্কায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে যে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে চারজন মুসলিম। কিন্তু দেশটির সরকারের কড়াকড়ির কারণে ধর্মীয় রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে মারা যাওয়া এসব মুসলিম ব্যক্তির মৃতদেহও পুড়িয়ে ফেলতে হয়েছে।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে জুবেইর ফাতিমা রিনোসার সঙ্গে। ৪৪ বছর এই নারী মারা যাওয়ার পর তার মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। কিন্তু তার মৃত্যুর দুইদিন পর জানা যায় যে, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। এখন রিনোসার পরিবার এ ঘটনায় বিচার ও ব্যাখ্যা চাইছে।
রিনোসার চার ছেলের মধ্যে একজনের নাম মোহাম্মদ সাজিদ। তিনি বলেন, গত ৫ মে তার মায়ের মৃতদেহ দাহ করা হয়। সাজিদ বলেন, সরকারের চাপে তার ভাই মৃতদেহ সৎকারের কাগজে সই করতে বাধ্য হয়।
তবে দুইদিন পর রিনোসার পরিবার জানতে পারে যে, তিনি করোনায় মারা যাননি। সাজিদ বলেন, ৭ মে গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে তার মায়ের প্রাথমিক যে রিপোর্ট এসেছিল তা ভুল ছিল। তিনি করোনায় মারা যাননি।
তিনি বলেন, এ কথা জানার পর আমার বাবা খুব কান্না করেছেন। কেননা আমার মায়ের মৃতদেহ ‘অন্যায়ভাবে’ দাহ করা হয়েছে।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্রটি শুরুর দিকে করোনায় মারা যাওয়াদের দাফনের ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু গত ১১ এপ্রিল ওই নির্দেশনা সংশোধন করে করোনায় মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের দাহের গাইডলাইন দেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের মৌলিক ধর্মীয় অধিকারের লঙ্ঘিত হয়েছে।
এদিকে শ্রীলঙ্কার উলামা পরিষদ মুসলিম ব্যক্তিদের মৃতদেহ দাফন করার অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে অল সিলন জামিয়াতুল উলামা জানিয়েছে, ডব্লিউএইচও’র গাইডলাইন মেনে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনের ওপর আমরা জোরারোপ করছি। মুসলিম সম্প্রদায়ের কেউ মারা গেলে ধর্মীয়ভাবে তাকে দাফনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং ডব্লিউএইচও’র গাইডলাইন মেনে ১৮০টির বেশি দেশে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফন করা হচ্ছে।