ঢাকা ০১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




শেষ মুহূর্তে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ভারতের চন্দ্রযান ২

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১১৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগেই চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে প্রথম দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় ছিল ভারত। তবে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ৫৫ মিনিটে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও মিশন সফল হওয়ার কোনো বার্তা আসেনি।

সে সময় কন্ট্রোল রুমে বসে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাকে পুরো পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিজ্ঞানীদের বলেন, এটা জীবনের উত্থান ও পতন। এটা কম কৃতিত্ব নয়। আমি আপনাদের অভিন্দন জানাই। আপনারা সবাই দেশ, বিজ্ঞান ও মানুষের জন্য দারুণ কাজ করেছেন। সব প্রচেষ্টাতেই আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলুন।

এর আগে রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যবর্তী সময়ে অবতরণের আগে মূল অরবিট থেকে আলাদা হয়ে যায় ল্যান্ডার বিক্রম। তারপর বেশ কয়েকটি ধাপ পাড়ি দেয় এটি। শেষের কিছুক্ষণ সময়কে ‘আতঙ্কের ১৫ মিনিট’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে ইসরো। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায়ই এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ইসরোর প্রধান কৈলাসাভাদিভো শিবান বলেন, বিক্রম ল্যান্ডার ছিল পরিকল্পিত এবং ২.১ কিলোমিটার পর্যন্ত স্বাভাবিক লাগছিল। পরবর্তীতে পৃষ্ঠের সঙ্গে ল্যান্ডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ বিষয়ে তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। চন্দ্রযান-২ কে ইসরোর করা সব অভিযানের মধ্যে সবচেয়ে জটিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

পরিকল্পনা মাফিক যদি সব কিছু এগিয়ে যেত, তাহলে সকাল সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে বেরিয়ে পড়ত রোভার। ১৪ দিন সময়ের মধ্যে চাঁদের সম্পদের খোঁজ করা, পানির সন্ধান করা এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ছবি সংগ্রহের কাজ করত রোভার।

যে এলাকায় বিক্রমের অবতরণের কথা ছিল, সেখানে এখনও পর্যন্ত কোনও যান নামেনি। এর আগে যেগুলো চাঁদে গিয়েছে সেগুলো হয় উত্তারাংশে নাহলে নিরক্ষীয় অঞ্চলে।

উত্তরাংশে চীন অনেক আগে একটি মিশন চালিয়েছে, পরে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রেে চন্দ্রযানের মধ্যে এপোলোও ছিল চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলে। চাঁদের অন্ধকার অংশে চীনের একটি রোভার রয়েছে।

চাঁদে ধীরে ধীরে অবতরণের ক্ষেত্রে চতুর্থ দেশ হিসেবে উঠে আসতে পারত ভারত। তার আগে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীন। গত ২৩ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রযান-২। দ্বিতীবারের চেষ্টায় এক মিনিটের মধ্যে সেটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়। তার এক সপ্তাহ আগে অবতরণের ৫৬ মিনিটের মাথায় প্রথমবারের উৎক্ষেপণ বাতিল হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




শেষ মুহূর্তে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ভারতের চন্দ্রযান ২

আপডেট সময় : ০৯:৩৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগেই চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে প্রথম দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় ছিল ভারত। তবে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ৫৫ মিনিটে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও মিশন সফল হওয়ার কোনো বার্তা আসেনি।

সে সময় কন্ট্রোল রুমে বসে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাকে পুরো পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিজ্ঞানীদের বলেন, এটা জীবনের উত্থান ও পতন। এটা কম কৃতিত্ব নয়। আমি আপনাদের অভিন্দন জানাই। আপনারা সবাই দেশ, বিজ্ঞান ও মানুষের জন্য দারুণ কাজ করেছেন। সব প্রচেষ্টাতেই আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলুন।

এর আগে রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যবর্তী সময়ে অবতরণের আগে মূল অরবিট থেকে আলাদা হয়ে যায় ল্যান্ডার বিক্রম। তারপর বেশ কয়েকটি ধাপ পাড়ি দেয় এটি। শেষের কিছুক্ষণ সময়কে ‘আতঙ্কের ১৫ মিনিট’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে ইসরো। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায়ই এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ইসরোর প্রধান কৈলাসাভাদিভো শিবান বলেন, বিক্রম ল্যান্ডার ছিল পরিকল্পিত এবং ২.১ কিলোমিটার পর্যন্ত স্বাভাবিক লাগছিল। পরবর্তীতে পৃষ্ঠের সঙ্গে ল্যান্ডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ বিষয়ে তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। চন্দ্রযান-২ কে ইসরোর করা সব অভিযানের মধ্যে সবচেয়ে জটিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

পরিকল্পনা মাফিক যদি সব কিছু এগিয়ে যেত, তাহলে সকাল সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে বেরিয়ে পড়ত রোভার। ১৪ দিন সময়ের মধ্যে চাঁদের সম্পদের খোঁজ করা, পানির সন্ধান করা এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ছবি সংগ্রহের কাজ করত রোভার।

যে এলাকায় বিক্রমের অবতরণের কথা ছিল, সেখানে এখনও পর্যন্ত কোনও যান নামেনি। এর আগে যেগুলো চাঁদে গিয়েছে সেগুলো হয় উত্তারাংশে নাহলে নিরক্ষীয় অঞ্চলে।

উত্তরাংশে চীন অনেক আগে একটি মিশন চালিয়েছে, পরে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রেে চন্দ্রযানের মধ্যে এপোলোও ছিল চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলে। চাঁদের অন্ধকার অংশে চীনের একটি রোভার রয়েছে।

চাঁদে ধীরে ধীরে অবতরণের ক্ষেত্রে চতুর্থ দেশ হিসেবে উঠে আসতে পারত ভারত। তার আগে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীন। গত ২৩ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রযান-২। দ্বিতীবারের চেষ্টায় এক মিনিটের মধ্যে সেটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়। তার এক সপ্তাহ আগে অবতরণের ৫৬ মিনিটের মাথায় প্রথমবারের উৎক্ষেপণ বাতিল হয়।