ঢাকা ০৯:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবিপ্রবিতে সুষ্ঠভাবে গুচ্ছভুক্ত ‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন Logo গুচ্ছ খ-ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষা উপকরণ ও সুপেয় পানি দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের সহযোগিতা Logo মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি হবে সত্যিকারের গ্রীন ক্যাম্পাসঃ ভিসি মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo প্রতারণাচক্র থেকে সাবধান থাকতে আহবান জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী কাজে সর্বদা সাপোর্ট থাকবে; শাবি উপাচার্য Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক




খাবার দেয়নি ছেলেরা, কুঁড়েঘরে থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন মা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৩০ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় দরজা-জানালাবিহীন জরাজীর্ণ কুঁড়েঘর থেকে জহুরা খাতুন নামে ৯০ বছরের এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সেই সঙ্গে মায়ের প্রতি চরম অবহেলার অভিযোগে বৃদ্ধার দুই ছেলেকে আটক করে পুলিশ। মায়ের প্রতি আর অবহেলা হবে না এবং মাকে নতুন ঘর করে দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতিতে ছাড়া পান দুই ছেলে।

এলাকাবাসী বলছেন, পুরাতন একটি ঝুপড়ি ঘর। মাটির মেঝে। ঘরের দরজা-জানালা কিছুই নেই। ঘরে একটি কাঠের চৌকি। বসবাসের অনুপযোগী এই ঘরেই দীর্ঘদিন ধরে থাকছেন বৃদ্ধা জহুরা খাতুন। অথচ পাশেই তার দুই ছেলে আবুল হাসেম ও আব্দুস সালাম স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বড় টিনের ঘরে থাকছেন।

জানা যায়, তাড়াইল উপজেলার পংপাচিয়া গ্রামের জবেদ আলী ভূইয়ার স্ত্রী জহুরা খাতুন বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে অনেকদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দরজা-জানালাবিহীন জরাজীর্ণ ঘরে থাকছেন বছরের পর বছর। খাবার জোটে না, চিকিৎসা খরচ মিলে না। ঘরের ভেতরেই সারতে হয় প্রকৃতির কাজ।

সামর্থ্যবান দুই ছেলে আব্দুস সালাম আর আবুল হাশেম নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সোমবার রাতে বৃদ্ধার ঘরে হাজির হয় পুলিশ। তাড়াইল থানা পুলিশের এসআই মাসুদ আনোয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে মানবেতর অবস্থায় জহুরা খাতুনকে দেখতে পায়। পরে উদ্ধার করা হয় জহুরাকে। আটক করা হয় তার দুই ছেলেকে।

তাড়াইল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান বলেন, একজন বৃদ্ধা মাকে জরাজীর্ণ ঘরে ফেলে রেখেছে ছেলেরা। খবর পাওয়ার পর সেখানে যায় পুলিশ। ওই ঘরটি বসবাসের অনুপযোগী। ঠিকমতো বৃদ্ধা মাকে খেতে দিতো না ছেলেরা। দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন জহুরা। মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ছেলেকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, থানায় আনার পর দুই ছেলে তাদের ভুল বুঝতে পারে। মায়ের জন্য নতুন ঘর ও অন্যান্য আসবাবপত্র কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই ছেলে। ঘরের টিনসহ অন্যান্য আসবাবপত্র কিনে দেবেন তারা। বৃদ্ধা মা চান না ছেলেদের কোনো বিপদ হোক। তাই কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছেলেদের কাছে মাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

পুলিশের এমন উদ্যোগে দুই ছেলে তাদের ভুল বুঝতে পেরে মায়ের পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। মাকে নতুন ঘর তৈরি করে দেয়াসহ ভরণপোষণের ত্রুটি হবে না মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন তারা। পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালে বাধা দেন মমতাময়ী মা। বলেন, ছেলেরা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। আমি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। এখন থেকে ছেলেদের সঙ্গেই থাকব আমি।

মায়ের প্রতি আবারও কোনো অবিচার হলে দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি মো. মুজিবুর রহমান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




খাবার দেয়নি ছেলেরা, কুঁড়েঘরে থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন মা

আপডেট সময় : ০৯:২৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় দরজা-জানালাবিহীন জরাজীর্ণ কুঁড়েঘর থেকে জহুরা খাতুন নামে ৯০ বছরের এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সেই সঙ্গে মায়ের প্রতি চরম অবহেলার অভিযোগে বৃদ্ধার দুই ছেলেকে আটক করে পুলিশ। মায়ের প্রতি আর অবহেলা হবে না এবং মাকে নতুন ঘর করে দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতিতে ছাড়া পান দুই ছেলে।

এলাকাবাসী বলছেন, পুরাতন একটি ঝুপড়ি ঘর। মাটির মেঝে। ঘরের দরজা-জানালা কিছুই নেই। ঘরে একটি কাঠের চৌকি। বসবাসের অনুপযোগী এই ঘরেই দীর্ঘদিন ধরে থাকছেন বৃদ্ধা জহুরা খাতুন। অথচ পাশেই তার দুই ছেলে আবুল হাসেম ও আব্দুস সালাম স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বড় টিনের ঘরে থাকছেন।

জানা যায়, তাড়াইল উপজেলার পংপাচিয়া গ্রামের জবেদ আলী ভূইয়ার স্ত্রী জহুরা খাতুন বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে অনেকদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দরজা-জানালাবিহীন জরাজীর্ণ ঘরে থাকছেন বছরের পর বছর। খাবার জোটে না, চিকিৎসা খরচ মিলে না। ঘরের ভেতরেই সারতে হয় প্রকৃতির কাজ।

সামর্থ্যবান দুই ছেলে আব্দুস সালাম আর আবুল হাশেম নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সোমবার রাতে বৃদ্ধার ঘরে হাজির হয় পুলিশ। তাড়াইল থানা পুলিশের এসআই মাসুদ আনোয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে মানবেতর অবস্থায় জহুরা খাতুনকে দেখতে পায়। পরে উদ্ধার করা হয় জহুরাকে। আটক করা হয় তার দুই ছেলেকে।

তাড়াইল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান বলেন, একজন বৃদ্ধা মাকে জরাজীর্ণ ঘরে ফেলে রেখেছে ছেলেরা। খবর পাওয়ার পর সেখানে যায় পুলিশ। ওই ঘরটি বসবাসের অনুপযোগী। ঠিকমতো বৃদ্ধা মাকে খেতে দিতো না ছেলেরা। দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন জহুরা। মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ছেলেকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, থানায় আনার পর দুই ছেলে তাদের ভুল বুঝতে পারে। মায়ের জন্য নতুন ঘর ও অন্যান্য আসবাবপত্র কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই ছেলে। ঘরের টিনসহ অন্যান্য আসবাবপত্র কিনে দেবেন তারা। বৃদ্ধা মা চান না ছেলেদের কোনো বিপদ হোক। তাই কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছেলেদের কাছে মাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

পুলিশের এমন উদ্যোগে দুই ছেলে তাদের ভুল বুঝতে পেরে মায়ের পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। মাকে নতুন ঘর তৈরি করে দেয়াসহ ভরণপোষণের ত্রুটি হবে না মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন তারা। পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালে বাধা দেন মমতাময়ী মা। বলেন, ছেলেরা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। আমি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। এখন থেকে ছেলেদের সঙ্গেই থাকব আমি।

মায়ের প্রতি আবারও কোনো অবিচার হলে দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি মো. মুজিবুর রহমান।