ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




স্ত্রীদের সঙ্গে বিশ্বনবির আচরণ ও বিনোদন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪২:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০১৯ ১০৭ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়অ সাল্লামের জীবনের প্রতিটি দিকই মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। কুরআনের ভাষায় তা উসওয়াতুন্নবি বা নবির আদর্শ। রবিউল আউয়াল মাস মুমিন মুসরমানকে এ মাসের স্মরণ করিয়ে দেয়।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ তথা নীতিমালা।’

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যক্তিগত জীবনও আনন্দে পরিপূর্ণ। তিনি তার স্ত্রীদের সঙ্গে আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছেন। বিনোদন করেছেন। যা সব নারী-পুরুষের দাম্পত্য জীবনের জন্য আদর্শ।

পারিবারিক জীবনে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনন্দঘন মুহূর্তগুলোর হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় ওঠে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম স্বামী যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে। আর আমি আমার স্ত্রীদের সাথে সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করি।’

> স্ত্রীদের সঙ্গে খেলাধূলা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে খেলাধূলায় মেতে উঠতেন। একবার তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দিয়ে ইচ্ছা করে হেরে যান। কিছুদিন পর পুনরায় দৌঁড় প্রতিযোগিতায় হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হেরে যান। তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! আজ আমি তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি, তুমি আমার সঙ্গে পারনি। এটা হলো প্রথম প্রতিযোগিতায় জিতে যাওয়ার বদলা।

> স্ত্রীদের সঙ্গে খোশ গল্প
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝে মাঝে স্ত্রীদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনী ও খোশ গল্প করতেন। সব স্ত্রীই তাকে নতুন নতুন কাহিনী শুনাতেন। তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে নিজেও স্ত্রীদের কিসসা শুনাতেন।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তিনি আমাদের মধ্যে এমনভাবে হাসতেন, কথা বলতেন ও বসে থাকতেন, আমাদের মনেই হতো না যে তিনি একজন মহান রাসুল।

> স্ত্রীদের সঙ্গে ভাব-বিনিময়
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো স্ত্রীদের ভৎসনা কিংবা তিরস্কার করতেন না। তাদেরকে কোনো বিষয়ে কটাক্ষ করে কথা বলতেন না। বরং হৃদয় উজাড় করে দিয়ে মায়া ও মন জুড়ানো আকর্ষণীয় ভাবভঙ্গি ও কথা বলতেন।

স্ত্রীদের কোনো কথা তাঁর মনের বিপরীত হলে তাদের সে কথা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে অন্য চিন্তা করতেন। তিনি বিবিগণকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাদের আদর, সোহাগ ও মায়া-মমতায় রাখতেন। কখনো কখনো তাদের উরুতে মাথা রেখে শুয়ে থাকতেন।

> স্ত্রীদের প্রতি ভালোবাসা
রাসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের এতটা ভালোবাসতেন যে, হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা পাত্রের যে স্থানে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতেন। তিনিও সে স্থানে মুখ দিয়ে পানি পান করতেন।
আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাঁড়ের যে জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন হজরত আশয়া রাদিয়াল্লাহু আনহাও হাড়ের ঐ জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন।

> স্ত্রীদের সঙ্গে সালাম বিনিময়
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বাহির থেকে ঘরে ফিরতেন তখন অত্যন্ত খুশি মনে মুচকি হাসতে হাসতে ঘরে প্রবেশ করতেন। দরদমাখা কণ্ঠে সালাম দিতেন।
কোনো ব্যাপারেই তিনি দোষ ধরতেন না। বিশ্রামের সময় বিছানার ব্যাপারেও দোষ ধরতেন না। তিনি যেভাবে বিছানা প্রস্তুত পেতেন তার ওপরই শুয়ে পড়তেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবন মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। যার বাস্তবায়নে পারিবারিক জীবনে শান্তি ও সহাবস্থান ফিরে আসতে বাধ্য।

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীদের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বুঝা যায় যে, সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপনে স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে বিকল্প নেই। জীবনকে সুখ-শান্তি ও আনন্দময় করে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ অনুসরণ ও অনুকরণে মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবনকে অনুসরণ ও অনুকরণ করার মাধ্যমে সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণে জীবন রঙিন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




স্ত্রীদের সঙ্গে বিশ্বনবির আচরণ ও বিনোদন

আপডেট সময় : ০৯:৪২:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০১৯

ধর্ম ডেস্ক

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়অ সাল্লামের জীবনের প্রতিটি দিকই মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। কুরআনের ভাষায় তা উসওয়াতুন্নবি বা নবির আদর্শ। রবিউল আউয়াল মাস মুমিন মুসরমানকে এ মাসের স্মরণ করিয়ে দেয়।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ তথা নীতিমালা।’

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যক্তিগত জীবনও আনন্দে পরিপূর্ণ। তিনি তার স্ত্রীদের সঙ্গে আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছেন। বিনোদন করেছেন। যা সব নারী-পুরুষের দাম্পত্য জীবনের জন্য আদর্শ।

পারিবারিক জীবনে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনন্দঘন মুহূর্তগুলোর হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় ওঠে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম স্বামী যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে। আর আমি আমার স্ত্রীদের সাথে সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করি।’

> স্ত্রীদের সঙ্গে খেলাধূলা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে খেলাধূলায় মেতে উঠতেন। একবার তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দিয়ে ইচ্ছা করে হেরে যান। কিছুদিন পর পুনরায় দৌঁড় প্রতিযোগিতায় হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হেরে যান। তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! আজ আমি তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি, তুমি আমার সঙ্গে পারনি। এটা হলো প্রথম প্রতিযোগিতায় জিতে যাওয়ার বদলা।

> স্ত্রীদের সঙ্গে খোশ গল্প
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝে মাঝে স্ত্রীদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনী ও খোশ গল্প করতেন। সব স্ত্রীই তাকে নতুন নতুন কাহিনী শুনাতেন। তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে নিজেও স্ত্রীদের কিসসা শুনাতেন।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তিনি আমাদের মধ্যে এমনভাবে হাসতেন, কথা বলতেন ও বসে থাকতেন, আমাদের মনেই হতো না যে তিনি একজন মহান রাসুল।

> স্ত্রীদের সঙ্গে ভাব-বিনিময়
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো স্ত্রীদের ভৎসনা কিংবা তিরস্কার করতেন না। তাদেরকে কোনো বিষয়ে কটাক্ষ করে কথা বলতেন না। বরং হৃদয় উজাড় করে দিয়ে মায়া ও মন জুড়ানো আকর্ষণীয় ভাবভঙ্গি ও কথা বলতেন।

স্ত্রীদের কোনো কথা তাঁর মনের বিপরীত হলে তাদের সে কথা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে অন্য চিন্তা করতেন। তিনি বিবিগণকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাদের আদর, সোহাগ ও মায়া-মমতায় রাখতেন। কখনো কখনো তাদের উরুতে মাথা রেখে শুয়ে থাকতেন।

> স্ত্রীদের প্রতি ভালোবাসা
রাসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের এতটা ভালোবাসতেন যে, হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা পাত্রের যে স্থানে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতেন। তিনিও সে স্থানে মুখ দিয়ে পানি পান করতেন।
আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাঁড়ের যে জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন হজরত আশয়া রাদিয়াল্লাহু আনহাও হাড়ের ঐ জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন।

> স্ত্রীদের সঙ্গে সালাম বিনিময়
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বাহির থেকে ঘরে ফিরতেন তখন অত্যন্ত খুশি মনে মুচকি হাসতে হাসতে ঘরে প্রবেশ করতেন। দরদমাখা কণ্ঠে সালাম দিতেন।
কোনো ব্যাপারেই তিনি দোষ ধরতেন না। বিশ্রামের সময় বিছানার ব্যাপারেও দোষ ধরতেন না। তিনি যেভাবে বিছানা প্রস্তুত পেতেন তার ওপরই শুয়ে পড়তেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবন মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। যার বাস্তবায়নে পারিবারিক জীবনে শান্তি ও সহাবস্থান ফিরে আসতে বাধ্য।

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীদের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বুঝা যায় যে, সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপনে স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে বিকল্প নেই। জীবনকে সুখ-শান্তি ও আনন্দময় করে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ অনুসরণ ও অনুকরণে মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবনকে অনুসরণ ও অনুকরণ করার মাধ্যমে সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণে জীবন রঙিন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।