বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলনে পুলিশের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় আব্দুল্লাহ শুভ নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আটক শিক্ষার্থীর নাম আবদুল্লাহ শুভ। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। আহতরা হলেন- আবদুল মজিদ অন্তর, মোর্শেদ, মাজহার ও শাহরিয়ার রিদম।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিকেল ৫টার দিকে প্রধান ফটকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করলে বাধা দেয় পুলিশ। কিন্তু বাধা উপেক্ষা করে যানবাহন থামিয়ে দিলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। সেই সঙ্গে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এ সময় ‘শালাদের ধর ধর’ বলেই শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে রাজশাহী-ঢাকা রোডে অবস্থান নিলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও ভিসির পদত্যাগ দাবি করেন। শিক্ষকরা চলে যাওয়ার পর পুলিশ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। তখন পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের গালি দেয় পুলিশ।
আহত আবদুল মজিদ অন্তর বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম আমরা। বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এতে আমাদের চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রক্টর বা প্রশাসনের কেউ আমাদের খোঁজখবর নেননি। ন্যূনতম সৌজন্যবোধের পরিচয় দিতে পারেনি পুলিশ। তারা আমাদের গালি দিয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যোগসাজশে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব আমরা।
এ বিষয়ে মতিহার জোনের এসি মাসুদ রানা বলেন, শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা না সরায় ছত্রভঙ্গ করেছি। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরাই আমাদের ওপর হামলা করেছে, আমরা হামলা করিনি। এ সময় একজনকে আটক করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।