নিজস্ব প্রতিবেদক
জি কে শামীমের ১০১ জন মডেল ও নায়িকার তালিকা পেয়েছে গোয়েন্দারা। টেন্ডার বাগাতে এসব সুন্দরী মডেল ও নায়িকাকে কাজে লাগাতেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে এই তালিকার খোঁজ পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরমধ্যে এক ডজনেরও বেশি পরিচিত নায়িকা ও মডেল। টেন্ডার মাফিয়া জি কে শামীম জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, ভিআইপি, বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের কাছে এই মডেলদের তিনি পাঠাতেন। এদিকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া র্যাবের হাতে ১৮ সেপ্টেম্বর আটক হওয়ার পর তারও মোবাইল ফোনে বেশ কিছু নায়িকা ও মডেলের ফোন নম্বর পাওয়া যায়। মোবাইলফোনে এসব নম্বর পাওয়ার খবর প্রকাশের পর থেকে শোবিজ অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। তবে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ নাম প্রকাশ করে কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি। তবে এ নিয়ে শোবিজ পাড়ায় চলছে চাপা গুঞ্জন ও আতঙ্ক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্যান্য তথ্যের পাশাপাশি শোবিজের বেশ কয়েকজন নারী তারকারও তথ্য দিয়েছেন। এদের কেউ কেউ সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। বড় বড় টেন্ডার বাগিয়ে আনতে নানা কৌশল ব্যবহার করেছেন শামীম। বস্তাভর্তি টাকায় কাজ না হলে সুন্দরীদের ফাঁদ পাততেন। এ কারণে তার দরবারে সারাক্ষণ সুন্দরী তরুণীদের আনাগোনা দেখা যেত। নাটক, সিনেমার পরিচিত মুখ, নায়িকা ও মডেলকে মনোরঞ্জন থেকে শুরু করে টেন্ডার বাগিয়ে নিতে ব্যবহার করতেন শামীম। উচ্চপদস্থ বিভিন্ন কর্মকর্তার নিয়মিত আবদার ছিল, শুধু টাকা দিলেই হবে না, চাই উঠতি বয়সের নায়িকার সঙ্গ। কর্মকর্তাদের কাছে দীর্ঘ তালিকা পাঠাতেন শামীম। ছবিসহ সেই তালিকা দেখেই বাছাই করে নিতেন মডেল, নায়িকাদের। একইভাবে প্রভাবশালী নেতাদের খুশি করতেও মডেল, নায়িকাদের পাঠানো হতো ফ্ল্যাটে বা তারকা হোটেলে। হয় একদিনের জন্য কক্সবাজারে, নয়তো দেশের বাইরের কোনো স্থানে নিয়ে যাওয়া হতো তাদের। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের কাছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে জি কে শামীম ও যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। তারা জানান, অনেকেই টাকার সঙ্গে নারীসঙ্গ চাইতো। পাঁচ তারকা হোটেলে কক্ষের ব্যবস্থাও করতে হতো। পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তালিকায় থাকাদের মধ্যে কেউ কেউ লাভ স্টেশন, চিনি বিবি, তুই আমার, তুই আমার রানী, সারাংশে তুমি, ভালোবাসা ডটকম ও রূপ ছবিতে কাজ করেছেন। জি কে শামীমের কথামতো কাজ করার বিনিময়ে অল্প দিনেই নায়িকা থেকে অনেকে প্রযোজক হয়েছেন। মালিক হয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার। হাঁকিয়ে বেড়ান দামি দামি গাড়ি। গুলশান ও বনানীর একটি তারকা হোটেল ও কাকরাইলের একটি হোটেল ব্যবহার করা হতো একান্তে সময় কাটানোর জন্য। টেন্ডার পাওয়ার পর পার্টি দেওয়া হতো। পার্টি হতো দেশে ও বিদেশে। এসব পার্টিতে নিজ দলের নেতা, সরকারি কর্মকর্তা ও সহযোগীরা উপস্থিত থাকতেন। পার্টিতে পশ্চিমা পোশাকে হাজির হতেন সুন্দরীরা। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতেও হয়েছে কয়েকটি পার্টি।