ঢাকা ০৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




চিকিৎসকের অবহেলায় মেয়ের মৃত্যু, রাত জেগে লাশের পাহারায় বাবা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২০ ১৪৭ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা;  চিকিৎসকের অবহেলায় নেত্রকোনার আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) রাতে সিজারিয়ান অপারেশনে ছেলে সন্তান জন্ম দেয়ার পর ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় বিষয়টি জানিয়ে রাতেই নেত্রকোনা মডেল থানায় অভিযোগ দেন মৃতের স্বজনরা। অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের বারান্দায় প্রসূতির মরদেহ রাখা হয়েছে। সারারাত মরদেহের পাশে ছিলেন স্বজনরা। মৃতের বাবা ও স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিজারিয়ান অপারেশনে ছেলে সন্তান জন্ম দেয়ার পর মারা যাওয়া প্রসূতি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কৃষক আশিক মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আক্তার (২৩)।

রোজিনার স্বামী আশিক ও বাবা চান্দু মিয়া জানান, আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজারের সঙ্গে রোববার রাতে ১২ হাজার টাকায় রোজিনার সিজারিয়ান অপারেশনের চুক্তি হয়। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালে এসে তাড়াহুড়ো করে রোজিনার সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

নেত্রকোনার আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার

অপারেশনের আগে চিকিৎসক কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং নার্স কেউ বলেননি রোগীর রক্ত লাগবে। অপারেশনে ছেলে সন্তান জন্ম হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে রক্ত লাগবে জানিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করেন চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ। ততক্ষণে প্রসূতির মৃত্যু হয়।

এ অবস্থায় রোগীকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানে নেয়ার পর রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন মেডিকেল কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু রায়।

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু রায় বলেন, রোজিনাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরে হাসপাতালের বারান্দায় তার মরদেহ রাখা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার রাত ৯টার দিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের বারান্দায় ওই প্রসূতির মরদেহ রাখা হয়। হাসপাতালের বারান্দায় মেয়ের মরদেহের পাশে বসে সারারাত কাটিয়ে দেন বাবা চান্দু মিয়া।

বাবা চান্দু মিয়া বলেন, চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোজিনার মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিচার চাই আমি। তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। তারা মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে। মৃত্যুর পর মরদেহ অন্য হাসপাতালে পাঠায়। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই। তাদের শাস্তি না হলে রোজিনার মতো আরও অনেক রোগীর মৃত্যু হবে।

এ বিষয়ে জানতে আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার এবং কর্তৃপক্ষের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি কেউ। ঘটনার পর থেকে চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণের মোবাইল নম্বর বন্ধ রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




চিকিৎসকের অবহেলায় মেয়ের মৃত্যু, রাত জেগে লাশের পাহারায় বাবা

আপডেট সময় : ১০:১৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২০

জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা;  চিকিৎসকের অবহেলায় নেত্রকোনার আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) রাতে সিজারিয়ান অপারেশনে ছেলে সন্তান জন্ম দেয়ার পর ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় বিষয়টি জানিয়ে রাতেই নেত্রকোনা মডেল থানায় অভিযোগ দেন মৃতের স্বজনরা। অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের বারান্দায় প্রসূতির মরদেহ রাখা হয়েছে। সারারাত মরদেহের পাশে ছিলেন স্বজনরা। মৃতের বাবা ও স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিজারিয়ান অপারেশনে ছেলে সন্তান জন্ম দেয়ার পর মারা যাওয়া প্রসূতি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কৃষক আশিক মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আক্তার (২৩)।

রোজিনার স্বামী আশিক ও বাবা চান্দু মিয়া জানান, আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজারের সঙ্গে রোববার রাতে ১২ হাজার টাকায় রোজিনার সিজারিয়ান অপারেশনের চুক্তি হয়। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালে এসে তাড়াহুড়ো করে রোজিনার সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

নেত্রকোনার আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার

অপারেশনের আগে চিকিৎসক কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং নার্স কেউ বলেননি রোগীর রক্ত লাগবে। অপারেশনে ছেলে সন্তান জন্ম হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে রক্ত লাগবে জানিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করেন চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ। ততক্ষণে প্রসূতির মৃত্যু হয়।

এ অবস্থায় রোগীকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানে নেয়ার পর রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন মেডিকেল কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু রায়।

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু রায় বলেন, রোজিনাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরে হাসপাতালের বারান্দায় তার মরদেহ রাখা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার রাত ৯টার দিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের বারান্দায় ওই প্রসূতির মরদেহ রাখা হয়। হাসপাতালের বারান্দায় মেয়ের মরদেহের পাশে বসে সারারাত কাটিয়ে দেন বাবা চান্দু মিয়া।

বাবা চান্দু মিয়া বলেন, চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোজিনার মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিচার চাই আমি। তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। তারা মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে। মৃত্যুর পর মরদেহ অন্য হাসপাতালে পাঠায়। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই। তাদের শাস্তি না হলে রোজিনার মতো আরও অনেক রোগীর মৃত্যু হবে।

এ বিষয়ে জানতে আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার এবং কর্তৃপক্ষের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি কেউ। ঘটনার পর থেকে চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণের মোবাইল নম্বর বন্ধ রয়েছে।