রামগঞ্জ ছাত্রলীগ সম্মেলন; বিবাহিত, বিভিন্ন মামলার আসামি ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তানদের দৌড়ঝাঁপ!
- আপডেট সময় : ০২:২১:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ১৩৩ বার পড়া হয়েছে
রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন: বিবাহিত, বিভিন্ন মামলার আসামী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তান সভাপতি প্রার্থীর অভিযোগ!!
নিজস্ব প্রতিবেদক;
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব গঠনের লক্ষে থানা, উপজেলা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা ছাত্রলীগ। ইতিমধ্যে কয়েকটি উপজেলা সম্মেলন সম্পন্ন করেছে তারা। তারই আলোকে রামগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল গত ৭ নভেম্বর। কিন্তু সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে তা পিছিয়েছে। তবে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র তোয়াক্কা না করে সম্মেলনকে ঘিরে রয়েছে প্রার্থীদের ছড়াছড়ি। রয়েছে বিবাহিত, হোন্ডাচোর ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তান সভাপতি প্রার্থী। একই সাথে আছে টেন্ডারবাজ, ব্যবসায়ী ও জেলা সিএনজি মালিক সমিতির উপ-কমিটির সভাপতিও। এসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট উপজেলা ছাত্রলীগের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ করে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
অভিযোগে বলা হয়, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি প্রার্থী একরাম হোসেন সৈকতের বাবা আবুল খায়ের মাষ্টার, জেঠা ডাঃ আমির হোসেন মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ছিলেন। একই সাথে তার দুই ভাই তৌহিদুর রহমান ও রোমান হোসেন বিএনপি-যুবদলের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। সৈকত নিজেই বিবাহিত এবং ছাত্রদলের সাথে এখনো আছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সৈকত জানান, সকল অভিযোগই মিথ্যা। বরং তার বাবা ও জেঠা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, বড় ভাই (মরহুম) যুবলীগের দায়িত্ব ছিলেন, মেঝো ভাই পৌর শ্রমিক লীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিবাহের কথা সত্য নয় বলেও জানান তিনি।
উপজেলা ছাত্রলীগের অরেক সভাপতি প্রার্থী সোহেল চৌকিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী বিএনপির ভোট করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সে বিবাহিত ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রামগঞ্জে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে বলে অভিযোগের উল্লেখ করা হয়। সোহেল ও তার এক ভাই ছাড়া পরিবারের সবাই বিএনপি-জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ত। তবে অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট জানিয়ে সোহেল চৌকিয়া বলেন, তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যারা অভিযোগ করেছে তারাই এসব অপকর্মের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে জেলা সিএনজি মালিক সমিতির উপ-কমিটির সভাপতি রাকিবুল হাসান শান্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তার দুই ভাই ও মামা বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন পদে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তার আপন মামা ঢাকা তেজগাঁও থানা বিএনপরি সাধারণ সম্পাদক। সে বিভিন্ন মামলার প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগের যোগ দেয় এবং তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাসকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রামগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসে। তার বিরুদ্ধে নারী ও মাদক সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। তবে সকল অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবী করেন রাকিব। তিনি বলেন তার বড় ভাই তরিকত ফেডারেশনের নেতা, মেঝো ভাই প্রাবাস ফেরত স্থানীয় ব্যবসায়ী। তবে বিএনপি নেতা তার আপন মামা নয়। দ্বীর্ঘ ১৫ বছর তাদের কোন সম্পর্ক নেই বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখতে এসব প্রার্থীদের প্রার্থীতা না দেয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একই সাথে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব ঘটনের দাবী সাধারণ ছাত্রদের।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদাত হোসেন শরিফ জানান, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মেনেই কমিটি দেয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্যতা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে লিখিত পরীক্ষা ও ডোপ টেষ্টের মাধ্যমে সকল প্রার্থীকে উত্তীর্ণ হতে হবে। এবং সকলকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুনাবলী হতে হবে। নচেৎ কাউকে নেতৃত্বে আনা হবেনা বলে জানিয়ে দেয় এ নেতা।