নিজস্ব প্রতিবেদক;
বাদ পড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে রাজপথে টানা ৩৪ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গত ১৮ দিন ধরে আমরণ অনশনে আছেন তারা। আন্দোলনে দুই শতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন শিক্ষক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
জাতীয়করণের দাবিতে টানা ৩৪ দিন ধরে রাস্তায় বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় দিনরাত কাটছে। বৃষ্টি এলে ভিজে যাচ্ছেন, সেই ভেজা কাপড়েই থাকতে হচ্ছে। তার ওপরে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব। সবমিলিয়ে এমন পরিবেশে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অনেকে।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্দোলনে এ পর্যন্ত ২৩৮ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের কারো অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নিজ নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। ডেঙ্গুজ্বরে ৮ ও কলেরা-ডায়রিয়া রোগে ১০ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিরি সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, ‘টানা ৩৪ দিন ধরে আমরা প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার ফুটপাতে বসে আন্দোলন করছি। ডেঙ্গু ও কলেরায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৮ জন। আন্দোলনে আসা ফরিদপুর জেলার মধুখালী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন অসুস্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত মারা গেছেন। পর্যায়ক্রমে আমরা সকলে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। তবুও আমাদের দাবি পূরণে কোনো দৃশ্যমান আশ্বাস পাইনি। দাবি আদায়ে সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য আশ্বাস পেলেই বাড়ি ফিরব।’
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া সারাদেশে প্রায় ৪ হাজার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা গত ৩৪ দিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম পর্যায়ে এসব শিক্ষকরা টানা ১৭ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও গত ১৮ দিন ধরে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক রয়েছেন। তার মধ্যে ১ হাজার ৩০০টির মতো প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য যাচাই-বাছাই করা হলেও তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।