ঢাকা ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo চাকুরীচ্যুত হওয়ার পরেও বহাল পায়রা বন্দর প্রকৌশলী নাছির: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিক্ষোভ, স্বদেশে ফেরার আকুতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ১৩৩ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজার: মিয়ানমারের আরকানে (রাখাইন) রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেদেশের সেনাদের হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের এক বছর পূর্ণ হওয়ায় ২৫ আগস্টকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করছে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা।

এ উপলক্ষে শনিবার সকাল ৯টায় টেকনাফের নায়াপাড়া শালবন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা গণহত্যার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইনখালী হাকিম পাড়া, জামতলীসহ বিভিন্ন ক্যাম্পেও একই দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

এসব কর্মসূচিতে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিক্ষোভ মিছিলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নরনারী অংশ গ্রহণ করেছেন। মিছিলে রোহিঙ্গাদের হাতে প্লেকার্ডে ১০০ নারীকে ধর্ষণ, ৩০০ গ্রাম নিশ্চিহ্ন, ৩৪ হাজার শিশুকে এতিম, ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আরকান রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত ও ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যার বিবরণ তুলে ধরতে দেখা যায়।

মিছিলের পূর্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শালবন মরকজে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে রোহিঙ্গা নেতা জকরিয়া বক্তব্য রাখেন।

এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতার নেত্রী সম্বোধন করে ধন্যবাদ জানান এবং এদেশের সেনা, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও উখিয়া টেকনাফের মানুষের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।

বক্তব্যে তিনি মিয়ানমার সরকারের বিচার, স্বদেশে ফিরার পরিবেশ তৈরিসহ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন।

এসময় নাগরিকত্ব ও দাবি দাওয়া আদায়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে চায় বলেও তিনি জানান।

এছাড়া ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বিশাল সমাবেশের আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, অনুমতি সাপেক্ষে রোহিঙ্গারা প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক পালন করছে। তবুও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

এদিকে ২৫ আগস্টকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করছে উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইনখালী হাকিম পাড়া, জামতলীসহ বিভিন্ন বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা। তারাও একই কর্মসূচি পালন করছেন।

শনিবার সকাল থেকে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প এলাকায় মিছিল, সমাবেশ শুরু করে। সকালে কুতুপালং এলাকায় সড়ক বন্ধ করে মিছিল করেন রোহিঙ্গারা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাম্পের ভেতরে সমাবেশ চলছিল।

উল্লেখ্য, আরসা নামক একটি সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের সেনা ছাউনিতে হামলার ঘটনার অজুহাতে গত বছর ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে মিয়ানমার বাহিনী। দেশটির সেনা, বিজিপি ও উগ্রবাদী রাখাইন যুবকরা গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়ে রোহিঙ্গা নর-নারী, শিশুর ওপর বর্বরোচিত নৃশংসতা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে বানের পানির মতো বাংলাদেশের দিকে ছুটতে থাকে রোহিঙ্গারা।

বর্তমানে নতুন-পুরনো মিলে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৭ জন রোহিঙ্গা ৩০টি অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এসব শিবিরে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও এভাবে অনিশ্চিত ভাসমান অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকতে চান না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিক্ষোভ, স্বদেশে ফেরার আকুতি

আপডেট সময় : ০৩:০১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

কক্সবাজার: মিয়ানমারের আরকানে (রাখাইন) রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেদেশের সেনাদের হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের এক বছর পূর্ণ হওয়ায় ২৫ আগস্টকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করছে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা।

এ উপলক্ষে শনিবার সকাল ৯টায় টেকনাফের নায়াপাড়া শালবন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা গণহত্যার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইনখালী হাকিম পাড়া, জামতলীসহ বিভিন্ন ক্যাম্পেও একই দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

এসব কর্মসূচিতে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিক্ষোভ মিছিলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নরনারী অংশ গ্রহণ করেছেন। মিছিলে রোহিঙ্গাদের হাতে প্লেকার্ডে ১০০ নারীকে ধর্ষণ, ৩০০ গ্রাম নিশ্চিহ্ন, ৩৪ হাজার শিশুকে এতিম, ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আরকান রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত ও ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যার বিবরণ তুলে ধরতে দেখা যায়।

মিছিলের পূর্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শালবন মরকজে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে রোহিঙ্গা নেতা জকরিয়া বক্তব্য রাখেন।

এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতার নেত্রী সম্বোধন করে ধন্যবাদ জানান এবং এদেশের সেনা, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও উখিয়া টেকনাফের মানুষের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।

বক্তব্যে তিনি মিয়ানমার সরকারের বিচার, স্বদেশে ফিরার পরিবেশ তৈরিসহ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন।

এসময় নাগরিকত্ব ও দাবি দাওয়া আদায়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে চায় বলেও তিনি জানান।

এছাড়া ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বিশাল সমাবেশের আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, অনুমতি সাপেক্ষে রোহিঙ্গারা প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক পালন করছে। তবুও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

এদিকে ২৫ আগস্টকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করছে উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইনখালী হাকিম পাড়া, জামতলীসহ বিভিন্ন বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা। তারাও একই কর্মসূচি পালন করছেন।

শনিবার সকাল থেকে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প এলাকায় মিছিল, সমাবেশ শুরু করে। সকালে কুতুপালং এলাকায় সড়ক বন্ধ করে মিছিল করেন রোহিঙ্গারা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাম্পের ভেতরে সমাবেশ চলছিল।

উল্লেখ্য, আরসা নামক একটি সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের সেনা ছাউনিতে হামলার ঘটনার অজুহাতে গত বছর ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে মিয়ানমার বাহিনী। দেশটির সেনা, বিজিপি ও উগ্রবাদী রাখাইন যুবকরা গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়ে রোহিঙ্গা নর-নারী, শিশুর ওপর বর্বরোচিত নৃশংসতা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে বানের পানির মতো বাংলাদেশের দিকে ছুটতে থাকে রোহিঙ্গারা।

বর্তমানে নতুন-পুরনো মিলে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৭ জন রোহিঙ্গা ৩০টি অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এসব শিবিরে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও এভাবে অনিশ্চিত ভাসমান অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকতে চান না।