ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




যেভাবে বুঝবেন সন্তান গ্যাং কালচারে জড়িত, কী করবেন?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫০ বার পড়া হয়েছে

সম্প্রতি রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় কিশোর গ্যাংয়ের কারণে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মারধর, চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মাদক ব্যবসা, মেয়েদের উত্যক্ত করার মতো অভিযোগও রয়েছে এসব গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে।

গত কয়েকদিন ঢাকা চট্টগ্রাম মিলিয়ে সারা দেশে এরকম কিশোর গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ১০০ কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।

এ বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, কিশোর গ্যাং কালচার যেন গড়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ সুপারদের তৎপর থাকার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাং কালচারে জড়িত কিশোরদের মধ্যে নামীদামী স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিজাত ও শিক্ষিত পরিবারের সন্তানদের সংখ্যা বেশি।তবে এইসব কিশোরদের ব্যাপারে অভিভাবকদের কোন ধারণাই ছিল না।

কেন গ্যাং সংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা?

পুলিশ ও সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতা, অ্যাডভেঞ্চার বা ক্ষমতা দেখানোর লোভ, মাদক, বন্ধুদের পাল্লা পড়াসহ নানা কারণে কিশোর গ্যাং গুলো তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমান বলছেন, ব্যস্ততার কারণে অনেক বাবা-মা সন্তানদের ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না।সন্তান কি করছেন, কোথায় যাচ্ছে, কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে এসব বিষয়ে তারা খোঁজ রাখেন না।

তিনি বলেন, বাবা-মা সময় না দেয়ার কারণে তারা বেশি সময় কাটাচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে। সেখানে তারা একই ধরণের মানসিকতা খুঁজে পায়, সাপোর্ট পায়। এভাবেই তাদের ছোট ছোট গ্যাং দল তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় দেখা যায় এসব কিশোরেরা মাদক সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে রাজনৈতিক বড়ভাইদের আশ্রয়ে থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে গ্যাং দল তৈরি করে। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত হয়ে পড়ে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান গ্যাং কালচারে জড়িত-

আসুন জেনে নেই যেভাবে বুঝবেন সন্তান গ্যাং কালচারে জড়িত-

১. সন্তানের চলাফেরা, আচরণের দিকে খেয়াল করুন। অস্বাভাবিক আচরণ করলে খোঁজ নিন সে কোন গ্যাং বা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে কিনা।

২. সন্তান সময়মতো বাসায় ফিরছে না। ঠিকমতো খাচ্ছে না বা ঘুমাচ্ছে না। হয়তো বাসায় ফিরে নিজের ভেতর গুটিয়ে থাকছে।

৩. কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত টাকা দাবি করছে। বাসায় বন্ধুদের নিয়ে বেশি আড্ডা দিচ্ছে।

৪. খেয়াল করুন সন্তানের কাপড়চোপড়ের ধরণ পাল্টে যাচ্ছে কি না।এছাড়া হাতে বা কানে নানা ধরণের অলংকার ব্যবহার শুরু করেছে।

৫. সন্তান বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছে কি না খেয়াল করুন।

কী করবেন?

কিশোরদের গ্যাংয়ে জড়িত হওয়া ঠেকাতে অভিভাবকরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা।

১. সন্তানকে সময় দিতে হবে। তাদের সঙ্গে আস্থার, বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।

২. সন্তানের স্কুলে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা, কাদের সঙ্গে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে, সেটা নিয়মিতভাবে নজরে রাখা উচিত।

৩. এছাড়া সন্তানদের হাতখরচ দেয়ার ব্যাপারেও সতর্ক থাকা উচিত, যেন সেটা অতিরিক্ত না হয়।

৪. সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে হবে। তাকে বকাঝকা নয়, বরং তার কথা শুনতে হবে।

৫. সন্তান যদি কোনো গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ে তবে স্কুল-কলেজ বদলে ফেলা ভালো। সেক্ষেত্রে সন্তানের জন্য সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




যেভাবে বুঝবেন সন্তান গ্যাং কালচারে জড়িত, কী করবেন?

আপডেট সময় : ০৯:১৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সম্প্রতি রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় কিশোর গ্যাংয়ের কারণে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মারধর, চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মাদক ব্যবসা, মেয়েদের উত্যক্ত করার মতো অভিযোগও রয়েছে এসব গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে।

গত কয়েকদিন ঢাকা চট্টগ্রাম মিলিয়ে সারা দেশে এরকম কিশোর গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ১০০ কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।

এ বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, কিশোর গ্যাং কালচার যেন গড়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ সুপারদের তৎপর থাকার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাং কালচারে জড়িত কিশোরদের মধ্যে নামীদামী স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিজাত ও শিক্ষিত পরিবারের সন্তানদের সংখ্যা বেশি।তবে এইসব কিশোরদের ব্যাপারে অভিভাবকদের কোন ধারণাই ছিল না।

কেন গ্যাং সংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা?

পুলিশ ও সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতা, অ্যাডভেঞ্চার বা ক্ষমতা দেখানোর লোভ, মাদক, বন্ধুদের পাল্লা পড়াসহ নানা কারণে কিশোর গ্যাং গুলো তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমান বলছেন, ব্যস্ততার কারণে অনেক বাবা-মা সন্তানদের ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না।সন্তান কি করছেন, কোথায় যাচ্ছে, কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে এসব বিষয়ে তারা খোঁজ রাখেন না।

তিনি বলেন, বাবা-মা সময় না দেয়ার কারণে তারা বেশি সময় কাটাচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে। সেখানে তারা একই ধরণের মানসিকতা খুঁজে পায়, সাপোর্ট পায়। এভাবেই তাদের ছোট ছোট গ্যাং দল তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় দেখা যায় এসব কিশোরেরা মাদক সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে রাজনৈতিক বড়ভাইদের আশ্রয়ে থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে গ্যাং দল তৈরি করে। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত হয়ে পড়ে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান গ্যাং কালচারে জড়িত-

আসুন জেনে নেই যেভাবে বুঝবেন সন্তান গ্যাং কালচারে জড়িত-

১. সন্তানের চলাফেরা, আচরণের দিকে খেয়াল করুন। অস্বাভাবিক আচরণ করলে খোঁজ নিন সে কোন গ্যাং বা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে কিনা।

২. সন্তান সময়মতো বাসায় ফিরছে না। ঠিকমতো খাচ্ছে না বা ঘুমাচ্ছে না। হয়তো বাসায় ফিরে নিজের ভেতর গুটিয়ে থাকছে।

৩. কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত টাকা দাবি করছে। বাসায় বন্ধুদের নিয়ে বেশি আড্ডা দিচ্ছে।

৪. খেয়াল করুন সন্তানের কাপড়চোপড়ের ধরণ পাল্টে যাচ্ছে কি না।এছাড়া হাতে বা কানে নানা ধরণের অলংকার ব্যবহার শুরু করেছে।

৫. সন্তান বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছে কি না খেয়াল করুন।

কী করবেন?

কিশোরদের গ্যাংয়ে জড়িত হওয়া ঠেকাতে অভিভাবকরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা।

১. সন্তানকে সময় দিতে হবে। তাদের সঙ্গে আস্থার, বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।

২. সন্তানের স্কুলে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা, কাদের সঙ্গে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে, সেটা নিয়মিতভাবে নজরে রাখা উচিত।

৩. এছাড়া সন্তানদের হাতখরচ দেয়ার ব্যাপারেও সতর্ক থাকা উচিত, যেন সেটা অতিরিক্ত না হয়।

৪. সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে হবে। তাকে বকাঝকা নয়, বরং তার কথা শুনতে হবে।

৫. সন্তান যদি কোনো গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ে তবে স্কুল-কলেজ বদলে ফেলা ভালো। সেক্ষেত্রে সন্তানের জন্য সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে।