পিরোজপুর প্রতিনিধি,
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর করা দুর্নীতির মামলায় পিরোজপুরের সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীন মঙ্গলবার (০৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এক আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
এর আগে সকালে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান এর আদালতে আউয়াল দম্পতির করা জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওই আদেশের পরপরই আদালত কক্ষে হট্টগোল হয় এবং শহরে আউয়াল সমর্থকরা বিক্ষোভ করে।
জামিন আবেদন না মঞ্জুর করার পর অজ্ঞাত কারণে জেলা জজ মো. আব্দুল মান্নানকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে বলে আদালতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এর পর ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পান পিরোজপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত নাহিদ নাসরিন। তার আদালতে আউয়াল দম্পতি পূর্বে করা জামিন আবেদন পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে শুনানিঅন্তে আদালত তাদেরকে দুইমাসের জামিন দেন।
তাদের জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকে আইনজীবী মো. মুনসুর উদ্দিন হাওলাদার।
এদিকে সকালে আউয়াল দম্পতিকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশের খবর পেয়ে তাদের সমর্থকরা আদালত অঙ্গনসহ শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে আতঙ্কে শহরের সকল দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আদালত অঙ্গনের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে যান চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে।
দুদকের আইনজীবী মুনসুর উদ্দিন হাওলাদার জানান, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর-নাজিরপুর-স্বরুপকাঠি উপজেলা) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএমএ আউয়াল এবং তার স্ত্রী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি লায়লা পারভিনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর পৃথকভাবে ৩টি মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভিনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুইটিতে এককভাবে আসামি করা হয়েছে সাবেক এমপি আউয়ালকে। ৩টি মামলারই বাদী হয়েছেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আলী আকবর।
ওই তিন মামলায় আউয়াল দম্পতি গত ৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আজ সকালে আউয়াল ও লায়লা পারভীন পিরোজপুর জেলা জজ আদালতে জামিন চাইলে আদালত আবেদন নাকচ করে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই আদেশের পর জেলা জজ মো. আব্দুল মান্নানের স্ট্যান্ড রিলিজ আদেশ হলে ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ নাহিদ নাসরিন তাদের জামিনে আবেদন পুনর্বিবেচনা করে জামিনের ওই আদেশ দেন।
আউয়াল ও তার স্ত্রীর পক্ষে জামিনের আবেদন জানান অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন।