সকালের সংবাদে প্রকাশিত সংবাদে চিকিৎসা, নগদ অর্থ ও ঘর পেলেন মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর
- আপডেট সময় : ০৮:৫৭:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০১৯ ১৮০ বার পড়া হয়েছে
মোঃ ইউনুছ ভূঞাঁ সুজন, ফেনী থেকেঃ
গত ২৬ জুন সকলের সংবাদে “বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর পথে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর” শিরোনামে সংবাদ প্রচারের পর সংবাদটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সহ ফেনী জেলা প্রশাসক, জেলা সিভিল সার্জন ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসা’র দৃষ্টিগোচর হয়। তাৎক্ষনিক ভাবে সকলের সহযোগিতায় প্রথমে ফেনী সদর হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরে ফেনী জেলা প্রশাসক ও ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসা’র সহযোগিতায় বীর মুক্তিযুদ্ধা কাজী আজিজুর রহমান ৫০হাজার টাকা, নতুন ঘর সংস্কার’র জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ পাচ্ছেন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে।
প্রতিবেদক মুক্তিযুদ্ধা কাজী আজিজুর রহমানের বিষয়টি জানতে পেরে স্বরজমিনে গিয়ে উক্ত জানতে পারেন প্রায় সু-দীন ধরে অসহায় হতদরিদ্র বীর মুক্তিযুদ্ধা বিনা চিকিৎসা মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ জুন সকলের সংবাদের ফেনী প্রতিনিধি ইউনুছ ভূঁইয়া সুজনের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। “বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর পথে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর” শিরোনামে সংবাদ প্রচারের পর সংবাদটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সহ ফেনী জেলা প্রশাসক, জেলা সিভিল সার্জন ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসা’র দৃষ্টিগোচর হয় তাৎক্ষনিক ভাবে সকলের সহযোগিতায় প্রথমে ফেনী সদর হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর গত শনিবার ঢাকা থেকে বাড়ীতে নিয়ে আসে। শারিরীক অবস্থা কিছুটা উন্নত হলেও শরিরীলের ফিচনের অংশে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
ওই সংবাদ প্রকাশের পরই ফেনী জেলা প্রশাসক’র কার্যালয় থেকে সহযোগিতার দেওয়া হবে বলে মুক্তিযুদ্ধা পরিবার জানায়। এরই দারাবাহিকতায় গত ০৭-০৭-২০১৯ রবিবার উক্ত প্রতিবেদক সহ মুক্তিযুদ্ধা পরিবার কে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়া হলে ৫০হাজার টাকা এবং নতুন ঘর সংস্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরনের ব্যবস্থা করে দিবেন মর্মে জানান।
এসময় ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওহেদুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধা পরিবারের ৫ছেলে এবং ৩মেয়ে সহ সর্বমোট ১০জন সদস্যের সংসারের খোজ খবর নেন। জরাজীর্ণ ঘর মেরামত করার জন্য ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসা’র কাছে আবেদন করতে বলেন। তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন করার ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধাদের বিশেষ অবদানের কথা ব্যক্ত করেন। এদিকে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন মুক্তিযুদ্ধা পরিবার কে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।
উলেখ্য, ফেনীর ফুলগাজী দক্ষিন করইয়া হতদরিদ্র গরীব বীর মুক্তি যুদ্ধা কাজী আজিজুুর রহমান(৬৬)। গত ২বছর থেকে বিনা চিকিৎসা মৃত্যুর পথযাত্রি প্রায় দেখার কেউ নেই। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বিষায়ক সাময়িক সনদপত্র নাম্বার ম-৪৯৩৪,মুক্তীযুদ্ধা সম্মানী ভাতা বহি নাম্বার-১০৪, রাষ্টীয় যে সম্মানী ভাতা পায় তা দিয়ে পরিবারের ৫ছেলে ও ৩মেয়ে কে নিয়ে অনেক কষ্টে চলে তাঁর জীবন এমন্তবস্থায় তাঁর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা তাঁর পরিবারের জন্য কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে।
এবিষয়ে সকালের সংবাদের ফেনী প্রতিনিধি ইউনুছ বলেন- স্বাধীনতার প্রায় ৪৯বছর পরও যদি বিনা চিকিৎসায় একজন হতদরিদ্র বীর মুক্তীযুদ্ধা মারা যাবে এটা কোন ভাবে আমি সাংবাদিক হিসাবে বুকের ভিতর কষ্ট চাপিয়ে প্রতিবেদন করতে যেমন কষ্ট হচ্ছে তেমনী ফেনীবাসী নয় পুরো বাংলাদেশের জন্য লজ্জা জনক।
গত ১১-৬-২০১৯ রোজ মোঙ্গলবার রাত ৭-৮টার তাঁর অবস্থার অবনতী হলে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে রাত ৭-৮টার ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তুু জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার হতদরিদ্র বীর মুক্তিযুদ্ধাকে ভর্তি না নিয়ে তাৎক্ষনি ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। যেখানে তাঁর ৫ছেলে ৩মেয়ের সংসার চালাতে প্রতিনিহিত হিমশীম খেতে হয়। সেক্ষেত্রে তাঁর পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। জীবন বাঁচানোর তাগিদে গত মোঙ্গলবার সদর হাসপালে ভর্তি না নেওয়াতে ফেনী কসম পলিটিন হাসপাতালে তাৎক্ষিক ভর্তি করায় তাঁর পরিবার। এদিকে গত ১৩-০৬-২০১৯ বৃহস্প্রতিবার ফুলগাজী সমাজ সেবা অফিসার আলমগীর হোসেন মজুমদার আসার কথা থাকলেও সে জানায় কর্মব্যস্ততার কারনে আশা হয়নি।
এদিকে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান তিনি বর্তমানে ফেনী ডিসি অফিসে রয়েছেন তবে তিনি সমাজ সেবা অফিসার কে বিষয়টি দেখতে বলেন। তিনি আরো জানান বীর মুক্তীযুদ্ধাকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। ফেনী সদর হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসকের এমন কর্মকান্ডে তিনি বলেন কোন সুযোগ নেই যে একজন মুক্তিযুদ্ধাকে ভর্তে না নিয়ে অন্যদিকে চলে যেতে বলা।
প্রথমে জেলা হাসপাতালে নিলে ভর্তি নেয়নি তারা। ফেনী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াতুনজ্জামের কাছে ফেনী সদর হাসপাতালের অসহায় হতদরিদ্র বীর মুক্তিযুদ্ধাকে ভর্তি নেওয়া হলোনা কেন এবিষয়ে জানতে তাঁর মুঠো ফোনে একাদিক বার কল দিলেও সে রিসিভ করেননি।
এদিকে এব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী জেলা প্রশাসক জানান, তিনি উক্তবিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি উক্ত প্রতিবেদক সাংবাদিকের মাধ্যমে জানতে পারলেন। তিনি জরুরী কাজে ব্যস্ত থাকায় বীর মুক্তীযুদ্ধা কাজী আজিজুর রহমান’র পরিবারকে আজ রবিবার বেলা ১-২টার ভিতর জেলা প্রশাসক অফিসে যেতে বলেন।। তিনি প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।
ফেনী জেলার এই হতদরিদ্র গরীব মুক্তিযুদ্ধার মতো আর কোন বাংলার বীর এমন কষ্টময় জীবন অতিবাহিত না করতে হয় এমনটাই ফেনীবাসীসহ পুরো বাংলাদেশের প্রায় ১৬কোটি মানুষের প্রত্যাশা।