জেলা প্রতিনিধি;
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারিতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মালিকানাধীন খাদ্যগুদাম থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (১০ টাকা কেজির চাল) ১৩১ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম পুলিশ ফোর্স নিয়ে গুনারিতলা ইউনিয়নের বালাভরাট এলাকা থেকে এই চাল উদ্ধার করা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুনারিতলা ইউনিয়নে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ১০ টাকা কেজি দরের চাল অতিদরিদ্রদের মাঝে বিক্রি না করে কালোবাজারে বিক্রির প্রক্রিয়া করছিলেন ডিলার ও আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম জুয়েল। তিনি ও তার শ্রমিকরা মঙ্গলবার সারাদিন ইউনিয়নের স্থানীয় বালাভরাট মোড়ে গুদামের ভেতরে ৩০ কেজি ওজনের বস্তা খুলে সেই চাল প্রতিটি ৫০ কেজি ওজনের বস্তায় ভরেন। এরপর সন্ধ্যার দিকে কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশে গুদাম থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম পুলিশ নিয়ে ওই গুদামে হানা দেন।
এ সময় গুদামের বাইরে ছোট একটি ট্রাকে ওঠানো ৫০ কেজি ওজনের ১২১ বস্তা এবং গুদামের ভেতরে ৩০ কেজি ওজনের আরও ১০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। তবে এ অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে ডিলার আমিনুল ইসলাম জুয়েল ও তার গুদামের শ্রমিকরা পালিয়ে যান। ফলে সেখান থেকে কাউকে আটক করা যায়নি।
অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত গুনারিতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন আয়না বলেন, ডিলার আমিনুল ইসলাম জুয়েল ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি না করে সম্পূর্ণ চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশে গুদাম থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এটা প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির চাল। এই চালগুলো গরিবদের জন্য। এ ঘটনায় ডিলারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হবে।
মাদারগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ডিলার আমিনুল ইসলাম জুয়েলের গুদাম থেকে ১৩১ বস্তায় মোট ছয় হাজার ৩৫০ কেজি চাল জব্দ করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। চালগুলো সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রির চাল বলেই প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ডিলার আমিনুল ইসলাম জুয়েলকে আসামি করে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, চাল উদ্ধার করা হলেও পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে আটক করা যায়নি।