কুমিল্লার গৃহবধূ কাজী নজরুল কলেজের মেধাবী ছাত্রী ফাতেমাকে হত্যার অভিযোগ
- আপডেট সময় : ১১:১৩:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ১১৫ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুমিল্লার গৃহবধূ ও কবি নজরুল কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ফাতেমা আক্তার দিনা (২৭) কে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্যহত্যা বলে চালিয়ে দিতে স্বামী শাশুড়ীর চক্রান্তের অভিযোগ সাথে মামলার সুরতহাল রিপোর্ট ও পুলিশের তোলা ছবিতে স্পট হয়ে উঠেছে বুড়িচং থানা পুলিশের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা।
আদরের ছোট বোনের এমন নির্মম মৃত্যুর কথা কেঁদে কেঁদে জাতীয় প্রেসক্লাবের চত্বরে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান ফাতেমার ভাই মোর্শেদ। বুড়িচং থানা পুলিশের দেওয়া ছবিগুলো দেখান সাংবাদিকদের। মোর্শেদ বলেন, বিয়ে হওয়ার পর থেকেই বোনজামাই ইউসুফ ও তার মায়ের চাওয়া পাওয়া দিনদিন বাড়তে থাকে কখনো নগদ অর্থ কখনো মোটরসাইকেল কখনো বোনকে সরকারি চাকুরী না দিলে বউ হিসেবে মেনে নিবেন না এমন হুমকি দিতেই থাকতো তারা। অনেকবার ইউসুফকে ফার্মেসি ব্যবসার জন্য নগদ অর্থ দিয়ে সাহায্যও করেছেন ফাতেমার ভাইয়েরা তবুও একের পর এক চাওয়া পূরণ অসম্ভব হয়ে পড়ে তাদের। যখন চাওয়া পূরণ করতে ব্যর্থ হতেন ফাতেমার ভাইয়েরা তখনই ফাতেমার উপর চলতো নির্মম অত্যাচার। শেষ কয়েকদিন ফাতেমাকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করেন স্বামী, শশুর ও ননদ। শারিরীক মানুষিক নির্যাতনের কথা শেষ বারের মত মৃত্যুর দিন সকাল ১১ টায় ফেনে জানায় ভাই ও ভবিকে। এবং বলেন ভাই আমাকে এসে নিয়ে যান। তখন তার ভাই বোনের শাশুড়ির সাথে কথা বলেন অনুরোধ করেন যে, আমার বোনকে দিয়ে দেন আপনাদের উপর আমাদের কোন দাবি থাকবেনা। তবুও ফাতেমাকে আসতে দেয়নি শাশুড়ি। পরে ভাই মর্তুজাকে ফোন করো বুড়িচং আনতে বলে ফাতেমা। পরের দিন আনতে যাবে এমনটাই ভাবছিলেন বলে মর্তুজা জানান।
মৃত গৃহবধূ ফাতেমার ভাই মোর্শেদের দাবি ২০ নভেম্বর স্বামী শাশুড়ী ননদের শারিরীক মানুষিক নির্যাতনের মাত্রা গড়ায় নির্মম হত্যায়। বেলা ১১ টার দিকেও ফাতিমা ফোনে কথা বলে ভাই ভাবির সাথে। তখন ফাতিমা জানিয়েছিলো দুপুরের বাসায় ননদ ও দোকানের কর্মচারী ছেলেটা আসবে খাবারের আয়োজন চলছে। সকালে তার মা ভাবি ভাইয়ের সাথে সুস্থ ভাবে কথা বলার দুই ঘন্টা পরই আসে বোনের মৃত্যুর খবর।
মৃত্যু গৃহবধূ ফাতেমার ভাই মোশারফ হোসেন ট্রিপল নাইনে ফোন দেন। ট্রিপল নাইনের সহায়তায় বুড়িচং থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুজনের সাথে কথা হয় ভাই মোশারফ হোসেনের সাথে। বুড়িচং থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুজনের সাথে কথা বলার সময় ভাই মোশাররফ পুলিশকে বলেন, আমরা না আসা পর্যন্ত ঝুলন্ত লাশ যেন না নামানো হয়। আমরা দেখতে চাই আমার বোনকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু ফাতেমার দুই ভাই গিয়ে দেখতে পায় পুলিশ আগেই মৃতদেহ নামিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে মৃত গৃহবধূ ফাতেমার আলামতের যে ছবি পুলিশ ধারন করেছে তাতে স্পষ্ট ঘাটের উপর ঝুলছে লাশের দেহ পা বিছানায় লেগে বাকিয়ে রয়েছে। এমতাবস্থায় আত্মহত্যা কিভাবে হয় এটাই প্রশ্ন ফাতেমার ভাই মোর্শেদ আলমের? বুড়িচং থানার তদন্ত কর্মকর্তা আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে স্বামী ইউসুফ ভূঁইয়াকে আটক করে। ছবিতে স্পট এটা হত্যা কিন্তু পুলিশ খুনি ইউসুফ কে বাচাতে প্ররোচনা বলছে বলে অভিযোগ ফাতেমার ভাই মোর্শেদ আলমের। ঘটনার পরে মৃত গৃহবধূ ফাতেমার পরিবারের সাথে পরামর্শ ছাড়াই মামলা নিজেদের মত করে সাজিয়ে ফেলে বুড়িচং থানা পুলিশ পরে বাদি দের কঠোর আপত্তির কারনে আত্মহত্যার প্ররোচনা উল্লেখ করতে বলেন বুড়িচং থানার ওসি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে পারিবারিকভাবে দিনার বিবাহ কুমিল্লা বুড়িচং থানার উত্তর শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে পল্লী চিকিৎসক আবু ইউসুফের সাথে। মাত্র ৬ মাস সুখেই সংসার চলছে তাদের সংসার। এরপরই শুরু হয় বিভিন্ন চাহিদা আজ এটা কাল ওটা এই চাওয়ার দাবি প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে তাদের।
ফাতেমার ভাই মোর্শেদ ও মোশাররফ বলেন, বোনের শাশুড়ি তাদেরকে হুমকি দিয়েছেন তোরা কি করবি থানা পুলিশ এমপি আমার আঁচলের তলায় থাকে সবসময়। তার শাশুড়ী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেত্রী তারা টাকার বিনিময়ে বুড়িচং থানা পুলিশকে দিয়ে ঘটনার সত্যতা আড়াল করে সুরতহাল রিপোর্ট নিজেদের মতো লিখিয়েছে। এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টও নিজেদের মতো করে করানোর পায়তারা করছে।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাস এবিষয়ে সকালের সংবাদকে জানান ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বুঝা যাবে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের সন্দেহ হয়েছে বলেই স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।