কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি;
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ছাগল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের গাবের তল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। উলিপুর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের গাবেরতল এলাকার মহুবর রহমানের ছেলে মিনহাজুল ইসলাম মুসার একটি ছাগল ১০-১২ দিন আগে চুরি হলে তিনি থানায় অভিযোগ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সালিশ বৈঠক হলেও কোনও সমাধান হয়নি। সোমবার দুপুরে একই গ্রামের খরিয়া মাহমুদের ছেলে রিকশাচালক সুরুজ্জামানকে (৪২) তার বাড়ির সামনে থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় মুসা। মুসা তার বাড়িতে আটকে রেখে সুরুজ্জামানকে ছাগল চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে নির্যাতন শুরু করলে সুরুজ্জামান তাকে জানান যে দুইজন যুবক ১০-১২ দিন আগে একটি ছাগল নিয়ে তার রিকশায় করে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রেলগেট এলঅকাংয় নিয়ে গিয়ে ভাড়া দিয়ে তাকে বিদায় করে দেয়। ছাগলটি চুরি করা ছিল কি না তা সে জানে না। কিন্তু এরপরও মিনহাজুল ইসলাম মুসা ছাগল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সুরুজ্জামানকে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলেই সুরুজ্জামান জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে গুনাইগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘মিনহাজুল ইসলাম মুসা ছাগল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে রিকশাচালক সুরুজ্জামানকে উপর্যপুরি মারধর করলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায় বলে শুনেছি। পরে আমি ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী আমাকে এ তথ্য জানায়। বিষয়টি এখন পুলিশ তদন্ত করছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মৌমিতা সাহা জানান, সুরুজ্জামানকে মৃত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
উলিপুর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হবে।
ওসি আরও জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ সৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। সোমবার বিকাল পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।