বরিশালে শিবির অভিযুক্ত,দণ্ডিত প্রতারক পরিবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজে!
- আপডেট সময় : ১০:২৬:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৩৭ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিবেদক; বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় দণ্ডিত প্রতারক ও শিবির অভিযুক্ত সহোদর, ও তাদের এক ভাইয়ের স্ত্রী দিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজ সম্পন্ন। বারবার অভিযোগ করেও আটকানো সম্ভব হয়নি তাদের। জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে বাংলাদেশের “সন্ত্রাসী ও ষড়যন্ত্রকারী ” হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সুপরিচিত। অথচ সেই জামায়াত পরিবারের দুই প্রতারক পুত্র ও পুত্রবধূ দুর্নীতি ও অনিয়ম করে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা। এরা হলেন রমজানুল মোর্শেদ , রিয়াজুল সালেহীন ও স্ত্রী মোসাম্মৎ মৌ।
“সাংবাদিকের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরির সময় জরিমানা “শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে তাতে বলা হয়,২৫ডিসেম্বর,২০১৮ আসন্ন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে আবেদন করতে সাংবাদিকের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরির সময় দুই ভাইকে আটক করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কের একটি কম্পিউটারের দোকানে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করা হয়।আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বশির গাজীর নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা ঝালকাঠি থানার এসআই মো. আবু হানিফ জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সিকদার কম্পিউটার নামের একটি দোকানে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় দোকানের একটি কম্পিউটারে সাংবাদিকের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করছিলেন ছোটভাই রিয়াজুল সালেহীন ও তাঁর বড় ভাই রমজানুল মোর্শেদ। এ কার্ড ব্যবহার করে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে আবেদন করা হতো ” অথচ সেই দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ভাই ভোটার হালনাগাদ ২০১৯ এর একাধিক পদে অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূতভাবে চাকুরী করে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন কে সাংবাদিকরা অভিযোগ করলে তিনিও অনিয়মের কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনাটিকে “ততটা স্পর্শকাতর নাও হতে পারে ” বলে চালিয়ে দেন এবং একটা ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। অথচ, অবৈধভাবে একাধিকপদে চাকুরী করা ও নিয়মবহির্ভূত অবৈধ কাজের বিলও এখন পাস হবার পথে। রমজানুল মোর্শেদ ও রিয়াজুল সালেহীনের বিষয়ে অনুসন্ধান করে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা রিতীমত হিমসিম খাবার উপক্রম। এই দুই আপন ভাইয়ের বাবা জয়নাল আবেদিন জামায়াতের একজন রোকন ছিলেন তার নিজ্ব এলাকার এমনটাই তথ্য দিয়েছে একালাবাসী । রমজান অপারেটর, প্রুফ রিডার, টিম লিডার ছিলেন ঝালকাঠি জেলার ভোটার তালিকা হালনাগাদ ২০১৯ এর। এরমধ্যে অপারেটর ছিলেন ঝালকাঠিতে, প্রুফ রিডার কাঠালিয়া, টিম লিডার রাজাপুরে। অথচ নিয়মানুযায়ী, একজন ব্যাক্তি একটাই পদে চাকুরী করতে পারবেন। আরেক ভাই রিয়াজুল সালেহীন টেকনিক্যাল সাপোর্টার ছিলেন। উক্ত পদের জন্য আবেদন করলেও পরিক্ষা না দিয়ে (অভিযোগ অনুযায়ী) চাকুরী পান। ঝালকাঠি ছিলেন টিম লিডার ও টেকনিক্যাল সাপোর্টার। আবার কাঠালিয়াতেও একইভাবে ওই পদেই ছিলেন। রিয়াজুলের স্ত্রী মৌ ছিলেন স্মার্ট কার্ড বিতরণকারী। এদের নিয়োগ হয় ঝালকাঠি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (সাবেক) মো.ছামাদ এর আমলে। এ অনিয়ম ও অবৈধ কার্যক্রম হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় বর্তমান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অহিদ্দুজ্জামান এর কাছে। অথচ বিষয়টি তেমন গুরত্ব না দিয়েই তিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শারমিন আফরোজকে শুধু মৌখিক নির্দেশ দেন এসব বন্ধ করতে। ঝালকাঠি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শারমিন আফরোজ এসব বিষয় কর্নপাত না করে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ অনিয়মকেই নিয়ম হিসেবে চালিয়েছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ আরও রয়েছে, শারমিন আফরোজ এ ঘটনাকে ইস্যু করে উক্ত দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যাক্তিদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে কোন শক্ত প্রমাণ দিতে পারেনি সূত্র। এ ছাড়াও ভোটার তালিকা হালনাগাদ এর কাজের বিভিন্ন ফি নিতে একটি ভূয়া এটিএম বুথ তথা একজন ভূয়া ব্যাংক কর্মকর্তাকে বসিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়েও গণধোলাইয়ের পর কোনমতে পার পেয়ে রক্ষা পায় এই সহোদর ও সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন ” আমি বিষয়টি নিয়ে ততটা উদ্বীগ্ন হবার মত তেমন কিছু দেখিনি। আর এভাবে চিন্তা করিনি। তবে, একাধিক পদে চাকুরী নিয়মবহির্ভূত। এবং এদের পরিচয় জেনে শুনে নিয়োগ নেয়া হয়েছে কিনা অথবা, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন অনিয়ম হয়েছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তা জানেন। একাধিক পদের চাকুরীর খবর না জানলেও কিছু অনিয়মের কথা শুনেছি। আমি সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিলাম আপনাদের মৌখিক অভিযোগের পর, তবে কোন লিখিত নোটিশ বা ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি।”
বর্তমান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অহেদ-উজ্জামান (ঝালকাঠি) জানান ” নিয়োগ থেকে সব বিষয়ই সাবেক জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও শারমিন আফরোজ জড়িত। এবং সংশ্লিষ্ট অভিযোগের বিষয় তারাই জানেন। তবে আমি এ অনিয়ম ও দুর্নীতি হাতেনাতে ধরেছিলাম ও ব্যাবস্থা নিতে বলেছিলাম। তারপর আর কোন অগ্রগতি জানিনা। ”
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শারমিন আফরোজ বলেন ” এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে রাজি নই ”
অভিযুক্তদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।