ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




ইডেনে ছাত্রলীগের সিট–বাণিজ্যে ধারালো অস্ত্রের কোপের মধ্য দিয়ে বহিঃপ্রকাশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৪:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৯ ১১২ বার পড়া হয়েছে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর ইডেন সরকারি মহিলা কলেজের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগ নেত্রীদের সিট–বাণিজ্যের অভিযোগ বেশ পুরোনো। এ নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও ধারালো অস্ত্রের কোপের মধ্য দিয়ে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। অর্থের বিনিময়ে বহিরাগত ছাত্রীকে হলে রাখাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার শাখা ছাত্রলীগের এক নেত্রীর সামনেই তাঁর অনুসারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিয়েছেন সেই নেত্রী।

ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিব হলে এ ঘটনা ঘটেছে। আঘাতে আহত নেত্রীর নাম সাবিকুন্নাহার ওরফে তামান্না। তিনি ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আঞ্জুমান আরা ওরফে অনুর অনুসারী। তাঁকে কোপ দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবা নাসরিন ওরফে রুপা।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সূত্রে জানা গেছে, আঞ্জুমান আরা ও মাহবুবা নাসরিনের বিরুদ্ধে হলে সিট–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। মাহবুবা নাসরিনের ছত্রচ্ছায়ায় হলটির ২১৯ নম্বর কক্ষে নাবিলা আক্তার নামের এক ছাত্রী থাকতেন। তিনি রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা কলেজের ছাত্রী বলে জানিয়েছেন হলের ছাত্রীরা। অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে হলে থেকে সিট–বাণিজ্যসহ নানান কর্মকাণ্ড করতেন তিনি। গত মে মাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পান আঞ্জুমান আরা। এরপর থেকে মাহবুবা নাসরিনসহ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের অনেক নেত্রীর সঙ্গে তাঁর একধরনের দূরত্ব তৈরি হয়। শনিবারের ঘটনাটি সেই দূরত্বেরই একটি বহিঃপ্রকাশ।

ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেত্রী প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার ভোরে কয়েকজন অনুসারী নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ২১৯ নম্বর কক্ষে গিয়ে নাবিলা আক্তারকে হল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন আঞ্জুমান আরা। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন মাহবুবা নাসরিন। সেখানে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আঞ্জুমান আরার অনুসারী সাবিকুন্নাহারকে ধারালো ছুরি দিয়ে কোপ দেন। এরপর দুই পক্ষে শুরু হয় মারামারি। পরে বহিরাগত ছাত্রী নাবিলা আক্তারকে হল প্রশাসনের মাধ্যমে লালবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। আঞ্জুমান আরার অনুসারীরা মাহবুবা নাসরিনের কক্ষ ভাঙচুর করেন ও তাঁকে হল থেকে বিতাড়িত করেন।

ঘটনার পর কলেজ ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু ঘটনার সমাধানের বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দিয়ে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ কলেজের মূল ফটকের বাইরে অবস্থানে ছিল।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেত্রী মাহবুবা নাসরিন দাবি করেন, নাবিলা আক্তার বহিরাগত নন। সম্পর্কে নাবিলা তাঁর চাচাতো বোন এবং ইডেন কলেজের ডিগ্রির ছাত্রী। কোপ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আঞ্জুমান আরার সমর্থকেরা আমার চার-পাঁচজন কর্মীর ওপর হামলা চালিয়েছেন। খবর পেয়ে আমি বঙ্গমাতা হলে গেলে আমাকেও মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়।’ মাহবুবা নাসরিন অভিযোগ করেন, রাজিয়া হলে তাঁর কক্ষ (২০৮ নম্বর) থেকে আইফোন ও ১৭ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন আঞ্জুমান আরার সমর্থকেরা।’

অন্যদিকে আঞ্জুমান আরার দাবি, ঘটনার সময় তিনি ক্যাম্পাসেই ছিলেন না। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে এসে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে তিনি ঘটনা জানতে পারেন। হলের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলেই তাঁর বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও দাবি করেন তিনি।

লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা হলে ছাত্রীদের দুই পক্ষে মারামারি হয়েছিল। পুলিশের যতটুকু সহায়তা কলেজ কর্তৃপক্ষ চেয়েছে, তা করা হয়েছে। এখন ইডেন কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে ছাত্রীরা সভা করছেন৷’

ঘটনার বিষয়ে জানতে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শামসুন নাহারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ইডেনে ছাত্রলীগের সিট–বাণিজ্যে ধারালো অস্ত্রের কোপের মধ্য দিয়ে বহিঃপ্রকাশ

আপডেট সময় : ০৯:৩৪:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৯

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর ইডেন সরকারি মহিলা কলেজের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগ নেত্রীদের সিট–বাণিজ্যের অভিযোগ বেশ পুরোনো। এ নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও ধারালো অস্ত্রের কোপের মধ্য দিয়ে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। অর্থের বিনিময়ে বহিরাগত ছাত্রীকে হলে রাখাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার শাখা ছাত্রলীগের এক নেত্রীর সামনেই তাঁর অনুসারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিয়েছেন সেই নেত্রী।

ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিব হলে এ ঘটনা ঘটেছে। আঘাতে আহত নেত্রীর নাম সাবিকুন্নাহার ওরফে তামান্না। তিনি ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আঞ্জুমান আরা ওরফে অনুর অনুসারী। তাঁকে কোপ দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবা নাসরিন ওরফে রুপা।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সূত্রে জানা গেছে, আঞ্জুমান আরা ও মাহবুবা নাসরিনের বিরুদ্ধে হলে সিট–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। মাহবুবা নাসরিনের ছত্রচ্ছায়ায় হলটির ২১৯ নম্বর কক্ষে নাবিলা আক্তার নামের এক ছাত্রী থাকতেন। তিনি রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা কলেজের ছাত্রী বলে জানিয়েছেন হলের ছাত্রীরা। অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে হলে থেকে সিট–বাণিজ্যসহ নানান কর্মকাণ্ড করতেন তিনি। গত মে মাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পান আঞ্জুমান আরা। এরপর থেকে মাহবুবা নাসরিনসহ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের অনেক নেত্রীর সঙ্গে তাঁর একধরনের দূরত্ব তৈরি হয়। শনিবারের ঘটনাটি সেই দূরত্বেরই একটি বহিঃপ্রকাশ।

ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেত্রী প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার ভোরে কয়েকজন অনুসারী নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ২১৯ নম্বর কক্ষে গিয়ে নাবিলা আক্তারকে হল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন আঞ্জুমান আরা। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন মাহবুবা নাসরিন। সেখানে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আঞ্জুমান আরার অনুসারী সাবিকুন্নাহারকে ধারালো ছুরি দিয়ে কোপ দেন। এরপর দুই পক্ষে শুরু হয় মারামারি। পরে বহিরাগত ছাত্রী নাবিলা আক্তারকে হল প্রশাসনের মাধ্যমে লালবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। আঞ্জুমান আরার অনুসারীরা মাহবুবা নাসরিনের কক্ষ ভাঙচুর করেন ও তাঁকে হল থেকে বিতাড়িত করেন।

ঘটনার পর কলেজ ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু ঘটনার সমাধানের বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দিয়ে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ কলেজের মূল ফটকের বাইরে অবস্থানে ছিল।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেত্রী মাহবুবা নাসরিন দাবি করেন, নাবিলা আক্তার বহিরাগত নন। সম্পর্কে নাবিলা তাঁর চাচাতো বোন এবং ইডেন কলেজের ডিগ্রির ছাত্রী। কোপ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আঞ্জুমান আরার সমর্থকেরা আমার চার-পাঁচজন কর্মীর ওপর হামলা চালিয়েছেন। খবর পেয়ে আমি বঙ্গমাতা হলে গেলে আমাকেও মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়।’ মাহবুবা নাসরিন অভিযোগ করেন, রাজিয়া হলে তাঁর কক্ষ (২০৮ নম্বর) থেকে আইফোন ও ১৭ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন আঞ্জুমান আরার সমর্থকেরা।’

অন্যদিকে আঞ্জুমান আরার দাবি, ঘটনার সময় তিনি ক্যাম্পাসেই ছিলেন না। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে এসে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে তিনি ঘটনা জানতে পারেন। হলের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলেই তাঁর বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও দাবি করেন তিনি।

লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা হলে ছাত্রীদের দুই পক্ষে মারামারি হয়েছিল। পুলিশের যতটুকু সহায়তা কলেজ কর্তৃপক্ষ চেয়েছে, তা করা হয়েছে। এখন ইডেন কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে ছাত্রীরা সভা করছেন৷’

ঘটনার বিষয়ে জানতে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শামসুন নাহারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।