রাজনৈতিক প্রতিবেদক;
ক্যাসিনোকাণ্ড চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজী সহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে খোদ সরকার প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নির্দেশে দল ও দলের বাইরে চলছে শুদ্ধি অভিযান।
আওয়ামী লীগের সকল অংঙ্গ সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর লক্ষে ঘোষণা করা হয়েছে কাউন্সিলের। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছে দলের নির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের দলে জায়গা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ১১ ও ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ দুই শাখা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন।
বর্তমান কমিটির চার সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ শাকিব বাদশা, আব্দুল আলীম বেপারী রয়েছেন কেন্দ্রীয় শীর্ষ পদের দৌড়ে।
শীর্ষ পদের দৌড়ে এগিয়ে আছেন যারা তাদের মধ্যে খায়রুল হাসান জুয়েলের নাম অনেকটাই এগিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একটি সুত্র। সূত্র জানায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ পদের দৌড়ে এগিয়ে থাকা নেতাদের মধ্যে বর্তমান সাংগঠনিক খায়রুল হাসান জুয়েল রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে। তার সাহসীকতা ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে বেশ প্রশংসনীয়।
১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের ক্রীড়া সম্পাদক পদ পেয়ে রাজনীতি শুরু করেন খায়রুল হাসান জুয়েল। পরবর্তীতে তিনি ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচন পর বিরোধী আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে তখন নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কার্যক্রক্রম ধরে রাখতে যারা কাজ করছিলেন তাদের মধ্যে জুয়েল ছিল অন্যতম সাহসী ছাত্রলীগের নেতা।
ওয়ান ইলেভেনের সময় জেল জুলুম সহ নির্মম অত্যাচারের পরেও প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রশ্নে আপোষ করেননি তিনি। রাজপথে তার সাহসী ভুমিকার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি সুযোগ পান স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। প্রায় সাড়ে সাত বছর বছর ধরে নিষ্ঠার সাথে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
প্রায় দশ বছর পর এই সম্মেলনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। নানা রকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ও অনুপ্রবেশকারীরা দলে ঠাঁই পাবেনা বলে আশা করছেন পদপ্রত্যাশীগন।
এবারের নেতৃত্ব কেমন হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, দখল বাজ, টেন্ডার বাজ সহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, ইমেজ নষ্টকারীদের নেতৃত্বে দেওয়া হবেনা।
সর্বশেষ ২০১২ সালে মোল্লা মো. আবু কাওছারকে সভাপতি এবং পঙ্কজ দেবনাথকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি হয়েছিল। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ওই কমিটিই এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কাসিনোকাণ্ডে নাম এসেছে কাওসারেরও।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনটি দেখভাল করছেন সাবেক সভাপতি বাহাউদ্দিন নাছিম। ফলে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তার প্রভাব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
খায়রুল হাসান জুয়েল বলেন, ১/১১ তে নেত্রীর কারা মুক্তির আন্দোলনে এক বছর জেলে থেকেছি। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বার বার হামলা মামলার শিকার হয়েছি, জেল খেটেছি। সততা স্বচ্ছতা কমিটমেন্ট এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে দলের জন্য সব সময় নিয়োজিত রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, নেতৃত্বে যেই আসুক, তার যেন অবশ্যই সততা, স্বচ্ছতা, কনট্রিবিউশন এবং কমিটমেন্ট থাকে।
বাহাউদ্দিন নাছিম সম্প্রতি গণমাধ্যমকে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, নতুন নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে।