বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতির রিপোর্ট করায় শিক্ষার্থী বহিষ্কারের অভিযোগ!
- আপডেট সময় : ১০:২৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪৩ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জিনিয়া কে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ বহিষ্কারকে ‘শাসন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন। তিনি বলছেন, সংসার চালাতে শাসন করব, আবার আদর করব- এটাই তো স্বাভাবিক।
জিনিয়াকে বহিষ্কারের কারণ জানাতে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দেয়া লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ফাতেমা তুজ জিনিয়া সম্প্রতি বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করেন। নিউজ পোর্টালগুলো কোনো প্রকার সত্যতা যাচাই না করে এবং প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো তথ্য না নিয়েই এসব সংবাদ পরিবেশন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। ফাতেমা তুজ জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ফেসবুক, ইমেইল আইডি হ্যাক করেছেন বলে অভিযোগ আনেন তিনি।
তিনি দাবি করেন, অন্যায়ভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে অশালীন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক করে এবং ভর্তি পরীক্ষা বানচালের অপচেষ্টাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি হয় এমন নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন জিনিয়া।
এরইমধ্যে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ২ বার হ্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন।
এক প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন, ‘সন্তান তার বাবার সঙ্গে বেয়াদবির ভাষায় কথা বলবে এবং সেই সন্তানের ভাষা পরিবর্তন করতে বাবা সন্তানকে শাসন করবে এটাই স্বাভাবিক। ’
ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে বহিষ্কারের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘স্থায়ীভাবে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করিনি। তবে নানা অপরাধের কারণে শিক্ষার্থীদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছি। ফাতেমা তুজ জিনিয়াকেও তার অপরাধের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করেছি। আমি সংসার চালাতে শাসন করব, আবার আদর করব। এটাই স্বাভাবিক।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নুর উদ্দিন, প্রক্টর মো. আশিকুজ্জামান ভুইয়া উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্যের এসব বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বহিষ্কৃত ফাতেমা তুজ জিনিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জেনেছি। কিন্তু এখন নানা মিথ্যা-বানোয়াট প্রসঙ্গ যোগ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী? এ বিষয়ে সবার মতামত জানতে চেয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন ফাতেমা তুজ জিনিয়া। তার এই পোস্টের পরই নানা নেতিবাচক মন্তব্য এসে জমে। এছাড়া ম্যাসেঞ্জারে সালমান নামে এক বন্ধুর সঙ্গে চ্যাটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করায় উপাচার্যের রোষানলে পড়েন জিনিয়া। এরই প্রেক্ষিতে জিনিয়াকে সাময়িক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জানা গেছে, ফাতেমা তুজ জিনিয়া একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকের বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করেন বলেই উপাচার্য তাকে বহিষ্কার করেছেন বলে দাবি ফাতেমা তুজ জিনিয়ার।