ঢাকা ১১:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo চাকুরীচ্যুত হওয়ার পরেও বহাল পায়রা বন্দর প্রকৌশলী নাছির: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




অশান্ত অস্থির মাদকের রাজ্যে স্বস্তি ফেরাতে চান আকরাম হোসাইন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪০:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৯ ৯৯ বার পড়া হয়েছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বর্তমান দেশে মাদকাসক্তদের সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ লাখ। কোন কোন সংস্থার মতে ৭০ লাখ, নব্বইয়ের দশকে যার পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ১০ লাখেরও কম, এবং মাদকসেবীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই যুবক, তাদের ৪৩ শতাংশ বেকার। ৫০ শতাংশ অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। কিছুদিন আগেও যারা ফেনসিডিলে আসক্ত ছিল তাদের অধিকাংশিই এখন ইয়াবা আসক্ত।

সম্প্রতি ইয়াবা আমাদের দেশের তরুন যুবসমাজকে গ্রাস করেছে। প্রতিদিন যেমন ইয়াবা ধরা হচ্ছে তেমনি প্রতিদিন হাজার হাজার পিস ইয়াবা তরুনরা গ্রহণ করছে। মাদকের কারণে ভাঙছে সংসার। অশান্ত হয়ে উঠছে সমাজ ও দেশ। শুধু গত দুই মাসে কক্সবাজার জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে ২০ জনের বেশী ইয়াবা ব্যবসায়ী।

ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনতে সীমান্তে আলাদা চেকপোস্ট বসায় সরকার। টেকনাফে স্থাপন করা হয় র‌্যাবের আলাদা ৫টি ক্যাম্প। তবু থামছেনা মাদকের বিকিকিনি। র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। আটক হচ্ছে ব্যবসায়ী ও পাচারকারীরা।

এই অস্থির ও অশান্ত মাদকের রাজ্যে স্বস্তি ফেরাতে চান বেসরকারী স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক এমএম আকরাম হোসাইন।

বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফের শীর্ষস্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সুপথে ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুফলের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন, অনেক দূর এগিয়েছেন। প্রায় একশ ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্নসমর্পণের প্রস্তুতিও নিয়েছেন বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। সেখানে তালিকাভুক্ত রয়েছে এক তৃতীয়াংশের বেশি। আত্মসমর্পণকারীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সকল ধরণের সহায়তা করবে প্রশাসন।

গত বছরের ২১ অক্টোবর দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর অস্ত্রের কারখানা ও জলদস্যুদের আত্নসমর্পণ করিয়ে দেশব্যাপী আলোচিত হন সাংবাদিক আকরাম হোসাইন।

সেখানে আত্নসমর্পণকারী ছয়টি বাহিনীর ৪৩ জন সদস্যের মধ্যে ৫ টি বাহিনীর ৩৭ জনই মধ্যস্থতা করেন তিনি নিজেই। সাহসী এই সাংবাদিকের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইয়াবা পাচারের অন্যতম পথ হলো টেকনাফ। এই পথ দিয়ে সবচেয়ে বেশি ইয়াবার চালান আসে।

জেলা পুলিশের তালিকা অনুসারে কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ১৫১ জন সরাসরি ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন, যাঁদের মধ্যে টেকনাফ সদরে তালিকাভুক্ত বড় ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন ১৯৩ জন। টেকনাফের শীর্ষ ২০ জন মোট ইয়াবা ব্যবসার ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করেন।
সাগরঘেঁষা টেকনাফের ওপারেই মিয়ানমার। সীমান্তে পাহারার জন্য বিজিবি এবং নৌপথ পাহারার জন্য কোস্টগার্ড রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পুলিশ। তারপরও ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি। অবশ্য অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত বলে তা বন্ধ হচ্ছে না।

সম্প্রতি চ্যানেল টুয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চট্টগ্রামের ডি.আইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, যদি ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি আরোও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য সহযোগিতা করা হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে তারা আলোর পথে ফিরে আসলে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেয়া হবে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের পরে তাদের মামলা নিষ্পত্তির ব্যপারেও সহযোগিতা করবে পুলিশ।

 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক এমএম আকরাম হোসাইন বলেন, মহেশখালীর জলদস্যূদের আত্মসমর্পণের পর তারা যখন কারাগারে যায়, তখন কারাগারে থাকা টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে জানতে চায় কিভাবে আত্মসমর্পণ করেছে? কার মাধ্যমে এই পথের সন্ধান পেয়েছে? তখন তারা বিস্তারিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের জানায়। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এই খবর তাদের এলাকায় পাঠায়। পরে বাইরে থাকা ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আমার সাথে যোগাযোগ করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও যোগাযোগ করা হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের আত্মসমর্পণ এর সিদ্ধান্ত হয়।

খুব শীগ্রই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্নসমর্পণ প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবেন বলে আশা করেন আকরাম হোসাইন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




অশান্ত অস্থির মাদকের রাজ্যে স্বস্তি ফেরাতে চান আকরাম হোসাইন

আপডেট সময় : ০১:৪০:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৯

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বর্তমান দেশে মাদকাসক্তদের সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ লাখ। কোন কোন সংস্থার মতে ৭০ লাখ, নব্বইয়ের দশকে যার পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ১০ লাখেরও কম, এবং মাদকসেবীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই যুবক, তাদের ৪৩ শতাংশ বেকার। ৫০ শতাংশ অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। কিছুদিন আগেও যারা ফেনসিডিলে আসক্ত ছিল তাদের অধিকাংশিই এখন ইয়াবা আসক্ত।

সম্প্রতি ইয়াবা আমাদের দেশের তরুন যুবসমাজকে গ্রাস করেছে। প্রতিদিন যেমন ইয়াবা ধরা হচ্ছে তেমনি প্রতিদিন হাজার হাজার পিস ইয়াবা তরুনরা গ্রহণ করছে। মাদকের কারণে ভাঙছে সংসার। অশান্ত হয়ে উঠছে সমাজ ও দেশ। শুধু গত দুই মাসে কক্সবাজার জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে ২০ জনের বেশী ইয়াবা ব্যবসায়ী।

ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনতে সীমান্তে আলাদা চেকপোস্ট বসায় সরকার। টেকনাফে স্থাপন করা হয় র‌্যাবের আলাদা ৫টি ক্যাম্প। তবু থামছেনা মাদকের বিকিকিনি। র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। আটক হচ্ছে ব্যবসায়ী ও পাচারকারীরা।

এই অস্থির ও অশান্ত মাদকের রাজ্যে স্বস্তি ফেরাতে চান বেসরকারী স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক এমএম আকরাম হোসাইন।

বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফের শীর্ষস্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সুপথে ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুফলের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন, অনেক দূর এগিয়েছেন। প্রায় একশ ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্নসমর্পণের প্রস্তুতিও নিয়েছেন বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। সেখানে তালিকাভুক্ত রয়েছে এক তৃতীয়াংশের বেশি। আত্মসমর্পণকারীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সকল ধরণের সহায়তা করবে প্রশাসন।

গত বছরের ২১ অক্টোবর দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর অস্ত্রের কারখানা ও জলদস্যুদের আত্নসমর্পণ করিয়ে দেশব্যাপী আলোচিত হন সাংবাদিক আকরাম হোসাইন।

সেখানে আত্নসমর্পণকারী ছয়টি বাহিনীর ৪৩ জন সদস্যের মধ্যে ৫ টি বাহিনীর ৩৭ জনই মধ্যস্থতা করেন তিনি নিজেই। সাহসী এই সাংবাদিকের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইয়াবা পাচারের অন্যতম পথ হলো টেকনাফ। এই পথ দিয়ে সবচেয়ে বেশি ইয়াবার চালান আসে।

জেলা পুলিশের তালিকা অনুসারে কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ১৫১ জন সরাসরি ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন, যাঁদের মধ্যে টেকনাফ সদরে তালিকাভুক্ত বড় ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন ১৯৩ জন। টেকনাফের শীর্ষ ২০ জন মোট ইয়াবা ব্যবসার ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করেন।
সাগরঘেঁষা টেকনাফের ওপারেই মিয়ানমার। সীমান্তে পাহারার জন্য বিজিবি এবং নৌপথ পাহারার জন্য কোস্টগার্ড রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পুলিশ। তারপরও ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি। অবশ্য অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত বলে তা বন্ধ হচ্ছে না।

সম্প্রতি চ্যানেল টুয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চট্টগ্রামের ডি.আইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, যদি ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি আরোও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য সহযোগিতা করা হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে তারা আলোর পথে ফিরে আসলে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেয়া হবে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের পরে তাদের মামলা নিষ্পত্তির ব্যপারেও সহযোগিতা করবে পুলিশ।

 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক এমএম আকরাম হোসাইন বলেন, মহেশখালীর জলদস্যূদের আত্মসমর্পণের পর তারা যখন কারাগারে যায়, তখন কারাগারে থাকা টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে জানতে চায় কিভাবে আত্মসমর্পণ করেছে? কার মাধ্যমে এই পথের সন্ধান পেয়েছে? তখন তারা বিস্তারিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের জানায়। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এই খবর তাদের এলাকায় পাঠায়। পরে বাইরে থাকা ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আমার সাথে যোগাযোগ করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও যোগাযোগ করা হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের আত্মসমর্পণ এর সিদ্ধান্ত হয়।

খুব শীগ্রই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্নসমর্পণ প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবেন বলে আশা করেন আকরাম হোসাইন।