ঢাকা ০৬:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য Logo স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লাটিম ঘুরাচ্ছেন ৬ ‘কুতুব’ Logo ওয়াসা প্রকৌশলী ফকরুলের আমলনামা: অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য Logo আশা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত Logo চাঁদার টাকা না পেয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা Logo সাংবাদিকদের হত্যা চেষ্টার ঘটনায় চ্যানেল এস এর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা Logo জামিনে মুক্ত রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদ Logo স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির রাঘব বোয়াল বায়ো ট্রেড ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রাব্বি লাপাত্তা Logo বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ




পালিয়ে বেড়াচ্ছে পঞ্চগড়ে ভোজনপুরের মানুষ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২০ ৭৩ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়ঃ পঞ্চগড়ের ভোজনপুরে পাথর শ্রমিক ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা চার শতাধিক লোককে আসামি করে দুটি মামলা করেছে পুলিশ।

রোববার রাতে তেঁতুলিয়া থানা পুলিশের এসআই লুৎফর রহমান হত্যা মামলা ও এসআই শাহাদাত হোসেন সরকারি কাজে বাধা দান, পুলিশ ও র্যাবের ওপর হামলা এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের পৃথক মামলা করেন।

গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় ৭০ জনের বেশি নামীয় আসামি থাকলেও তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি পুলিশ। মামলার পর থেকে গ্রেফতার আতঙ্কে স্থানীয় পাথর শ্রমিকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

রোববার সকাল তেঁতুলিয়ার ভোজনপুর এলাকার পাথর শ্রমিকরা ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলনের দাবিতে তেঁতুলিয়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করলে পাথর শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে পাথর নিক্ষেপসহ লাঠি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলাসহ পুলিশের তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ৮ পুলিশ, তিন র্যাব সদস্যসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে জুমার উদ্দিন নামে এক শ্রমিক মারা যান। নিহত জুমার উদ্দিনের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার ভোজনপুর ইউনিয়নের গনাগছ এলাকায়।

এদিকে সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ঘটনাস্থলে যান। তারা নিহতের বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান, তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে পৃথকভাবে আর্থিক সহায়তা করা হয়। নিহত শ্রমিক জুমার উদ্দিনের লাশ রোববার রাতেই তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সকালে স্থানীয়ভাবে লাশ দাফন করা হয়।

সোমবার সকালে ভোজনপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, তেঁতুলিয়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কসহ স্থানীয় রাস্তায় মানুষ চলাচল কমে গেছে। তবে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও থমথমে অবস্থা দেখা গেছে। বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনকারী চক্রটি শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে সাধারণ পাথর শ্রমিকদের মাঠে নামিয়েছেন বলে দাবি করছে পুলিশ পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এদিকে মামলার পর থেকেই ওই এলাকার অধিকাংশ মানুষ পলাতক।

তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, ভোজনপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। নাম উল্লেখ করে মামলা করা হলের আসামিদের নাম তদন্তের স্বার্থে এখনি প্রকাশ করছি না। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাতেই মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে দেয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত এবং উস্কানিদাতা তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে নিরপরাধ ব্যক্তিদের যেন কোনো হয়রানি না করা হয় সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পরিবেশ বিব্বংশী অবৈধ ড্রিল ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। এ মেশিনে পাথর উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ বিশাল শুন্যতার সৃষ্টি হয়। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ নিয়ে আন্দোলন এবং শ্রমিক নিহতের ঘটনা দুঃখজনক। সকালে আমরা নিহত শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাতেই তার বাড়িতে গেছিলাম।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




পালিয়ে বেড়াচ্ছে পঞ্চগড়ে ভোজনপুরের মানুষ

আপডেট সময় : ১১:৪৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২০

জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়ঃ পঞ্চগড়ের ভোজনপুরে পাথর শ্রমিক ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা চার শতাধিক লোককে আসামি করে দুটি মামলা করেছে পুলিশ।

রোববার রাতে তেঁতুলিয়া থানা পুলিশের এসআই লুৎফর রহমান হত্যা মামলা ও এসআই শাহাদাত হোসেন সরকারি কাজে বাধা দান, পুলিশ ও র্যাবের ওপর হামলা এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের পৃথক মামলা করেন।

গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় ৭০ জনের বেশি নামীয় আসামি থাকলেও তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি পুলিশ। মামলার পর থেকে গ্রেফতার আতঙ্কে স্থানীয় পাথর শ্রমিকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

রোববার সকাল তেঁতুলিয়ার ভোজনপুর এলাকার পাথর শ্রমিকরা ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলনের দাবিতে তেঁতুলিয়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করলে পাথর শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে পাথর নিক্ষেপসহ লাঠি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলাসহ পুলিশের তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ৮ পুলিশ, তিন র্যাব সদস্যসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে জুমার উদ্দিন নামে এক শ্রমিক মারা যান। নিহত জুমার উদ্দিনের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার ভোজনপুর ইউনিয়নের গনাগছ এলাকায়।

এদিকে সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ঘটনাস্থলে যান। তারা নিহতের বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান, তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে পৃথকভাবে আর্থিক সহায়তা করা হয়। নিহত শ্রমিক জুমার উদ্দিনের লাশ রোববার রাতেই তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সকালে স্থানীয়ভাবে লাশ দাফন করা হয়।

সোমবার সকালে ভোজনপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, তেঁতুলিয়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কসহ স্থানীয় রাস্তায় মানুষ চলাচল কমে গেছে। তবে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও থমথমে অবস্থা দেখা গেছে। বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনকারী চক্রটি শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে সাধারণ পাথর শ্রমিকদের মাঠে নামিয়েছেন বলে দাবি করছে পুলিশ পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এদিকে মামলার পর থেকেই ওই এলাকার অধিকাংশ মানুষ পলাতক।

তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, ভোজনপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। নাম উল্লেখ করে মামলা করা হলের আসামিদের নাম তদন্তের স্বার্থে এখনি প্রকাশ করছি না। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাতেই মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে দেয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত এবং উস্কানিদাতা তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে নিরপরাধ ব্যক্তিদের যেন কোনো হয়রানি না করা হয় সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পরিবেশ বিব্বংশী অবৈধ ড্রিল ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। এ মেশিনে পাথর উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ বিশাল শুন্যতার সৃষ্টি হয়। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ নিয়ে আন্দোলন এবং শ্রমিক নিহতের ঘটনা দুঃখজনক। সকালে আমরা নিহত শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাতেই তার বাড়িতে গেছিলাম।