কমিটিতে স্থান পেতে হাওয়া ভবনের এপিএস অপুর চ্যালাদের দৌড়ঝাঁপ!
- আপডেট সময় : ০২:৪৭:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০১৯ ১১৭ বার পড়া হয়েছে
গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি: সারাদেশে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের লক্ষে শুরু হয়েছে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। অবশ্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলও শেষ হয়েছে। ২০ অক্টোবর থেকে শুরু কাউন্সিল। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ডে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনে নেতাকর্মীদের মতের ওপর নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের পরবর্তী নেতৃত্বে কে বা কারা আসছেন। ফলে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা যেমনি উজ্জীবিত তেমনি কমিটিতে স্থান পেতেও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
বিশেষ করে রাজনৈতিক নন বা কোনদিন আ’লীগ করেননি এমন ব্যক্তি বিশেষরাও রয়েছেন এই সারিতে। যে কোন মুল্যে কমিটিতে পদ পেতে তারা শীর্ষ নেতাদের কাছে লবিং তদ্বির চালানোর পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অর্থও ঢালছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নে আগামি ৯ নভেম্বর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে কমিটিতে স্থান পেতে হাওয়া ভবনের এপিএস মিয়া নূরুদ্দিন অপুর চ্যালাদের দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যাচ্ছে। কমিটির বিভিন্ন পদে থাকার জন্য তারা রাজধানী পর্যন্ত ছোটাছুটি করছে।
অভিযোগ রয়েছে, গোসাইরহাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহসান সিদ্দিকী লাবু চৌধুরী ও তার ভাতিজা শাকিল চৌধুরী বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা পরিষদের সদস্য হয়েও গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছে। এমনকি তারা তাদের বাড়ির ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কোন লোককে প্রবেশ করতে দেয়নি। বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচুর জাল ভোট প্রদান করে। তাদের এই অপকর্মের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামান্য কিছু ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে বিএনপির প্রার্থীকে নিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করে। আনিসুজ্জামান সোহেল, আবদুর রহিম মাঝি, বিএনপির আবদুর রহমান, যুবদলের মোল্লা জালাল, আকবর হোসেন সরদার (ঢাকা উত্তর ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক) ও এনায়েত সরদার (রিপন ও সোহেলের আপন চাচা) সহ অনেকে এই মিটিংয়ে অংশ নেয়।
আর এই মিটিংয়ে যারা অংশ নেয় তাদেরকে বিপুল পরিমান অর্থ প্রদান করা হয়। মিয়া নূরুদ্দিন অপু এই অর্থ আসাদুজ্জামান রিপন আর আনিসুজ্জামান সোহেলের মাধ্যমে লেনদেন করেন। রিপন বর্তমানে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েও মিয়া নূরুদ্দিন অপুর ঘনিষ্ঠ চ্যালা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
জানা গেছে, রিপন অপুর টাকায় রাজধানীতে ২টি বাড়ি ও ১টি ফ্ল্যাটের মালিক। অপরদিকে আনিসুজ্জামান সোহেল মিয়া নূরুদ্দিন অপুর ভাতিজী জামাই। শুধু তাই নয়, রিপন ও সোহেল নিয়মিত জেলখানায় গিয়ে মিয়া নূরুদ্দিন অপুর সাথে দেখা করে খোঁজখবর নিয়ে আসেন এবং তার পরামর্শ মতো রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকেন। কথা উঠেছে হাওয়া ভবন অপুর ঘনিষ্ঠজনেরা কি করে গোসাইরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা হন?
বর্তমানে সোহেল ও রিপন দু’জন মিলে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কারওয়ান বাজারে প্রভাব খাটিয়ে আড়ৎ পরিচালনা করছে। এসব অনুপ্রবেশকারীদের কারণে আওয়ামী লীগে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা কোন কাজকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে না।
যদিও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অনেক আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন অন্য দল থেকে আসা অর্থাৎ অনুপ্রবেশকারী, বিতর্কিত বা রাজনীতিতে নিস্ক্রিয়দের কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে না। কিন্তু শীর্ষ নেতৃবৃন্দের এমন বক্তব্যের পরেও দলের ত্যাগি ও বঞ্চিত নেতাকর্মীরা রয়েছেন শঙ্কায়।