চেন্নাইকে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে কেরালা
- আপডেট সময় : ১০:০৫:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে
ক্রীড়া প্রতিবেদক:
স্বদেশী চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইকে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে কেরালা। বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই এফসিকে আনা হয়েছিল শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য। কিন্তু সেই চেন্নাই এফসি চরমভাবে হতাশ করল টুর্নামেন্টের আয়োজক এবং দর্শকদের। ধারনা করা হয়েছিল এই দলটি হয়তো থাকবে টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সবার সে ধারনাকে ভুল প্রমাণ করে টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল। তাও তিন ম্যাচের সবকটিতেই হেরে।
টুর্নামেন্টের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন টিসি স্পোর্টসের পর ভারতের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই এফসি তিন ম্যাচের সবকটিতেই হেরে খালি হাতে বিদায় নিল ভারতের চ্যাম্পিয়নরা। গতকাল গ্রুপ পর্বের নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বদেশী ক্লাব শ্রী গোকুলাম কেরালা এফসির কাছে হেরে দেশের পথ ধরল চেন্নাই এফ সি। ভারতীয় লিগে চেন্নাই এফসি যেখানে এক নম্বর দল সেখানে কেরালার অবস্থান নয় নম্বরে। কিন্তু শেখ কামাল টুর্নামেন্টে এক নম্বর চেন্নাইকে উড়িয়ে দিয়েছে নয় নম্বর দল কেরালা।
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে চেন্নাই এফসিকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে শ্রী গোকুলাম কেরালা এফসি। এই দলটি এবারের টুর্নামেন্টে এসেছিল ঢাকা আবাহনী নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায়। তবে এসেই চমক সৃষ্টি করে টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু এফসির সাথে ড্র করলেও গতকাল স্বদেশী ক্লাব চেন্নাই এফসিকে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে কেরালা এফসি। ভারতীয় চ্যাম্পিয়নদের এই টুর্নামেন্টে চেনাই গেল না। বলতে গেলে জার্সি দেখেই তাদের চিনতে হয়েছে। যার পরিণতি সব ম্যাচে হেরে খালি হাতে বিদায়।
অপরদিকে এখন দেখার অপেক্ষা কেরালা এফসি আর কতদূর যায়। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্নক শ্রী গোকুলাম কেরালা এফসি। লক্ষ্যটা যেন শুরুতেই গোল আদায় করে নেওয়া। আর সে লক্ষ্যে ঠিকই পৌঁছে যায় কেরালার দলটি। ৮ মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় কেরালা। বামপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন হেনরী। দলের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার নেন দারুণ এক শট। কিন্তু সে শট ফেরান চেন্নাই গোলরক্ষক। বল আবার ফিওে যায় সেই হেনরীর পায়ে। তবে এবার আর তিনি শট নেননি। বল ঠেলে দেন অপরপ্রান্তে থাকা লাল রুমাইয়ার দিকে। ফাঁকা পোস্টে কেবল আলতো টোকায় লাল রুমাইয়া জড়িয়ে দেন জালে এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে মাতে কেরালা। শুরুতেই গোল আদায় করে নেওয়া কেরালা আক্রমণ আরো জোরদার করে। সে সুবাদে ৫ মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেয় দলটি।
এবার মাঝমাঠ দিয়ে আক্রমণে উঠে চেন্নাই ডি বক্সের সামনে থেকে গার্সিয়া বল বাড়িয়ে দেন হেনরীর উদ্দেশ্যে। চলন্ত বলে টোকা দিয়ে দারুণ দক্ষতায় বল জালে জড়িয়ে দেওয়ার কাজটি সেরেছেন হেনরী। ব্যবধান দাঁড়ায় ২-০। শুরুতেই দুই গোলে পিছিয়ে পড়া চেন্নাই চেষ্টা করে ম্যাচে ফেরার। কিন্তু গোল করার মত তেমন কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। পক্ষান্তরে চেন্নাই রক্ষণভাগে চাপ অব্যাহত রাখে কেরালা এফসি। কিন্তু একাধিক সুযোগ সৃষ্টি করলেও সে গুলোকে গোলে রূপ দিতে পারেনি। ফলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় শ্রী গোকুলাম কেরালা এফসি।
বিরতির পর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই এফসি। কিন্তু কেরালার রক্ষণভাগে ফাটল ধরানো সম্ভব হয়নি তাদের। এ অর্ধের ১২ মিনিটে তৃতীয় গোল পেয়ে যেতে পারতো কেরালা। ডানপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে গার্সিয়া। ডি বক্সে থাকা সেবাস্তিয়ানের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান গার্সিয়া। কিন্তু সামনে অসহায় গোলরক্ষক থাকলেও অবিশ্বাস্যভাবে ক্রসবারের উপর দিয়ে মারেন সেবাস্তিয়ান। দুই মিনিট পর আবার ব্যবধান বাড়াতে পারতো কেরালা।
এবার বামপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে ডি বঙের বাইরে থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন বদলী জোসেফ। কিন্তু তার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন চেন্নাই গোল রক্ষক। শেষ পর্যন্ত আর কোন দলই গোলের দেখা পায়নি। ফলে ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার পাশাপাশি সেমিফাইনালও নিশ্চিত করে শ্রী গোকুলাম কেরালা এফসি। ম্যাচ সেরা হয়েছেন বিজয়ী দলের নাথানেল জুড়ি গার্সিয়া। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন টুর্নামেন্ট কমিটির সমন্বয়কারী এবং সিজেকেএস অতিরিক্ত সাধারন সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ফজলুল্লাহ, সিজেকেএস নির্বাহি সদস্য জি এম হাসান।