২০ বছর ধরে শিকলবন্দী মানিকগঞ্জের রঞ্জন!
- আপডেট সময় : ০৮:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ৮৪ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক;
২০ বছর ধরে শিকলবন্দী জীবন কাটছে মানিকগঞ্জের সাহাপাড়ার যুবক রঞ্জন চন্দ্র কর্মকারের। ছয় বছর বয়েসে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় তাকে শিকলবন্দি করে স্বজনরা। সহায়-সম্বল বিক্রি করেও তাকে সুস্থ করতে পারেনি পরিবার। উন্নত চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মেলেনি সাহায্য।
মানিকগঞ্জের সাহাপাড়ার এলাকার রঞ্জন চন্দ্র কর্মকার । মাত্র ছয় বছর বয়সে তার অস্বাভাবিক মানসিক আচরণ ধরা পড়ে বাবা-মায়ের চোঁখে। বড় হওয়ার সাথে সাথে সমস্যা যেন আরো স্পষ্ট হতে থাকে।
কোথাও গেলে বাড়িতে ফিরতে চায় না রঞ্জন। মাঝে মাঝেই উধাও হয়ে যায়। তার এই মানসিক সমস্যার চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেকটাই নি:স্ব তার পরিবার। হারিয়েছেন নিজের ভিটে বাড়িও। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই ছয় বছর বয়সে রঞ্জনের পায়ে লোহার শিকল পরায় বাবা-মা।
শিকলবন্দি হয়েই ২০ বছর কাটছে ভাঙাচোরা বারান্দার ছোট্ট ঘরে।
রঞ্জনের মা বলেন, আমার একটি মাত্র সন্তান। আমি চাই আমার ছেলে ভাল হউক, টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারছি না। তার বাবা বলেন, রঞ্জনের সুচিকিৎসার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাই।
অমানবিক এই শিকল বন্দী জীবন থেকে মুক্ত করতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, এই ছেলের চিকিৎসার জন্য তার পরিবার অনেক টাকা পয়সা খরচ করেছে। জমিও বিক্রি করেছে। ছেলেটা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করুক এটাই আমরা সবাই চাই।
ইতোমধ্যে রঞ্জনের সুচিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য-সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা পরিষদ। ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: অহিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সার্বিকভাবে তাদের পাশে থাকবে এবং রঞ্জনের চিকিৎসার জন্য আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতভাবে আবেদন জানাবো।
ঘিওর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার জন্য যত ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন আমরা করবো।
প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসা নিয়ে রঞ্জন চন্দ্র কর্মকার সুস্থ্য-স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক, এমনটাই প্রত্যাশা পরিবার আর এলাকাবাসীর।