ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




ঢাকায় আ’লীগের শীর্ষ পদে পরিবর্তনের আভাস

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ৮০ বার পড়া হয়েছে
দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত পদপ্রত্যাশীরা * দোয়া ও আশীর্বাদ পেতে অনেকে ছুটছেন গণভবনে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল আগামীকাল শনিবার। এ উপলক্ষে সংগঠন দুটির শীর্ষ পদে পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এরই মধ্যে পদপ্রত্যাশীরা শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অনেকে গণভবনে গিয়ে দলীয় হাইকমান্ডের দোয়া ও আশীর্বাদ নিচ্ছেন। তবে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ততা, চাঁদা ও টেন্ডারবাজি, অনুপ্রবেশকারী, ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে স্থান দেয়া, দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দেয়াসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জাড়িত নেতারা নতুন কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না। এরই মধ্যে নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে তা ঘোষণা করা হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য।

দুই মহানগরের অধিকাংশ পদে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার টেলিফোনে বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক। এবারও মহানগরের অধিকাংশ পদে পরিবর্তন আসতে পারে। উত্তর-দক্ষিণ দুটোতেই। শনিবার কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে।

জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকালে রমনার বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে দুই মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ক্যাসিনো-কাণ্ডে রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার নামের সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েক নেতার নাম আলোচনায় আসে। এরপর থেকেই কাউন্সিল সামনে রেখে

স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের নেতৃত্বে আনতে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী নেতাদের একটি তালিকা তৈরি করে রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন নেতৃত্বে কারা আসবেন, এরও একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছেন তিনি। কাউন্সিলের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির একটি চ্যালেঞ্জিং কমিটি উপহার দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্রে জান যায়, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে শেষ মুহূর্তে আলোচনায় আছেন অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য। এছাড়া বর্তমান সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমানের নামও শোনা যাচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির নাম আলোচনার শীর্ষে। এছাড়া বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এমএ কাদের খান, সদস্য বিএম সিরাজুল ইসলামের নাম আলোচনায় আছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সহসভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, অভিন্ন ঢাকা মহানগর কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, নুরুল আমিন রুহুলের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান সভাপতি আবুল হাসনাতও থাকতে পারেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে অভিন্ন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজের ছেলে এবং ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আবদুল আজিজ (তামিম) আলোচনায় আছেন। এছাড়া বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহসভাপতি আওলাদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ কামাল এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেনের নামও শোনা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র বলছে- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে সাঈদ খোকনও সাধারণ সম্পাদক পদে এগিয়ে থাকবেন।

২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা, ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সেসময়ের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। এর তিন বছর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা, ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এরপরই ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ঢাকায় আ’লীগের শীর্ষ পদে পরিবর্তনের আভাস

আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৯
দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত পদপ্রত্যাশীরা * দোয়া ও আশীর্বাদ পেতে অনেকে ছুটছেন গণভবনে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল আগামীকাল শনিবার। এ উপলক্ষে সংগঠন দুটির শীর্ষ পদে পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এরই মধ্যে পদপ্রত্যাশীরা শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অনেকে গণভবনে গিয়ে দলীয় হাইকমান্ডের দোয়া ও আশীর্বাদ নিচ্ছেন। তবে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ততা, চাঁদা ও টেন্ডারবাজি, অনুপ্রবেশকারী, ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে স্থান দেয়া, দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দেয়াসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জাড়িত নেতারা নতুন কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না। এরই মধ্যে নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে তা ঘোষণা করা হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য।

দুই মহানগরের অধিকাংশ পদে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার টেলিফোনে বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক। এবারও মহানগরের অধিকাংশ পদে পরিবর্তন আসতে পারে। উত্তর-দক্ষিণ দুটোতেই। শনিবার কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে।

জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকালে রমনার বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে দুই মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ক্যাসিনো-কাণ্ডে রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার নামের সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েক নেতার নাম আলোচনায় আসে। এরপর থেকেই কাউন্সিল সামনে রেখে

স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের নেতৃত্বে আনতে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী নেতাদের একটি তালিকা তৈরি করে রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন নেতৃত্বে কারা আসবেন, এরও একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছেন তিনি। কাউন্সিলের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির একটি চ্যালেঞ্জিং কমিটি উপহার দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্রে জান যায়, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে শেষ মুহূর্তে আলোচনায় আছেন অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য। এছাড়া বর্তমান সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমানের নামও শোনা যাচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির নাম আলোচনার শীর্ষে। এছাড়া বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এমএ কাদের খান, সদস্য বিএম সিরাজুল ইসলামের নাম আলোচনায় আছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সহসভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, অভিন্ন ঢাকা মহানগর কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, নুরুল আমিন রুহুলের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান সভাপতি আবুল হাসনাতও থাকতে পারেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে অভিন্ন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজের ছেলে এবং ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আবদুল আজিজ (তামিম) আলোচনায় আছেন। এছাড়া বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহসভাপতি আওলাদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ কামাল এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেনের নামও শোনা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র বলছে- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে সাঈদ খোকনও সাধারণ সম্পাদক পদে এগিয়ে থাকবেন।

২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা, ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সেসময়ের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। এর তিন বছর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা, ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এরপরই ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।