সিরাজুল হক; সাজিদ জগৎ বিখ্যাত মনীষী হিপোক্রিটাসর অমর বাণী “রোগী যে দেশে বসবাস করেসে দেশের ভেষজ দিয়ে তার চিকিৎসা করো । একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বব্যাপী বিশ্বব্যাপি স্লোগান হচ্ছে Back to Nature অর্থ্যাৎ প্রকৃতির দিকে ফিরে আসো। কারণ প্রকৃতিতেই রয়েছে মানব জাতির রোগ মুক্তির সব উপাদান, প্রকৃতিই আরোগ্য ন্যাচার ইজ দ্যা হিলার।
সবচেয়ে প্রাচীন চিকিৎসা ব্যাবস্থা ইউনানী তথা হারবাল মেডিসিন। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে পৃথিবীতে মানবজাতি শুধু মাত্র ভেষজউদ্ভিদ দিয়ে তৈরী ঔষধ সেবন করে সুস্থতা লাভ করেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানেরজনক ইবনে সিনা, বিখ্যাত বিজ্ঞানী আল নাফিস অলবিরুনী ও ইবনে হাইয়ানসহ আরও অনেক রোগতত্ব বিশেষজ্ঞ এবং পন্ডিতগন শুধুমাত্র ভেষজ চিকিৎসার উপর নির্ভরশীল ছিলেন। রাসায়নিক কেমিক্যালযুক্ত এ্যালোপ্যাথিক ঔষধে মারাক্তক ক্ষতিকর দিক বিশেষ করে এন্টিবায়োটিকের পার্শ প্রতিক্রিয়া এবং কার্যকারিতা দিনদিন কমে যাওয়ায় উন্নÍত বিশ্বও ইউনানী হারবাল মেডিসিনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি অল্টারনেটিভ মেডিসিন বিশ্বব্যপি সমাদৃত হচ্ছে। যা এই সেক্টরের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। কোভিড -১৯ যেখানে সারা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেখানে সার্কভুক্তআটটি দেশে মন্থর। সাউথ এশিয়া ইকোনোমিক ফোকাসের তৈরী একটি সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করেছে বিশ্ব ব্যাংক। শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, নেপাল,পাকিস্তান, ভারত, ভুটান, অফগানিস্তানের এদেশগুরোর করোনা ভাইরাস সংক্রমন সংক্রান্ত পরিসংখ্যান পর্যবেক্ষন তুলে ধরা হয়েছে এই রিপোর্টে।
চীনের উহানে শুরু হওয়া করোনা ভাইরাস বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়েছে ইউরোপ আমেরিকায়। আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হচ্ছে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেখানে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে ভাইরাস সংক্রমনের গতি কম। দক্ষিন এশিয়া পৃথিবীর ভ’খন্ডের মোট আয়তনের মাত্র ৩%। এই ৩% এলাকায় মোট জনসংখ্যা ২১% (টোটাল পৃথিবীর)। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল পিছিয়ে পড়া এলাকায় আক্রমনের হার ২.৮৫% এবং মৃত ১.১৫% এর নিচে। বিশেষ করে নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকায় করোনা ভাইরাস কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। সেখানকার চিকিৎসকদের মতে ভেষজ চিকিৎসা ও খ্যাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করেছে। অধিকাংশ শ্রীলংকা বাসী এখনো ভেষজ চিকিৎসায় বিশ্বাসী।এমনকি তারা সুস্থ অবস্থায় নিয়মিত গাছের শিকড় ও ফুলের নির্যাস পান করে। শ্রীলংকা সরকার সংকটজনক রোগীছাড়া বাকিদেও চিকিৎসায় অল্টারনেটিভ মেডিসিন প্রয়োগ করা শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে ভারত সরকার করোনা চিকিৎসায় অল্টারনেটিভ মেডিসিন ব্যাবহার করে সফলতা পেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। করোনা যুগে এই দুটি দেশ বিজ্ঞপ্তি প্রকাম করেছে জানিয়েছে যে, শুধু মাত্র করোনা প্রতিরোধ নয়, করোনা পজিটিভ রোগীর চিকিৎসায়ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি ব্যাবহার সহজলভ্য। পাশাপাশি করোনা যুগেচীন আমেরিকা কানাডা জার্মান ফ্রান্স এবং বৃটেন সরকার ভেষজ চিকিৎসার দিকে ঝুঁকে পড়ে করোনা নিরাময়ে ভেষজ উদ্ভিদ ব্যাবহাওে উৎসাহ যুগিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন অল্টারনেটিভ মেডিসিন বান্ধব । বর্তমান সরকার সামাজিক বনায়নের জন্য বনজ ফলজ গাছের পাশাপাশি ঔষধি গাছের চারারোপনের উপর জোর দিয়েছেন। ঔষধি গাছ মানেই অল্টারনেটিভ মেডিসিন।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের মোকাবেলায় আবারও অল্টারনেটিভ মেডিসিনের প্রয়োজনীয়তা প্রমানিত হয়েছে। লবঙ্গ, এলাচ, আদা, দারচিনি, তেজপাতা,কালোজিরা, মধু, বাসকপাতা, তুলসীপাতা, থানকুনি পাতা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সর্বাধিক ব্যবহার হয়েছে। অনলাইন কমিউনিকেশন সোসাইটি বর্তমানে ঔষধী গাছ রোপনে কাজ করছে। ইনশাঅল্লাহ অনলাইন কমিউনিকেশন সোসাইটি বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরেঘরে এই বার্তা পৌছাতে চায় যে, আসুন বেশী করে ঔষধী গাছ লাগান, নিজে সুস্থ থাকুন পরিবার ও দেশকে সুস্থ রাখুন। আসুন এই বৈশ্বিক মহামারীতে যারযার অবস্থান থেকে মানবতার সেবায় এগিয়ে আসি। বিশেষ করে তরুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানাই।