নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কোন পত্রিকায় আছেন তা নিজেও নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেন না। তবুও তিনি পরিচয় দেন সাংবাদিক। সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহারা খাতুনের ঘনিষ্ঠজন। কাজই হলো বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করা। তার নাম নাদিরা। তিনি উত্তরার ভয়ংকর সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত।
সোমবার দুপুরে হঠাৎ একটি কোম্পানিতে তার আগমন। সাথে কয়েকজন আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী। ওই অফিসে গিয়েই নাম পরিচয় না দিয়ে শুরু করেন ভিডিও ধারন ফেসবুক লাইভ ও ছবি তুলা। তাও মোবাইল ফোনে। ওই অফিসের কর্নধার উপস্থিত না থাকায় অফিসের স্টাফদের সাথে অশ্লীল উচ্চ বাক্য শুরু করেন এই নারী। নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন আপা (প্রধানমন্ত্রী) তার সম্পর্কে জানে! সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহারা খাতুন তার কথায় ওঠাবসা করেন। এই নারীর কথা শুনে এ প্রতিবেদক সহ অফিসের অন্য স্টাফের মাথায় চরক! এ যেনো এক ক্ষমতাসীন নারী আগমন। এই নারীকে কি খাওয়ালে খুশি হবে তার চিন্তায় সকল স্টাফের দৌড়ঝাঁপ! এতক্ষণ যে নারীর কথা বললাম তিনি আর কেউ নন, উত্তরা এলাকার শক্তিশালী চাঁদাবাজ ও ব্লাকমেইল কারীদের মূলহোতা। নাম তার নাদিরা।
ঘটনা উত্তরা বারো নাম্বার সেক্টর। হঠাৎ অফিসের মালিক হাজির। এর আগে তাদের আতঙ্কে চা নাস্তা করিয়ে বসিয়ে রাখেন অফিস স্টাফরা। স্টাফদের ধারনা এই ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা যেনো কোন ধরনের কষ্ট না পান। ঠিক তাদের মন রক্ষা করতে নাস্তার পানির আয়োজন করেন ভরপুর।
এর মধ্যেই অফিসের মালিকে ডাক পড়লো তার রুমে যেতে। ডাক পেয়েই মালিকের রুমে ঢুকলেন ওই নারী সাংবাদিক ও একজন ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা। অফিসে গিয়েই শুরু করলেন উচ্চস্বরে বাকবিতন্ডা। কোম্পানির কর্ণধার তো কিছু বুঝতে না পেরেই অবাক। পরে অবশ্য স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামীলীগের নেতার মধ্যস্থতায় মিমাংসা হয়। পরে উক্ত ভুয়া সাংবাদিক নাদিরা ঘটনাস্থল থেকে বের হতে হতে বলেন টেলিভিশনের সাংবাদিক সহ আরো অনেক অখ্যাতনামা পত্রিকায় তিনি বিশাল সাংবাদিক। যার নাম এই প্রথম শুনলেন যারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলে। অনেকক্ষণ হৈচৈ করে বের হয়ে যান। বের হতেই তার মুখে শোনায় যায়, প্রধানমন্ত্রী সহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে তাদের সম্পর্ক অনেক গভীর।
তবে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, তার একটি সিন্ডিকেটে রয়েছে কয়েকজন তথাকথিত সাংবাদিক নামধারী অল্প বয়স্ক মাস্তান টাইপের ছেলে। তার সাথে স্থানীয় ওয়ার্ড পর্যায়ের কিছু ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরাও সঙ্গী হিসেবে রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। এদের দৌরাত্ম্য উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত। মানুষের টাকা আদায়ের নামে বড় বড় কোম্পানির অফিসে গিয়ে হানা দেওয়া ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি আসল কর্ম এই অশিক্ষিত ভুয়া সাংবাদিক নাদিরার। এর আগে বিভিন্ন ওষুধের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেট সেজে অর্থকুঁড়ি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এই নাদিরা গ্রুপের বিরুদ্ধে । তাদের টার্গেট নামি-দামি উচ্চবিত্ত মানুষ। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে এই নাদিরার চরিত্রের কোনো ছাল নেই তিনি অসংখ্য পুরুষে আসক্ত। এর আগে পতিতা হিসেবে তার পরিচিতি ছিলো উত্তরা সহ রাজধানীর বিভিন্ন মানুষের মাঝে।
ভুয়া সাংবাদিক নাদিরা সহ তার সকল সঙ্গী সাথীদের অপকর্মের অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত আসছে আগামী পর্বে।