কি অপরাধ তিনি করেননি!
- আপডেট সময় : ০৭:২২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ৯৯ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুন্দরী নারীদের মোটা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলতেন মেসার্স সুলতান ফুড অ্যান্ড বেভারেজের মালিক শেখ সাজ্জাদ হোসেন (৪৪)। এরপর এসব নারী কর্মীদের জিম্মি করে অনৈতিক সম্পর্কে গড়তেন তিনি। এরপর শুরু হতো ব্লাকমেইল করা। এর বাইরেও প্রতারণা, চুরি, ছিনতাই ও অর্থ আত্মসাৎসহ নানান অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরেই এ অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন সাজ্জাদ হোসেন।
সাজ্জাদ হোসেন বগুড়ার জলেশ্বরিতলার মৃত শেখ আমজাদ হোসেনের ছেলে। রাজশাহী নগরীর বিসিক শিল্প এলাকায় মেসার্স সুলতান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি চালু করেছিলেন তিনি। কারখানা খুলেই প্রতারণার ফাঁদ পাতেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৮ সেপ্টেম্বর এ কারখানায় সরবরাহকারী সোহেল আহমেদকে মারধর করেন সাজ্জাদ ও তার সহযোগীরা। ময়দা ও চিনি সরবরাহ বাবদ সাজ্জাদ হোসেনের কাছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা পেতেন সোহেল। পাওনা টাকা চাইতে গেলে মারধর করে সোহলের কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ও এক ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেন সাজ্জাদ। এ নিয়ে ওই দিনই নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন নাটোরের একডালা এলাকার বাসিন্দা সোহেল।
গত ৬ অক্টোবর মামলার তদন্তভার যায় সিআইডিতে। এর কয়েকদিন পর নগরীর বিসিক এলাকার ওই কারখানায় যান তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির নগরীর মতিহার ইউনিটের উপ-পরিদর্শক হারুনুর রশীদ।
অবৈধভাবে কারখানা পরিচালনারও আলামত পান তিনি। দ্বিতীয় দফায় গত ২৪ অক্টোবর আবারও কারখানায় গেলে কাউকে পাননি তদন্তকারী কর্মমকর্তা। রাতারাতি সেই কারখানা বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুদইল এলাকায় সরিয়ে নেয়া হয়। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় সিআইডি। সেখান থেকেও পালিয়ে যাচ্ছিলেন সাজ্জাদ। ধাওয়া করে বগুড়ার চারমাথা বাসটার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নানান অপরাধের স্বীকারোক্তি দেন সাজ্জাদ হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডির নগরীর মতিহার ইউনিটের উপ-পরিদর্শক হারুনুর রশীদ বলেন, সুন্দরী নারীদের মোটা বেতনে চাকরির প্রলোভনে ফাঁদে ফেলতেন সাজ্জাদ। এরপর তাদের সবকিছু লুটে নিতেন তিনি। এমন বেশ কয়েকজন ভিকটিমের বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য দিয়েছেন তিনি।
তাছাড়া সোহেল আহমেদের অর্থ আত্মসাৎ, তাকে মারধর ও টাকা-স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার বিয়ষটি স্বীকার করেছেন তিনি। প্রতিবারই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে রাতারাতি কোম্পানি সরিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা বিচারাধীন। একই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও তদন্তাধীন তার বিরুদ্ধে।
গতকাল শুক্রবার নতুন করে নগরীর মতিহার থানায় তার বিরুদ্ধে গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে। ভাড়া হিসেবে নিয়ে সালেহা আক্তার নামের এক নারীর গাড়ি গায়েব করে দেন সাজ্জাদ। বিয়ষটি স্বীকার করেছেন তিনি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন, ২৫ অক্টোবর বোয়ালিয়া থানার ওই মামলায় তাকে রাজশাহীর মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে নেয়া হয়। ওই দিনই তাকে আদালত জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন। শনিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানানো হয়েছে। রোববার রিমাণ্ড শুনানি হবার কথা রয়েছে।