আন্তর্জাতিক ডেস্ক;
রেল স্টেশনে মায়ের পাশে গভীর ঘুমে মগ্ন ছিল তিন বছরের মেয়ে শিশুটি। এ সময় এক যুবক এসে শিশুটিকে মায়ের পাশ থেকে তুলে নিজের কোলে নেয়। তখনও ওই যুবকের কোলে গভীর ঘুমে শিশুটি। কিন্তু এই গভীর ঘুম থেকে এক নির্মম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চিরঘুমে যেতে হবে, তা হয়তো শিশুটি টেরও পায়নি।
ওই যুবকের সঙ্গে আরো দুই সঙ্গী ছিল। শিশুটিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে যাওয়ার পর গণধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। নির্মমতার শেষ এখানেই নয়, গণধর্ষণের পর তিন বছরের এই শিশুর শরীর থেকে মাথা আলাদা করে তারা।
এই নির্মম ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ভারতের ঝাড়খণ্ড প্রদেশে। ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঘুমন্ত শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর শিরশ্ছেদের ঘটনায় রাজ্যে ব্যাপক তোলপার শুরু হয়।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। সন্দেহভাজন এই তিন ধর্ষকের একজন হলেন রিঙ্কু সাহা; যিনি ২০১৫ সালে একটি শিশুকে অপহরণের পর হত্যা চেষ্টার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ছিলেন। সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
গ্রেফতার রিঙ্কু এবং তার বন্ধু কৈলাস পুলিশকে বলেছেন, তারা শিশুটিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সারাদিন গণধর্ষণ করেছেন। অনবরত কান্না করায় শিশুটিকে গলা টিপে হত্যা করেন তারা।
মঙ্গলবার জামশেদপুর রেলস্টেশন থেকে চার কিলোমিটার দূরে একটি ময়লার ভাগাড়ের কাছে প্ল্যাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। কিন্তু শরীরের সঙ্গে ছিল না মাথা। শিশুটির মাথা এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
গত শুক্রবার জামশেদপুরের টাটানগর রেলস্টেশনে মায়ের পাশে ঘুমাচ্ছিল শিশুটি। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। রেলস্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হাফ প্যান্ট ও টি-শার্ট পরিহিত এক যুবক রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের পাশে ঘুমিয়ে থাকা শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। এই যুবক রিঙ্কু সাহা ছিলেন বলে ধারণা পুলিশের।
এর কয়েক ঘণ্টা পর শিশুটির মা থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি সন্দেহভাজন হিসেবে তার জীবনসঙ্গীর কথা পুলিশকে জানান। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় তার স্বামীর বাসা। কিছুদিন আগে তাকে তালাক দিয়ে জামশেদপুরে আসেন এই নারী।
এই রেলওয়ে স্টেশন থেকে মনু মন্ডল নামের এক ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটিকে স্টেশন থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যার সঙ্গে মনুও জড়িত।
প্রধান সন্দেহভাজনকে ধরতে সিসিটিভি ফুটেজের সহায়তা নিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। রিঙ্কু সাহা সাংবাদিকদের বলেন,আমি শুধুমাত্র শিশুটিকে তুলে নিয়ে গিয়েছি। এটা আমার ভুল হয়েছে। আমি পড়ে গিয়েছিলাম এবং ভয় পেয়েছিলাম।
রিঙ্কু সাহার মা একজন পুলিশ সদস্য। এর আগেও একই ধরনের অপরাধের দায়ে কারাদণ্ড ভোগ করেছেন তিনি। তিন সন্তানের বাবা এই সাহা এর আগে অনেক শিশুকে অপহরণ এবং যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জামশেদপুর টাটানগর রেলস্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এহতেশাম ওয়াকুয়ারিব বলেন, শিশুটির মাথা খুঁজে বের করার জন্য স্নাইফার ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশুটির মরদেহের ক্ষত দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে।