মানবাধিকার কমিশন ঘুমাচ্ছে : হাইকোর্ট
- আপডেট সময় : ০৯:৩৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯ ১৪৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
আইনের অধীনে দায়িত্ব বোঝার পরও কমিশন (জাতীয় মানবাধিকার কমিশন) ঘুমাচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মিরপুরের গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা রিটের ওপর রায় ঘোষণার সময় সোমবার (১১ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রায় ঘোষণার সময় মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি অব বাংলাদেশের করা রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘একজন মানুষ যদি ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা যায়। কিন্তু একজন মানুষ যদি ঘুমের ভান করে অর্থাৎ জেগে জেগে ঘুমায় তা হলে তাকে ডেকে তোলা যায় না। অথচ আইনের অধীনে দায়িত্ব বোঝার পরও কমিশন (জাতীয় মানবাধিকার কমিশন) ঘুমাচ্ছে।
আদালত আরও বলেন, মানবাধিকার কমিশনকে মনে রাখতে হবে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কমিশন যখন হস্তক্ষেপ করে বা শুনানি গ্রহণ করে তখন কমিশন আধা বিচারিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করে। তাই তাদের ন্যায়বিচার ও আইনের বিধিবিধান প্রতিপালন করতে হবে।
পর্যবেক্ষণ ছাড়াও এ মামলার রায়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতি কয়েকটি নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
এর আগে ২০১৩ সালে রাজধানীর মিরপুরে গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়। এরপর পাঁচ বছর কেটে গেলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করা হয়।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ৯ জানুয়ারি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। এছাড়াও গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা জানাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিন পর মামলাটির রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।