ইসমাইল হোসেন টিটু:
আলাউদ্দিন (১২) মানব পাচার মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এখানে সেখানে । কক্সবাজার, রামু, চাকমারপুল এলাকার মৃত ইলিয়াসের দ্বিতীয় ঘরের রিজিয়া বেগমের সন্তান আলাউদ্দিন । রিজিয়া বেগমের সাত ছেলেমেয়ে মধ্যে আলাউদ্দিন চতুর্থ সন্তান।
আলাউদ্দিনের মা রাজিয়া বেগম বাসা বাড়িতে কাজ করেন। ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছুই তাদের। তার বাবার দুই বিয়ে করেন , প্রথম ঘরের স্ত্রীর বড় ছেলেদের সাথে শত্রুতার জের ধরে তাকে এই ভয়ঙ্কর মানব পাচার মামলার আসামি করা হয় ২০১৮ সালে। আলাউদ্দিন মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র ।
রিজিয়া বেগম জানান, আমি বাসাবাড়িতে কাজ করি ঠিকমতো এক একবেলা ভাত নিজে না খেয়ে তাদের খাওয়াই । মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে ওদের পড়ালেখা খরচ যোগাতে পারছিনা। ছেলে মেয়েরা যখন খায় তখন আমি পেটে কাপড় বেঁধে রাখি যাতে আমার পেট উঁচু থাকে এবং ছেলে মেয়েরা বুঝতে পারে যে আমিও খেয়েছি।
কান্না করতে করতে তিনি বলেন এত কষ্ট করি ছেলে মেয়েদেরকে মানুষ করার জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধে করে যাচ্ছি ।এর মধ্যে সম্পত্তির লোভে আমার এই নিষ্পাপ ছেলেটিকে বয়স বাড়িয়ে মানব পাচার মামলা দিয়ে জীবন শেষ করে দিয়েছে । কি অপরাধ করেছিলাম আমরা?? কি অপরাধ ছিল আমার এই ছেলের । সে তো স্কুলে যাওয়ার কথা, খেলাধুলা করার কথা আজ সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এখানে সেখানে। আজ এই আত্মীয় বাসায় কাল ঐ আত্মীয়ের বাসায় এভাবে প্রতিদিন এখানে-সেখানে মামলা কাঁধে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
তিনি আরো বলেন ছেলেটির মামলা খরচ চালানোর মত টাকা আমার হাতে নেই। আমি আর পারছিনা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, কথা বলছে আর কান্না করছে । সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় নেই তিনি জানান।
রিজিয়া বেগমের সতীনের ছেলে রফিক জানান হারুন নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে এ মামলা করা হয়েছে।
কে হারুন একাধিকবার জানতে চাইলে তিনি বলেন যাদের নির্দেশে মামলা করা হয়েছে কোন অবস্থাতে তাদের নাম বললে আমার ভয়ঙ্কর বিপদ হতে পারে।
গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার কারণে ১৫ ই অক্টোবর রিজিয়া বেগমের খুপড়ি ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে তার সতীনের ছেলেরা।।। আসবাবপত্র, কাপড় চোপড় থালাবাসন লুটের পাশাপাশি ভাঙ্গচুর করেছে বলে অভিযোগ রিজিয়ার।
রিজিয়া বেগম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে আকুল আবেদন করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি মা, আমিও মা আমি ন্যায়বিচার চাই আমার এই নিষ্পাপ শিশুটিকে আপনি বাঁচান । এই মামলাবাজ প্রতারক চক্র থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন ।