করোনা আতঙ্কের শততম দিন পার করলো বিশ্ব
- আপডেট সময় : ১০:৩৮:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ এপ্রিল ২০২০ ১৮২ বার পড়া হয়েছে
করোনা আতঙ্কের ১শ দিন পার করলো বিশ্ব। যে গতিতে বিশ্বের নানা প্রান্তে বিস্তার ঘটেছে ভাইরাসটির, ঠিক তার উল্টোভাবে ঘরবন্দি হয়েছে মানুষ। সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্রের তারকা কিংবা বাঘা খেলোয়ার, আক্রান্তের তালিকা থেকে বাদ যাননি কেউই।
অশান্ত দশক শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। এটি ছিল নববর্ষের আগের দিন এবং বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ উদযাপনের জন্য প্রস্তুত ছিল। তখনই এল বড় ধাক্কা। ৩১ ডিসেম্বর বেলা ১টা ৩৮মিনিটে চীন সরকারের ওয়েবসাইটে উহানে অজ্ঞাত নিউমোনিয়ার কারণে মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলো।
এরপরের ১০০ দিনে বিশ্ব বদলেছে অবিশ্বাস্যের মত। মানুষের মুখের হাসি মুছে ভর করেছে তীব্র আতঙ্ক, মৃত্যুভয়। একটি ভাইরাস, যা পাল্টে দিয়েছে পৃথিবীকে।
১১ জানুয়ারি চীনে প্রথম মৃত্যু। ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম মৃত্যুর তথ্য মেলে ফিলিপাইনে। আর একশো দিনে সারাবিশ্বের মৃতের সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার, আক্রান্ত সাড়ে ১৫ লাখের কাছাকাছি।
২০ জানুয়ারি, ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে নিশ্চিত করা হয়। চারদিন পরেই, ইউরোপে প্রথম সনাক্ত হয়। ৩১ জানুয়ারি যখন ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে আসে ব্রিটেন, তখন প্রথমবার স্পেন আর ইতালিতে ভাইরাসের সংক্রমন ঘটে। আড়াই মাসের কম সময়ে দেশদুটিতে মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজারের বেশি। শুধু ইতালিতেই প্রায় ১৮ হাজার প্রান ঝরেছে।
ইতালি, স্পেন, ফ্রান্সের মতো ভাইরাসটির নতুন কেন্দ্র যুক্তরাস্ট্র। ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম মৃত্যুর পর, গেলো ৪০ দিনে মারাগেছে প্রায় ১৫ হাজার, কেবল নিউইয়কেই সংখ্যাটা সাড়ে ৬ হাজারের মতো। বাংলাদেশসহ ভারত-পাকিস্তানের মতো ঘনবসতিপূর্ন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো পরবর্তী হাব, শঙ্কা গবেষকদের। এই তিন দেশে ইতিমধ্যে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ১০ হাজার, মৃত্যু প্রায় ৩শ।
আন্তর্জাতিক যোগাযোগ অচল হয়েছে; গৃহবন্দী পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ মানুষ। স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্বজুড়ে স্থায়ীভাবে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৯ কোটি ৫০ লাখ মানুষ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা -আইএলওর তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কভিড-১৯-এর প্রভাবে কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে ৬ দশমিক ৭ ভাগ।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ লাখ কোটি ডলারের প্রণোদনা অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ৪শ বিলিয়ন ইউরোর প্রণোদনা ঘোষণা করেছে ইতালি। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির প্রণোদনা দিচ্ছে ভারত সরকার। আর মহামারী সামাল দিতে জাপান ঘোষণা করেছে প্রায় ১ লাখ কোটি ডলারের প্রণোদনা।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তিরাও অসহায় এই ভাইরাসের কাছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী, ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধীকারী, ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্টও সংক্রমণ এড়াতে পারেননি।