আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা
- আপডেট সময় : ০৯:৩৪:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২০ ১৪৭ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন রিপোর্ট |
বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ তীরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার ৫৫তম পর্ব। পাকিস্তানের মাওলানা খুরশিদ আলম প্রথমে বয়ান করেন। তবে বৃহস্পতিবার ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় বাদ মাগরিব বয়ান শুরু হয়। ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা বয়ান করেন। আর এর বাংলা তরজমা করেন হাফেজ মাওলানা জুবায়ের।
ইজতেমায় অংশ নিতে গত বুধবার থেকেই ময়দানে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর না গড়াতেই ভরে যায় ময়দান।
আজ শুক্রবার দেশের সবচেয়ে বড় জুমআ’র নামাজ হবে এখানে। তাতে ইমামতি করবেন কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ জুবায়ের আহমেদ।
বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৫১ দেশের প্রায় ২ হাজার বিদেশি মেহমান ইজতেমায় যোগ দিতে এসেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বাদ ফজর তালিমি বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা রবিউল হক, বাদ আসর পাকিস্তানের মাওলানা ফাহিম, বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। তারা ঈমান ও আমলের গুরুত্ব এবং তাবলিগের কাজের উসুল বর্ণনা করেন।
তাবলিগ জামাতের বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই পর্বে। গত ২৮ অক্টোবর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি। আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি।
গত এক মাস যাবৎ স্বেচ্ছাসেবীরা ইজতেমার মাঠ তৈরি করেছেন। গতকাল বুধবার থেকেই দলে দলে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা। আর আজ ভোর থেকে শুরু হয় মানুষের ঢল।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একপশলা হালকা বৃষ্টি হয় টঙ্গীতে। এতে মুসল্লিরা কিছুটা সমস্যায় পড়েন। সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে এবার যে সব মুসল্লি ময়দানে তাদের খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন তাদের প্রায় সবাই বৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে পলিথিন-কাগজ সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ময়দানে চটের নিচে অবস্থান নেয়া মুসল্লিরা দুর্ভোগে পড়বেন। বিশেষ করে খোলা আকাশের নিচে রান্না-বান্না এবং খিত্তায় অবস্থান করাও কঠিন হয়ে যাবে।
এদিকে এবার পুরো ইজতেমা ময়দান এলইডি লাইট দিয়ে সজ্জিত করেছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম শেষ মুহূর্তে মুসল্লিদের যাতে করে কোন ধরনের ভোগান্তিতে না পরতে হয় তার জন্য যাতায়তের পথগুলো মেরামত, ময়দান পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করা সহ নানা পদক্ষে নিয়েছেন। মুসল্লিদের সুবিধার সার্বিক দিক ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত থেকে দেখভাল করছেন।
অপরদিকে ইজতেমা ময়দানের পাশে বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্পগুলো বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হচ্ছে। পুরো ইজতেমা ময়দানের চারপাশে সিসি ক্যামেরাগুলো সচল করা হয়েছে। মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আইন শৃঙ্খখলা বাহিনীর সদস্যরা।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইজতেমা ময়দান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ মুসল্লিদের সকল ধরণের সেবা প্রদানের জন্য সিটি কর্পোরেশন প্রস্তুত রয়েছে।
ইজতেমায় মুসল্লিদের ব্যবহারের জন্য ৩১টি ভবনে আছে ৮ হাজার ৩৩১টি শৌচাগার। ১৭টি গভীর নলকূপ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হবে মুসল্লিদের। তিনটি গ্রিড থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। ৪টি শক্তিশালী জেনারেটর প্রস্তুত থাকবে। মুসল্লিদের পারাপারের জন্য সেনাবাহিনীর সাতটি ভাসমান সেতু প্রস্তুত করা হয়েছে ইতিমধ্যে। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে এবং সব ট্রেনের টঙ্গী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা আছে। এবার পুরো ইজতেমাকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ জেলার লোকজন খিত্তা অনুসারে বসবেন।