খেলা ডেস্কঃ
কেউ মানুক বা না মানুক, ক্রিকেটে বাংলাদেশের সক্ষমতা বেড়েছে বহুগুণ। সরকার কোটি কোটি ডলার লগ্নি করছে খেলাটির উন্নয়নে। ক্রিকেটের কারণেই বাকিসব খেলাগুলো সরকারের কাছে 'পরের ছেলে' বলেই গণ্য হচ্ছে। বিসিবি এখন বিশ্বের পঞ্চম শক্তিশালী ক্রিকেট বোর্ড। ২০১৭ সালের তথ্যমতে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সম্পদ প্রায় পাঁচ কোটি ১০ লাখ ডলার। প্রতি বছর পরিমাণটা নিশ্চয় বাড়ছে, সেই সাথে হতাশাও তো কম বাড়ছে না। যে হারে অর্থ লগ্নি হচ্ছে বিশ্বকাপের মতো আসরে তো সেই হারে উন্নতি চোখে পড়ছে না। দুই-একজনের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স হয়তো প্রত্যাশার সীমাটা ধরে রাখছে। তবে সামগ্রিকভাবে ব্যর্থই হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
২০১১ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল নবম। ২০১৫ তে সেটা সাতে উঠে আসে। অষ্টম অবস্থানে থেকে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ শেষ করে বাংলাদেশ। উন্নয়নের গ্রাফ যদি এভাবেই থাকে তাহলে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার পক্ষে বাজি ধরাটা বেশ কঠিনই হবে। তার ওপর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে খেলা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে আগামী বিশ্বকাপে নাও পাওয়া যেতে পারে। দলের সিনিয়র কয়েকজনের বয়স তখন ৩৬-৩৭ হয়ে যাবে। নবীন ক্রিকেটাররা গত কয়েক বছর ধরে যে ধরণের পারফর্ম করছেন সেটাও আশাব্যঞ্জক নয়। তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা শুরু না করলে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপেও হয়তো হতাশার গল্পই শুনতে হবে সবাইকে।
২০১১ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বাদে এশিয়ার তিনদলই উঠেছিল সেমিফাইনালে। ফাইনালে ওঠা দুটি দলই ছিল এশিয়ার। ২০২৩ বিশ্বকাপটাও যেহেতু ভারতের মাটিতে হবে তাই বাংলাদেশের এখনই পরিকল্পনা শুরু করে দেওয়া উচিত। নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশকে ফাইনাল বা সেমিফাইনালে না দেখলে হতাশই হবেন সমর্থকরা। এখন খুব বেশি সমালোচনা না উঠলেও তখন কিন্তু কাড়ি কাড়ি লগ্নিকৃত বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
স্টিভ রোডসকে বিদায় করে দেওয়ার পর বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দল কোচ সংকটে ভুগছে। বাংলাদেশের উচিত এমন একজন কোচ নিয়োগ করার যিনি ২০২৩ সাল পর্যন্ত ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকতে পারেন। ঠিক যেমন ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর ভারত ভরসা রেখেছিল গ্যারি কারস্টেনের ওপর। বিসিসিআই ভরসা রেখেছিল বলেই ২০১১ সালে ঘরের মাটিতে ভারতকে ট্রফি জেতাতে সক্ষম হন কারস্টেন। বাংলাদেশেরও তেমনই একটা পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার দরকার।
২০২৩ সাল পর্যন্ত খেলতে পারবেন এমন ২০-২৫ ক্রিকেটারকে লক্ষ্য করেই দলটা গোছানো উচিত। সিনিয়র কয়েকজনকে পরিকল্পনার বাইরে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ২০১১ সালের আগে যেমনটা করেছিল ভারত। সবচেয়ে বড় বিষয়, নিদির্ষ্ট একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোই হবে সুবিবেচকের কাজ।
২০১৯ সালের বিশ্বকাপটা দুই-একজন ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে ভালো গেলেও বাংলাদেশের জন্য ছিল হতাশার। অষ্টম অবস্থানে থেকে আসর শেষ করা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান ও শ্রীলংকাও কাগজে কলমে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। তাই এখন থেকেই পদ্ধতিগতভাবে না এগোলে ২০২৩ সালেও পয়েন্ট টেবিলের অবস্থানটা খুব একটা বদলাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।