ঢাকা ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বটিয়াঘাটা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতি ও অনিয়মে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ Logo বামনায় রাতের অন্ধকারে লোহার পুল চুরি! কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা Logo কথিত পীরের ধর্ম ব্যবসার পাশাপাশি পোল্ট্রি ফার্ম : ধ্বংসের মুখে পরিবেশ Logo নকল সিগমা লিফটে গ্রাহকরা প্রতারিত, বাড়ছে দুর্ঘটনা! Logo বিএডিসি’র আড়ালে দুর্নীতির কারখানা: গুদামরক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকার জালিয়াতির অভিযোগ Logo অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) উদাসীন Logo রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও মার্কেট নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের অবহেলা Logo হানিফ ফ্লাইওভার টোলের ১২০০ কোটি টাকা ওরিয়ন গ্রুপের পেটে! Logo ‘ফুল ভলিয়মে ভাইরাল গানে মগ্ন অন্তর্বর্তী জোট’ Logo স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে স্বৈরাচারের দোসর সৈয়দ হাবিবুরের দুর্নীতির ফিরিস্তি- পর্ব ১

বিচার না পেয়ে চাষাবাদ ছেড়ে ভিক্ষার ঘোষনা গ্রাম্য চাষীর!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:১৬:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মে ২০২০ ১১১ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ ডেস্ক;
বিচার না পেয়ে জীবন চালাতে চাষ ছেড়ে ভিক্ষার ঘোষনা এক প্রান্তিক চাষীর। ফসলের সাথে শত্রুতা, ৩বিঘা জমির ৬লক্ষাধিক টাকার তরমুজ রাতের আঁধারে কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।

করোনা কালের এই দুর্বিসহ অবস্থায় বিচার না পেয়ে আরো অসহায় হয়ে পড়ল মিঠু খাঁ নামের এক প্রান্তিক চাষী। তার ৩বিঘা জমির তরমুজ ক্ষেত রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা সম্পূর্ণ কেটে দিলেও তার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ ! ৫থেকে ৬লাখ টাকা ক্ষতির মুখে ইউএনও, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, কৃষি অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও পাননি কোন প্রতিকার। ঘটনার ২ সপ্তাহ পার হতে চললেও পাশে কাউকে না পেয়ে ঝিনাইদহের খামারাইল গ্রামের এই কৃষক চাষ ছেড়ে ভিক্ষা করে খাওয়ার ঘোষনা দিয়েছে !

উন্নত জাতের সবুজ তরতাজা গাছগুলোর বোটায় বোটায় ঝুলে ছিল হাজার হাজার কালো তরমুজ। বোঁটা ছিড়ে মাটিতে পড়ার ভয়ে জাল জড়িয়ে রাখা হয়েছিল। কঠিন পরিশ্রম করার পর দরিদ্র কৃষক আমিরুল ইসলাম অপেক্ষায় ছিলেন এই তরমুজ বিক্রি করে কিছু পয়সা পাবেন। যা দিয়ে চাষের দেনা পরিশোধের পাশাপাশি করোনা কালের দুর্দিনে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।

কিন্তু মুহুর্তের মধ্যে তার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। গত ২৮ এপ্রিল ক্ষেতে গিয়ে হাউ-মাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন কৃষক আমিরুল। গাছগুলো টেনে টেনে দেখেন সবগুলো গাছের গোড়া থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। এভাবে ২টি ক্ষেতে তার ৩বিঘা জমির সব তরমুজ গাছ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খামারাইল গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে কৃষক আমিরুল ইসলাম মিঠু খাঁ, মাঠে তার চাষযোগ্য ৪বিঘা জমি। তবে যেসব ফসল হতো তা দিয়ে সন্তানাদি আর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছিল। তাই চাষে একটু পরিবর্তন এনে তরমুজ লাগিয়ে ভাল লাভের আশা করেছিলেন। ঋণ সহ ধার-দেনায় খরচ হয়েছিল প্রায় ২ লাখ টাকা। ১০/১৫ দিন পরই তার ক্ষেতের তরমুজ বিক্রি করা যেতো। বাজারে বর্তমানে এই তরমুজের কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা। সেই হিসাবে তার ক্ষেতের তরমুজ আনুমানিক ৫/৬ লাখ টাকার বিক্রি করতে পারতেন। এখন দেনার দায়ে ভিক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই বলে জানান হতাশচাষী আমিরুল ইসলাম মিঠু।

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এলাকার একটি বাড়ির রাস্তা নিয়ে স্থানীয়দের বিরোধে গ্রামের একটি দুর্বত্তচক্র এটি করতে পারে তবে বিষয়টি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার দেখবেন বলে আশ্বস্ত করায় পুলিশ হস্তক্ষেপ করেনি।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি খুবই দুঃখজনক, তার ধরন্ত তরমুজ ক্ষেত সবই কেটে দেয়া হয়েছে। প্রান্তিক এই চাষীকে সরকারী প্রনোদনায় সহায়তা করা হবে তবে সময় লাগবে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু মেখর বিশ্বাস ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বিচার না পেয়ে চাষাবাদ ছেড়ে ভিক্ষার ঘোষনা গ্রাম্য চাষীর!

আপডেট সময় : ০৪:১৬:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মে ২০২০

সকালের সংবাদ ডেস্ক;
বিচার না পেয়ে জীবন চালাতে চাষ ছেড়ে ভিক্ষার ঘোষনা এক প্রান্তিক চাষীর। ফসলের সাথে শত্রুতা, ৩বিঘা জমির ৬লক্ষাধিক টাকার তরমুজ রাতের আঁধারে কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।

করোনা কালের এই দুর্বিসহ অবস্থায় বিচার না পেয়ে আরো অসহায় হয়ে পড়ল মিঠু খাঁ নামের এক প্রান্তিক চাষী। তার ৩বিঘা জমির তরমুজ ক্ষেত রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা সম্পূর্ণ কেটে দিলেও তার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ ! ৫থেকে ৬লাখ টাকা ক্ষতির মুখে ইউএনও, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, কৃষি অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও পাননি কোন প্রতিকার। ঘটনার ২ সপ্তাহ পার হতে চললেও পাশে কাউকে না পেয়ে ঝিনাইদহের খামারাইল গ্রামের এই কৃষক চাষ ছেড়ে ভিক্ষা করে খাওয়ার ঘোষনা দিয়েছে !

উন্নত জাতের সবুজ তরতাজা গাছগুলোর বোটায় বোটায় ঝুলে ছিল হাজার হাজার কালো তরমুজ। বোঁটা ছিড়ে মাটিতে পড়ার ভয়ে জাল জড়িয়ে রাখা হয়েছিল। কঠিন পরিশ্রম করার পর দরিদ্র কৃষক আমিরুল ইসলাম অপেক্ষায় ছিলেন এই তরমুজ বিক্রি করে কিছু পয়সা পাবেন। যা দিয়ে চাষের দেনা পরিশোধের পাশাপাশি করোনা কালের দুর্দিনে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।

কিন্তু মুহুর্তের মধ্যে তার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। গত ২৮ এপ্রিল ক্ষেতে গিয়ে হাউ-মাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন কৃষক আমিরুল। গাছগুলো টেনে টেনে দেখেন সবগুলো গাছের গোড়া থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। এভাবে ২টি ক্ষেতে তার ৩বিঘা জমির সব তরমুজ গাছ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খামারাইল গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে কৃষক আমিরুল ইসলাম মিঠু খাঁ, মাঠে তার চাষযোগ্য ৪বিঘা জমি। তবে যেসব ফসল হতো তা দিয়ে সন্তানাদি আর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছিল। তাই চাষে একটু পরিবর্তন এনে তরমুজ লাগিয়ে ভাল লাভের আশা করেছিলেন। ঋণ সহ ধার-দেনায় খরচ হয়েছিল প্রায় ২ লাখ টাকা। ১০/১৫ দিন পরই তার ক্ষেতের তরমুজ বিক্রি করা যেতো। বাজারে বর্তমানে এই তরমুজের কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা। সেই হিসাবে তার ক্ষেতের তরমুজ আনুমানিক ৫/৬ লাখ টাকার বিক্রি করতে পারতেন। এখন দেনার দায়ে ভিক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই বলে জানান হতাশচাষী আমিরুল ইসলাম মিঠু।

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এলাকার একটি বাড়ির রাস্তা নিয়ে স্থানীয়দের বিরোধে গ্রামের একটি দুর্বত্তচক্র এটি করতে পারে তবে বিষয়টি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার দেখবেন বলে আশ্বস্ত করায় পুলিশ হস্তক্ষেপ করেনি।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি খুবই দুঃখজনক, তার ধরন্ত তরমুজ ক্ষেত সবই কেটে দেয়া হয়েছে। প্রান্তিক এই চাষীকে সরকারী প্রনোদনায় সহায়তা করা হবে তবে সময় লাগবে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু মেখর বিশ্বাস ।