ঢাকা ০৭:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




তিনি কেমন সাংবাদিক! পর্ব..১

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ১১৯ বার পড়া হয়েছে

পিন্টু শেখঃ সাংবাদিক হলে সিগারেট, মদ, গাঁজা জাতীয় নেশা দ্রব্য পান করতেই হয়! এ যেমন আরেক নেশা। তবে এই নেশা যে সবার ক্ষেত্রে প্রয়োজন তাও নয়। সাংবাদিক হচ্ছে জাতীর বিবেক, সাংবাদিকরা নিজের খেয়ে অন্যের দুঃখ, কষ্ট ও সমাজের কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। ঠিক এগুলোর উল্টো স্রোতে চলা ব্যক্তিদের গলায় প্রেস কার্ড ঝুলানো দেখলেই কি সাংবাদিক বলা সাজে? দিনে দিনে এ পেশায় কালিমার লেপনকারী ব্যক্তিদের আকার বৃহত্তর হচ্ছে। এ পেশায় আসা অনেকেই তাঁর অপকর্ম আড়াল করতে সাংবাদিক সেজেছেন। আবার কেউ এ পেশার একটি কার্ড ঝুলিয়ে হরদমে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। ঠিক তেমনই এক নারী এ পেশায় এসেই বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। নাম তাঁর নাজনীন। তিনি অপরাধ বিচিত্রা নামক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। যদিও তিনি অপরাধ বিষয়ক এ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অন্যায়, অপরাধ, নির্যাতন, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের মুখোশ উন্মোচন করার কথা। মানুষের অন্যায় অপরাধ নিয়ে লিখতে আসা এই নারীই করে বেড়াচ্ছেন নানামুখী অপকর্ম। অন্য মানুষের অপরাধ রুখতে আসা এ নারীর অপরাধ রুখবে কে এমন প্রশ্ন অনেকের।

সূত্র জানায়, তথাকথিত সাংবাদিক নাজনীন দীর্ঘদিনে এ হাউসে থেকেও নিজে কখনো এক লাইন নিউজ লিখতে পারেন নাই। অন্যের নিউজে নিজের নাম বসিয়ে তিনি সাংবাদিক বনে যান। বর্তমানেও তার সাংবাদিকতার হালচাল এমনই। বিভিন্ন অনলাইনের অপরাধ বিষয়ক নিউজ কপি করে সেই নিউজ যেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নামে হোক তার সাথে দেখা করে প্রথমে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন নাজনীন। যদি তার এই প্রথম চেষ্টায় সেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ম্যানেজ না হয় তাহলে অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক বা নিউজ লিখতে পারে এমন কারো হাতে ধরে নিউজ লেখিয়ে নেন।

সূত্র আরো জানায়, দীর্ঘদিন অপরাধ বিচিত্রায় থাকার সুবাধে কব্জা করেন প্রতিষ্ঠানের সম্পাদককে। কয়েকবার এই প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিলেও ঘুরেফিরে এখানে ছাড়া তাঁর ভাত নাই কোথায়ও। এই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও তার কাছে রয়েছে আরো কয়েকটি দৈনিক পত্রিকার কার্ড। এখান থেকে বের করে দিলেই সেই পত্রিকায় গিয়ে উঠেন। সেখানে গিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে আবার অপরাধ বিচিত্রায় চলে আসেন।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিরাতে তার বাসায় মদের আড্ডা বসে। টাকা কামানোর কৌশল হিসেবে এ নারী তার বাসায় মদের আড্ডা বসান। তার টার্গেট উচ্চবিত্ত, ধর্ণাট্য ব্যক্তি। ব্যাংকার, সরকারী, আধা সরকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এই ধরনের ব্যক্তিদের সাথে পরিচয় হওয়ার পরই নাজনীন তার বাসায় দাওয়াত করেন। অপার করেন ড্রিংক করার। তার এই অপারে যে সারা দেয়, তার বারোটা বাজে নাজনীনের বাসায় দাওয়াত খাওয়ার ঠিক দুই-একদিন পর। অর্থাৎ নাজনীন তার বাসায় যাকেই দাওয়াত করে নেন, তার সাথে মদের নেশার তালে বেসামাল হয়ে কি করে ফেলেন তা তখন নিজেও বুঝতে না পারলে একদিন পর ঠিক বুঝে ফেলেন। এই অযুহাতেই সেই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা বের করেন এটিএম বুথের মত।

একটি সূত্র জানায়, লাকী নামের এক মেয়েকে দিয়ে মুগদা এলাকায় নাজনীন নারী ব্যবসা চালাতেন। সেই লাকীকে দিয়ে নাজনীন নামের কথিত এ সাংবাদিক লাকীর বসকে ফাঁসিয়েছেন। অবশ্যই এখন সেই বসকে নিয়েই লাকী সংসার করেন।

নাজনীনের এক অফিস স্টাফ জানান, সাংবাদিকতার আড়ালে নাজনীন দুই নাম্বারী কাজ কর্ম করেন বলে অনেক আগ থেকেই জানি। এধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকার পরও সে উচু গলায় কথা বলে। তার এমন অপকর্মের কথা মুগদা, মান্ডা এলাকার অনেক বাড়িওয়ালা জানে। তাই তার অপকর্মের জন্য ওই এলাকায় এক বাড়িতে বেশি দিন থাকতে পারে না। প্রতি মাসেই তার বাসা পরিবর্তন করতে হয়। গত তিন মাসে তিন টি বাসা পরিবর্তন করছে।

এ নারীর এমন সব অপকর্মে অপরাধ বিচিত্রার অনেকেই কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। তবে কেউ প্রকাশ্য মুখ খুলতে না চাইলেও অনেকেই গোপনে এ প্রতিবেদকের কাছে অনেক তথ্য দিয়েছেন। অনেক সিনিয়র সাংবাদিকরা তাঁর অপকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, অফিসে সিনিয়র, জুনিয়র কিছুই মানে না নাজনীন। প্রকাশ্য সিগারেট খাওয়া নিত্যনতুন কিছু নয়। মাঝে মাঝে অফিসে মদ খেয়েই মাতলামি করেন।

তবে এ বিষয়ে নাজনীনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি, তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




তিনি কেমন সাংবাদিক! পর্ব..১

আপডেট সময় : ০৯:৩০:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

পিন্টু শেখঃ সাংবাদিক হলে সিগারেট, মদ, গাঁজা জাতীয় নেশা দ্রব্য পান করতেই হয়! এ যেমন আরেক নেশা। তবে এই নেশা যে সবার ক্ষেত্রে প্রয়োজন তাও নয়। সাংবাদিক হচ্ছে জাতীর বিবেক, সাংবাদিকরা নিজের খেয়ে অন্যের দুঃখ, কষ্ট ও সমাজের কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। ঠিক এগুলোর উল্টো স্রোতে চলা ব্যক্তিদের গলায় প্রেস কার্ড ঝুলানো দেখলেই কি সাংবাদিক বলা সাজে? দিনে দিনে এ পেশায় কালিমার লেপনকারী ব্যক্তিদের আকার বৃহত্তর হচ্ছে। এ পেশায় আসা অনেকেই তাঁর অপকর্ম আড়াল করতে সাংবাদিক সেজেছেন। আবার কেউ এ পেশার একটি কার্ড ঝুলিয়ে হরদমে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। ঠিক তেমনই এক নারী এ পেশায় এসেই বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। নাম তাঁর নাজনীন। তিনি অপরাধ বিচিত্রা নামক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। যদিও তিনি অপরাধ বিষয়ক এ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অন্যায়, অপরাধ, নির্যাতন, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের মুখোশ উন্মোচন করার কথা। মানুষের অন্যায় অপরাধ নিয়ে লিখতে আসা এই নারীই করে বেড়াচ্ছেন নানামুখী অপকর্ম। অন্য মানুষের অপরাধ রুখতে আসা এ নারীর অপরাধ রুখবে কে এমন প্রশ্ন অনেকের।

সূত্র জানায়, তথাকথিত সাংবাদিক নাজনীন দীর্ঘদিনে এ হাউসে থেকেও নিজে কখনো এক লাইন নিউজ লিখতে পারেন নাই। অন্যের নিউজে নিজের নাম বসিয়ে তিনি সাংবাদিক বনে যান। বর্তমানেও তার সাংবাদিকতার হালচাল এমনই। বিভিন্ন অনলাইনের অপরাধ বিষয়ক নিউজ কপি করে সেই নিউজ যেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নামে হোক তার সাথে দেখা করে প্রথমে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন নাজনীন। যদি তার এই প্রথম চেষ্টায় সেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ম্যানেজ না হয় তাহলে অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক বা নিউজ লিখতে পারে এমন কারো হাতে ধরে নিউজ লেখিয়ে নেন।

সূত্র আরো জানায়, দীর্ঘদিন অপরাধ বিচিত্রায় থাকার সুবাধে কব্জা করেন প্রতিষ্ঠানের সম্পাদককে। কয়েকবার এই প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিলেও ঘুরেফিরে এখানে ছাড়া তাঁর ভাত নাই কোথায়ও। এই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও তার কাছে রয়েছে আরো কয়েকটি দৈনিক পত্রিকার কার্ড। এখান থেকে বের করে দিলেই সেই পত্রিকায় গিয়ে উঠেন। সেখানে গিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে আবার অপরাধ বিচিত্রায় চলে আসেন।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিরাতে তার বাসায় মদের আড্ডা বসে। টাকা কামানোর কৌশল হিসেবে এ নারী তার বাসায় মদের আড্ডা বসান। তার টার্গেট উচ্চবিত্ত, ধর্ণাট্য ব্যক্তি। ব্যাংকার, সরকারী, আধা সরকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এই ধরনের ব্যক্তিদের সাথে পরিচয় হওয়ার পরই নাজনীন তার বাসায় দাওয়াত করেন। অপার করেন ড্রিংক করার। তার এই অপারে যে সারা দেয়, তার বারোটা বাজে নাজনীনের বাসায় দাওয়াত খাওয়ার ঠিক দুই-একদিন পর। অর্থাৎ নাজনীন তার বাসায় যাকেই দাওয়াত করে নেন, তার সাথে মদের নেশার তালে বেসামাল হয়ে কি করে ফেলেন তা তখন নিজেও বুঝতে না পারলে একদিন পর ঠিক বুঝে ফেলেন। এই অযুহাতেই সেই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা বের করেন এটিএম বুথের মত।

একটি সূত্র জানায়, লাকী নামের এক মেয়েকে দিয়ে মুগদা এলাকায় নাজনীন নারী ব্যবসা চালাতেন। সেই লাকীকে দিয়ে নাজনীন নামের কথিত এ সাংবাদিক লাকীর বসকে ফাঁসিয়েছেন। অবশ্যই এখন সেই বসকে নিয়েই লাকী সংসার করেন।

নাজনীনের এক অফিস স্টাফ জানান, সাংবাদিকতার আড়ালে নাজনীন দুই নাম্বারী কাজ কর্ম করেন বলে অনেক আগ থেকেই জানি। এধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকার পরও সে উচু গলায় কথা বলে। তার এমন অপকর্মের কথা মুগদা, মান্ডা এলাকার অনেক বাড়িওয়ালা জানে। তাই তার অপকর্মের জন্য ওই এলাকায় এক বাড়িতে বেশি দিন থাকতে পারে না। প্রতি মাসেই তার বাসা পরিবর্তন করতে হয়। গত তিন মাসে তিন টি বাসা পরিবর্তন করছে।

এ নারীর এমন সব অপকর্মে অপরাধ বিচিত্রার অনেকেই কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। তবে কেউ প্রকাশ্য মুখ খুলতে না চাইলেও অনেকেই গোপনে এ প্রতিবেদকের কাছে অনেক তথ্য দিয়েছেন। অনেক সিনিয়র সাংবাদিকরা তাঁর অপকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, অফিসে সিনিয়র, জুনিয়র কিছুই মানে না নাজনীন। প্রকাশ্য সিগারেট খাওয়া নিত্যনতুন কিছু নয়। মাঝে মাঝে অফিসে মদ খেয়েই মাতলামি করেন।

তবে এ বিষয়ে নাজনীনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি, তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।