ঢাকা ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




করোনা আতঙ্কে ঘরবন্দি মানুষ, ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মার্চ ২০২০ ১৮০ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ:

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে সবাই বাড়িতেই অবস্থান করছে। বাসায় নেই কোনো কাজ। হাতের নাগালে থাকা মোবাইলের কাজ বেড়েছে। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সিনেমা দেখা, ভিডিও দেখা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে অনেকেই। ফলে বেড়ে গেছে ইন্টারনেটের ব্যবহার।

এমনটাই তথ্য দিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ৭ লাখ ৩৮ হাজার। মোট ব্যবহারকারী দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৯৯ লাখ ৮৪ হাজার। এর মধ্যে ৯ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। বাকিরা ব্রডব্যান্ড ও অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করেন।

ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, এখন অফিস-আদালতে ইন্টারনেটের ব্যবহার সীমিত। তবে বাসায় চাপ বেড়েছে।

সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। আবার মানুষ ঘরে থাকতেও বাধ্য হচ্ছে। ফলে অন্যসময় ছুটিতে ইন্টারনেটের ব্যবহার কম হলেও এই পরিস্থিতিতে ঘরে বসে মানুষ ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছে।

এছাড়া ইন্টারনেটের পাশাপাশি মোবাইল ফোনে ভয়েস কলের সংখ্যাও বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ঘরে থাকতে হচ্ছে বলে মানুষ ইন্টারনেটকেই যোগাযোগ ও সামাজিকতার মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। তাই ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার বেড়েছে ফেসবুকের। দ্বিতীয় স্থানে আছে ইউটিউব।

এ বিষয়ে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক জানান, মার্চ মাসের শুরুতেও দেশে প্রতিদিন ব্যান্ডউইথের চাহিদা ছিল প্রায় এক হাজার ৪০০ জিবিপিএস। কিন্তু ২৪ মার্চ থেকে তা বাড়ছে। বর্তমানে এক হাজার ৭০০ জিবিপিএসের বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে।

ব্যান্ডউইথের চাহিদা বাড়ায় জোগানের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে ইমদাদুল হক জানান, জোগান নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি এবং ছয়টি ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল কেবল কোম্পানি (আইটিসি) স্বচ্ছন্দে বর্ধিত চাহিদার জোগান দিচ্ছে। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে কোম্পানিগুলোও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।
গত কয়েকদিনে ব্যান্ডউইথের খরচ বেশি বেড়েছে ফেসবুকের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। গত কয়েক দিনে বাড়তি ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের প্রায় ৬০ শতাংশই বেড়েছে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তার থাকার কারণে। ইউটিউবের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।

এছাড়া হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার ও ইমো ব্যবহারের ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ বেশি ব্যবহার হচ্ছে। ওয়েব টিভি নেটফ্লিক্স এবং হইচইয়ের ব্যবহার বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারও আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে দেশি বেশ কিছু ওয়েব টিভির চাহিদা অনেকটা আগের স্থানেই থমকে আছে।

গত কয়েকদিনে মোবাইল ইন্টারনেটে ডাটার ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। আগের চেয়ে ইন্টারনেট প্যাকেজও বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে তিন থেকে সাত দিন মেয়াদি কম টাকার প্যাকেজগুলোই বেশি কিনছেন গ্রাহকরা। সরাসরি ভয়েস কলের পরিমাণও প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। দেশে গড়ে দৈনিক ভয়েস কল হয় প্রায় ১৬০ কোটি মিনিট। গত কয়েক দিনে গড়ে মোট ভয়েস কল ১৮০ কোটি মিনিটে পৌঁছেছে।

এছাড়া, করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে ছাপা পত্রিকার চাইতে বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের প্রতিও মানুষের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। সে জন্যও ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




করোনা আতঙ্কে ঘরবন্দি মানুষ, ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে

আপডেট সময় : ০৩:১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মার্চ ২০২০

সকালের সংবাদ:

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে সবাই বাড়িতেই অবস্থান করছে। বাসায় নেই কোনো কাজ। হাতের নাগালে থাকা মোবাইলের কাজ বেড়েছে। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সিনেমা দেখা, ভিডিও দেখা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে অনেকেই। ফলে বেড়ে গেছে ইন্টারনেটের ব্যবহার।

এমনটাই তথ্য দিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ৭ লাখ ৩৮ হাজার। মোট ব্যবহারকারী দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৯৯ লাখ ৮৪ হাজার। এর মধ্যে ৯ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। বাকিরা ব্রডব্যান্ড ও অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করেন।

ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, এখন অফিস-আদালতে ইন্টারনেটের ব্যবহার সীমিত। তবে বাসায় চাপ বেড়েছে।

সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। আবার মানুষ ঘরে থাকতেও বাধ্য হচ্ছে। ফলে অন্যসময় ছুটিতে ইন্টারনেটের ব্যবহার কম হলেও এই পরিস্থিতিতে ঘরে বসে মানুষ ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছে।

এছাড়া ইন্টারনেটের পাশাপাশি মোবাইল ফোনে ভয়েস কলের সংখ্যাও বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ঘরে থাকতে হচ্ছে বলে মানুষ ইন্টারনেটকেই যোগাযোগ ও সামাজিকতার মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। তাই ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার বেড়েছে ফেসবুকের। দ্বিতীয় স্থানে আছে ইউটিউব।

এ বিষয়ে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক জানান, মার্চ মাসের শুরুতেও দেশে প্রতিদিন ব্যান্ডউইথের চাহিদা ছিল প্রায় এক হাজার ৪০০ জিবিপিএস। কিন্তু ২৪ মার্চ থেকে তা বাড়ছে। বর্তমানে এক হাজার ৭০০ জিবিপিএসের বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে।

ব্যান্ডউইথের চাহিদা বাড়ায় জোগানের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে ইমদাদুল হক জানান, জোগান নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি এবং ছয়টি ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল কেবল কোম্পানি (আইটিসি) স্বচ্ছন্দে বর্ধিত চাহিদার জোগান দিচ্ছে। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে কোম্পানিগুলোও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।
গত কয়েকদিনে ব্যান্ডউইথের খরচ বেশি বেড়েছে ফেসবুকের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। গত কয়েক দিনে বাড়তি ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের প্রায় ৬০ শতাংশই বেড়েছে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তার থাকার কারণে। ইউটিউবের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।

এছাড়া হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার ও ইমো ব্যবহারের ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ বেশি ব্যবহার হচ্ছে। ওয়েব টিভি নেটফ্লিক্স এবং হইচইয়ের ব্যবহার বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারও আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে দেশি বেশ কিছু ওয়েব টিভির চাহিদা অনেকটা আগের স্থানেই থমকে আছে।

গত কয়েকদিনে মোবাইল ইন্টারনেটে ডাটার ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। আগের চেয়ে ইন্টারনেট প্যাকেজও বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে তিন থেকে সাত দিন মেয়াদি কম টাকার প্যাকেজগুলোই বেশি কিনছেন গ্রাহকরা। সরাসরি ভয়েস কলের পরিমাণও প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। দেশে গড়ে দৈনিক ভয়েস কল হয় প্রায় ১৬০ কোটি মিনিট। গত কয়েক দিনে গড়ে মোট ভয়েস কল ১৮০ কোটি মিনিটে পৌঁছেছে।

এছাড়া, করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে ছাপা পত্রিকার চাইতে বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের প্রতিও মানুষের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। সে জন্যও ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে বলে মনে করেন অনেকে।