ঢাকা ০৬:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




নেতাকর্মী নিয়ে যুবলীগের কার্যালয়ে সম্রাট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: 
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেফতার হওয়ার পর হাজারখানেক নেতাকর্মী নিয়ে সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থান করছেন সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।

বুধবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে যুবলীগের কার্যালয়ের ভেতর-বাইরে হাজারের বেশি নেতাকর্মী দেখা গেছে। এসময় তারা সম্রাটের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানও দেন।

কার্যালয়ে অবস্থানরত সম্রাট গণমাধ্যমকে বলেন, র‌্যাব খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা সবাই অফিসে ছুটে এসেছে। তারা এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাতে গুলশান ২ নম্বরের ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদের বাসা এবং ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে নিষিদ্ধ ক্যাসিনোতে একযোগে অভিযান চালায় র‌্যাব সদস্যরা। ক্যাসিনোতে মদ আর জুয়ার বিপুল সরঞ্জামের পাশাপাশি প্রায় ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। দুই নারীসহ ১৪২ জনকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।

অপরদিকে গুলশানের বাসা থেকে খালেদকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি, মাদকসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। লাইসেন্সের শর্তভঙ্গের অভিযোগে বাসা থেকে উদ্ধারকৃত দুটি অস্ত্র জব্দ করে র‌্যাব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদা দাবির অভিযোগে সমালোচনার মুখে থাকা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

যুবলীগের কয়েক নেতা সম্পর্কেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা যা ইচ্ছে করে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে। আরেকজন এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেণ, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরও দমন করা হবে।

যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী ওইসব কথা বলেছিলেন বলে জানান অনেক নেতা।

যুবলীগের একটি সূত্র জানায়, গণমাধ্যমে অভিযোগের খবর আসার পরে প্রথম পর্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে শোকজ করা হয়।

যুবলীগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুবলীগের কোনো নেতা বা কোনো শাখার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সংগঠনটি নিজস্ব ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এর তদন্ত ও বিচার করবে। এজন্য যুবলীগ চেয়ারম্যান বা সাধারণ সম্পাদক বরাবর অভিযোগ ও প্রমাণ পাঠাতে বলা হয়েছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে এগুলো চলার পাশাপাশি বুধবার র‌্যাব তার বাসা এবং ক্লাবে অভিযান চালায়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে খবর ছড়িয়ে পড়ে খালেদকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়; কিন্তু তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




নেতাকর্মী নিয়ে যুবলীগের কার্যালয়ে সম্রাট

আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক: 
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেফতার হওয়ার পর হাজারখানেক নেতাকর্মী নিয়ে সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থান করছেন সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।

বুধবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে যুবলীগের কার্যালয়ের ভেতর-বাইরে হাজারের বেশি নেতাকর্মী দেখা গেছে। এসময় তারা সম্রাটের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানও দেন।

কার্যালয়ে অবস্থানরত সম্রাট গণমাধ্যমকে বলেন, র‌্যাব খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা সবাই অফিসে ছুটে এসেছে। তারা এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাতে গুলশান ২ নম্বরের ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদের বাসা এবং ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে নিষিদ্ধ ক্যাসিনোতে একযোগে অভিযান চালায় র‌্যাব সদস্যরা। ক্যাসিনোতে মদ আর জুয়ার বিপুল সরঞ্জামের পাশাপাশি প্রায় ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। দুই নারীসহ ১৪২ জনকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।

অপরদিকে গুলশানের বাসা থেকে খালেদকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি, মাদকসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। লাইসেন্সের শর্তভঙ্গের অভিযোগে বাসা থেকে উদ্ধারকৃত দুটি অস্ত্র জব্দ করে র‌্যাব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদা দাবির অভিযোগে সমালোচনার মুখে থাকা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

যুবলীগের কয়েক নেতা সম্পর্কেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা যা ইচ্ছে করে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে। আরেকজন এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেণ, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরও দমন করা হবে।

যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী ওইসব কথা বলেছিলেন বলে জানান অনেক নেতা।

যুবলীগের একটি সূত্র জানায়, গণমাধ্যমে অভিযোগের খবর আসার পরে প্রথম পর্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে শোকজ করা হয়।

যুবলীগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুবলীগের কোনো নেতা বা কোনো শাখার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সংগঠনটি নিজস্ব ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এর তদন্ত ও বিচার করবে। এজন্য যুবলীগ চেয়ারম্যান বা সাধারণ সম্পাদক বরাবর অভিযোগ ও প্রমাণ পাঠাতে বলা হয়েছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে এগুলো চলার পাশাপাশি বুধবার র‌্যাব তার বাসা এবং ক্লাবে অভিযান চালায়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে খবর ছড়িয়ে পড়ে খালেদকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়; কিন্তু তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।