ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ




সন্তান থাকতেও ৩ দিন অনাহারে বৃদ্ধ বাবা, ইউএনওকে দেখে কাঁদলেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা

শালি নেওয়াজের বয়স একশ ছুঁই ছুঁই। সন্তানরা থাকতেও না খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন তিনি। টানা তিন দিনের অনাহারে কাতর এই বৃদ্ধ। গত তিন দিন পেটে কোনো খাবার-পানি না পড়ায় প্রাণ যায় যায় অবস্থা তার।

জন্মদাতা বাবার এমন করুণ পরিস্থিতিতেও বিন্দুমাত্র মায়া কিংবা মানবিকতা জাগেনি সন্তানদের মনে। অমানবিকতার এমন খবর এক কান দু’কান করে শেষ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের কানে পৌঁছায়।

খবর পাওয়ার সঙ্গে সোমবার দুপুরে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন খাবার-দাবার নিয়ে শতবর্ষী শালি নেওয়াজের বাড়িতে যান। নিজের বাবার মতো অসহায় বৃদ্ধের মুখে খাবার তুলে দেন ইউএনও। খাবার খাওয়ানো শেষে শতবর্ষী বৃদ্ধকে বয়স্কভাতার কার্ড এবং তার সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও। এ সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ শালি নেওয়াজ।

অসহায় এই বৃদ্ধ উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের বাসিন্দা। শালি নেওয়াজের দুই ছেলে চার মেয়ে। সবাই কর্মজীবী এবং বিবাহিত। পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি থাকলেও শালি নেওয়াজের খোঁজ নেয় না কেউ।

ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাই তিন দিন ধরে শতবর্ষী বৃদ্ধ মানুষটিকে খাবার দিচ্ছেন না তার সন্তানরা। না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। খবর পেয়ে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করি অসহায় বৃদ্ধ বাবার জন্য। ওসব খাবার-দাবার নিয়ে তার বাড়ি আসি। খাবার খাওয়ানোর পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করছেন। তার জন্য কিছু শুকনা খাবারও দিয়েছি। এগুলো তিনি পরবর্তীতে খাবেন।

সাদিয়া উম্মুল বানিন আরও বলেন, বৃদ্ধের সন্তান ও পুত্রবধূদের কাছে খাবার না দেয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে বৃদ্ধের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সন্তান ও পুত্রবধূরা। পাশাপাশি আইনি দিকগুলো তাদের বুঝিয়ে বলেছি। সেই সঙ্গে বৃদ্ধ বাবার নিয়মিত খাবার-দাবার চালিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এর ব্যতিক্রম হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব বলে জানিয়ে দিয়েছি।

ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃদ্ধ শালি নেওয়াজকে একটি বয়স্কভাতার কার্ড করে দেয়া হবে। মাঝে মধ্যে তার খোঁজ-খবর নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সন্তান থাকতেও ৩ দিন অনাহারে বৃদ্ধ বাবা, ইউএনওকে দেখে কাঁদলেন

আপডেট সময় : ০৯:০০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা

শালি নেওয়াজের বয়স একশ ছুঁই ছুঁই। সন্তানরা থাকতেও না খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন তিনি। টানা তিন দিনের অনাহারে কাতর এই বৃদ্ধ। গত তিন দিন পেটে কোনো খাবার-পানি না পড়ায় প্রাণ যায় যায় অবস্থা তার।

জন্মদাতা বাবার এমন করুণ পরিস্থিতিতেও বিন্দুমাত্র মায়া কিংবা মানবিকতা জাগেনি সন্তানদের মনে। অমানবিকতার এমন খবর এক কান দু’কান করে শেষ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের কানে পৌঁছায়।

খবর পাওয়ার সঙ্গে সোমবার দুপুরে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন খাবার-দাবার নিয়ে শতবর্ষী শালি নেওয়াজের বাড়িতে যান। নিজের বাবার মতো অসহায় বৃদ্ধের মুখে খাবার তুলে দেন ইউএনও। খাবার খাওয়ানো শেষে শতবর্ষী বৃদ্ধকে বয়স্কভাতার কার্ড এবং তার সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও। এ সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ শালি নেওয়াজ।

অসহায় এই বৃদ্ধ উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের বাসিন্দা। শালি নেওয়াজের দুই ছেলে চার মেয়ে। সবাই কর্মজীবী এবং বিবাহিত। পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি থাকলেও শালি নেওয়াজের খোঁজ নেয় না কেউ।

ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাই তিন দিন ধরে শতবর্ষী বৃদ্ধ মানুষটিকে খাবার দিচ্ছেন না তার সন্তানরা। না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। খবর পেয়ে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করি অসহায় বৃদ্ধ বাবার জন্য। ওসব খাবার-দাবার নিয়ে তার বাড়ি আসি। খাবার খাওয়ানোর পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করছেন। তার জন্য কিছু শুকনা খাবারও দিয়েছি। এগুলো তিনি পরবর্তীতে খাবেন।

সাদিয়া উম্মুল বানিন আরও বলেন, বৃদ্ধের সন্তান ও পুত্রবধূদের কাছে খাবার না দেয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে বৃদ্ধের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সন্তান ও পুত্রবধূরা। পাশাপাশি আইনি দিকগুলো তাদের বুঝিয়ে বলেছি। সেই সঙ্গে বৃদ্ধ বাবার নিয়মিত খাবার-দাবার চালিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এর ব্যতিক্রম হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব বলে জানিয়ে দিয়েছি।

ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃদ্ধ শালি নেওয়াজকে একটি বয়স্কভাতার কার্ড করে দেয়া হবে। মাঝে মধ্যে তার খোঁজ-খবর নেয়া হবে।