ঢাকা ১১:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জামিনে মুক্ত রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদ Logo স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির রাঘব বোয়াল বায়ো ট্রেড ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রাব্বি লাপাত্তা Logo বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ Logo আওয়ামী দোসর মিডিয়া পুনর্বাসনকারী নেতাদের অবাঞ্ছিত করার দাবি বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিকদের Logo ফায়ার সার্ভিসের মহানুভবতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়কদের কৃতজ্ঞতা Logo সোনা চোরাকারবারি দিলীপের সংবাদ প্রকাশ করায় সম্পাদক সহ সাংবাদিককে হত্যার হুমকি Logo সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দোসর ফায়ার সার্ভিস আনোয়ারের দুর্নীতি: ডিজিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য! Logo আশা ইউনিভার্সিটিতে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের জন্য দোয়া ও মিলাদ Logo বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের মাফিয়া অর্থ পাচারকারী শিহাব কোথায়?




বিক্ষোভে উত্তাল ভারত, পুলিশের গুলি, নিহত ৩

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩৪ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক; 
ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী দিল্লিসহ অন্তত দশটি রাজ্যের তেরোটি শহর।

বিক্ষোভ দমাতে দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ কয়েকটি রাজ্যে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও ১৪৪ ধারা জারির পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ১৪৪ ধারা ভাঙার শপথ নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে রাজপথে নেমে এসেছে কয়েক লাখ প্রতিবাদী জনতা। এসময় পুলিশের গুলিতে বেঙ্গালুরু ও লখনৌ রাজ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন।

ইতিমধ্যে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে রাজনীতিক, ইতিহাসবিদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও। রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ থামাতে কর্নাটকের বেঙ্গালুরু ও উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে গুলি চালায় পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঙ্গালুরুতে দুজন ও লখনৌতে একজন নিহত হয়েছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে গুলির বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহতদের শরীরে বুলেটের আঘাতের কথা জানিয়েছে।বিবিসি বলছে, বিজেপি সরকার দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ রাজ্য, বেঙ্গালুরু শহর ও কর্নাটক রাজ্যের কিছু অংশে বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই উত্তরপ্রদেশ, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, বিহার, পাটনা, চণ্ডীগড়, মুম্বাই, দিল্লি, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, কলকাতাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে লাখ লাখ বিক্ষুব্ধ মানুষ রাজপথে নেমে আসে। এতে যোগ দেয় বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, অ্যাকটিভিস্ট ও সাধারণ নাগরিক। তারা ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো বিভিন্ন অনলাইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিক্ষোভে অন্যদের যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।

এ অবস্থায় উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক ও দিল্লির বিভিন্ন অংশে ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা সেবা স্থগিত করেছে প্রশাসন। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। বিভিন্ন শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে।

এ নিয়ে গত কয়েকদিনে ভারতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিহত হলেন। এদিন বিক্ষোভরত অবস্থায় আটক করা হয় ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, সমাজকর্মী ও স্বরাজ ভারতের জাতীয় সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটা, ডি রাজা, বৃন্দা কারাত, নীলোৎপল বসু, সাবেক ছাত্রনেতা উমর খালিদ ও কংগ্রেস নেতা সন্দ্বীপ দীক্ষিতকে।

বিশিষ্টজনদের আটকের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও দক্ষিণি অভিনেতা কমল হাসান। এক ভাষণে মমতা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের পক্ষে-বিপক্ষে জনগণের অবস্থান তুলে ধরতে বিজেপি সরকারকে জাতিসংঘের অধীনে গণভোট আয়োজনের আহ্বান জানান।

টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, বৃহস্পতিবার বিভিন্ন শহরে দফায় দফায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।

লখনৌর মাদেগঞ্জে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশি চৌকিতে হামলা ও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভের জেরে ১৯টি ফ্লাইট বাতিল করেছে ইন্ডিগো।

স্পাইসজেট এবং এয়ার ইন্ডিয়া বাতিল করেছে একটি করে ফ্লাইট। উত্তর-পূর্ব দিল্লি থেকে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সড়কে মিছিল করেন। চেন্নাইয়ে বিজেপি ও এআইএডিএমকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা।

উত্তরপ্রদেশে চারটি সরকারি বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। সেখানে বিক্ষোভে অংশ না নিতে ৩ হাজার জনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা জারি করে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রধান ওপি সিং সাধারণ মানুষকে বিক্ষোভ কার্যক্রম থেকে দূরে থাকতে আহ্বান জানান। পুলিশের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, এক জায়গায় চারজনের বেশি মানুষ একত্রিত হতে পারবে না।

পুলিশের দাবি, সহিংসতা এড়াতে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বিক্ষোভে উত্তাল ভারত, পুলিশের গুলি, নিহত ৩

আপডেট সময় : ১০:৪৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক; 
ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী দিল্লিসহ অন্তত দশটি রাজ্যের তেরোটি শহর।

বিক্ষোভ দমাতে দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ কয়েকটি রাজ্যে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও ১৪৪ ধারা জারির পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ১৪৪ ধারা ভাঙার শপথ নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে রাজপথে নেমে এসেছে কয়েক লাখ প্রতিবাদী জনতা। এসময় পুলিশের গুলিতে বেঙ্গালুরু ও লখনৌ রাজ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন।

ইতিমধ্যে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে রাজনীতিক, ইতিহাসবিদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও। রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ থামাতে কর্নাটকের বেঙ্গালুরু ও উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে গুলি চালায় পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঙ্গালুরুতে দুজন ও লখনৌতে একজন নিহত হয়েছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে গুলির বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহতদের শরীরে বুলেটের আঘাতের কথা জানিয়েছে।বিবিসি বলছে, বিজেপি সরকার দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ রাজ্য, বেঙ্গালুরু শহর ও কর্নাটক রাজ্যের কিছু অংশে বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই উত্তরপ্রদেশ, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, বিহার, পাটনা, চণ্ডীগড়, মুম্বাই, দিল্লি, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, কলকাতাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে লাখ লাখ বিক্ষুব্ধ মানুষ রাজপথে নেমে আসে। এতে যোগ দেয় বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, অ্যাকটিভিস্ট ও সাধারণ নাগরিক। তারা ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো বিভিন্ন অনলাইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিক্ষোভে অন্যদের যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।

এ অবস্থায় উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক ও দিল্লির বিভিন্ন অংশে ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা সেবা স্থগিত করেছে প্রশাসন। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। বিভিন্ন শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে।

এ নিয়ে গত কয়েকদিনে ভারতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিহত হলেন। এদিন বিক্ষোভরত অবস্থায় আটক করা হয় ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, সমাজকর্মী ও স্বরাজ ভারতের জাতীয় সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটা, ডি রাজা, বৃন্দা কারাত, নীলোৎপল বসু, সাবেক ছাত্রনেতা উমর খালিদ ও কংগ্রেস নেতা সন্দ্বীপ দীক্ষিতকে।

বিশিষ্টজনদের আটকের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও দক্ষিণি অভিনেতা কমল হাসান। এক ভাষণে মমতা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের পক্ষে-বিপক্ষে জনগণের অবস্থান তুলে ধরতে বিজেপি সরকারকে জাতিসংঘের অধীনে গণভোট আয়োজনের আহ্বান জানান।

টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, বৃহস্পতিবার বিভিন্ন শহরে দফায় দফায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।

লখনৌর মাদেগঞ্জে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশি চৌকিতে হামলা ও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভের জেরে ১৯টি ফ্লাইট বাতিল করেছে ইন্ডিগো।

স্পাইসজেট এবং এয়ার ইন্ডিয়া বাতিল করেছে একটি করে ফ্লাইট। উত্তর-পূর্ব দিল্লি থেকে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সড়কে মিছিল করেন। চেন্নাইয়ে বিজেপি ও এআইএডিএমকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা।

উত্তরপ্রদেশে চারটি সরকারি বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। সেখানে বিক্ষোভে অংশ না নিতে ৩ হাজার জনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা জারি করে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রধান ওপি সিং সাধারণ মানুষকে বিক্ষোভ কার্যক্রম থেকে দূরে থাকতে আহ্বান জানান। পুলিশের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, এক জায়গায় চারজনের বেশি মানুষ একত্রিত হতে পারবে না।

পুলিশের দাবি, সহিংসতা এড়াতে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা।