ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২ ২২৭ বার পড়া হয়েছে

একজন সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শুনে উদ্যোক্তা হতে চায় এমন অনেক নারী উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবে। ঘরে বসে নিজের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে হোমমেড মজাদার সব খাবার তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে মিষ্টি আজাদ দিন দিন হয়ে উঠছেন একজন সফল উদ্যোক্তা। সংসার খরচে কিছুটা হলেও নিজের উপার্জিন দিয়ে হাল ধরতে পারে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। তবে চলুন জেনে নেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প:

সকালের সংবাদ ডেস্ক: আমার পেইজের নাম নাম_ Nithi’s kitchen – নিথি’র রান্নাঘর।
সবার কথায় আমিও উদ্দোক্তা হবার গল্প বলে চলে আসলাম। আমি গ্রামের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও বাবা মা কখনো পড়াশোনা নিয়ে বাধা দেন নি। নিজের জেলা থেকে অন্য জেলায় হোস্টেল এ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। পড়াশোনা শেষ হবার আগে ই বিয়ে হয়ে যায়। বর পূর্ব পরিচিত ছিলো রিলেটিভ এক দূর সম্পর্কের। যা হোক ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাড়াবো। আমার কোন ভাই নেই তিন বোন, আমিই বড়। আমাদের সমাজটাই তো এমন ভাই কেন নেই,মেয়েরা কি করবে। তাই তো এসব কারনে নিজে যাতে বাবা মাকে হেল্প করতে পারি তার জন্য ই অনেক ইচ্ছে ছিলো।
কিন্তু সব ইচ্ছের গুড়েবালি বিয়ের পর। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় আমার ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম এর সময় ই জানতে পারি মা হতে যাচ্ছি। যা হোক মেয়ে সন্তানের মা হলাম। মেয়ের ছয় মাস বয়সে ঢাকায় বরের সাথে শিফট হলাম।

আমার বরের বাবা মা কেউ ই ছিলো না। বর যখন ইন্টারে পড়ে তখন ই তার মা মারা যায় ক্যানসারে। তার দু বছর পরেই বাবা মারা যান। বরের একটা বোন ই শুধু। তার বিয়ে হয়ে শশুরবাড়ি। যেহেতু শশুর শাশুড়ি কে আমি দেখিনি,তাই একা একা ঢাকায় এসে মেয়ে কে কার কাছে রেখে জব করবো,সেটা ভেবেই জবের ইচ্ছে টা নিজের মধ্যে ই রেখে দেই। মেয়ে কে বড় করতে থাকি। বর একটা সরকারি চাকুরী করে। ভালো চাকুরী করা সত্ত্বেও কেন জানি সব গুছিয়ে উঠতে পারছিলাম না। কারন তার বাবার মায়ের অধরা সপ্ন গুলো পূরন বরকে ই একা করতে হয়।
যা হোক তবুও আলহামদুলিল্লাহ দিন গুলো ভালো কেটে যাচ্ছিল। অনলাইনে সবার বিজনেস দেখে বর সব সময়ই সাপোর্ট করতো তুমি ও বিজনেস করো,কারন জানে আমার চাকুরীর ইচ্ছে টা কত ছিলো। আমাকে বলতো তোমার টাকা আমার প্রয়োজন নেই,তুমি যাতে নিজে নিজে কিছু করতে পারো,তোমার টাকায় তুমি যাতে কাউকে গিফট দিতে পারো তার জন্য তুমি বিজনেস টা করো। আমি তোমাকে হেল্প করবো। বরের কথায় সাহস নিয়ে গত বছর একটি উদ্যোক্তা গ্রুপে জয়েন হই ২০২০ এর ২৯ জুন। ওখানেই সবাই কে দেখে অনুপ্রাণীত হয়ে আচার এর কাজ টা শুরু করি। কারন আচার আমি ভালো ই বানাই। শুরুতে কিভাবে ডেলিভারি দিবো বুঝতে পারছিলাম না,পরে ঢাকার মধ্যে বর ই ডেলিভারি দিয়ে দিতো প্রথম প্রথম। কারন বরের শুক্রবার শনিবার অফিস অফ ডে। তাই বর ই ডেলিভারি করতো, আর ঢাকার বাহিরের গুলো কুরিয়ার করে দিতাম। আলহামদুলিল্লাহ এই এক বছরে আমি প্রায় বিশ রকমের আচার সেল করেছি। রিপিট কাস্টমার ও অনেক হয়েছে।
বিভিন্ন গ্রুপ, নিজের পেইজ, প্রফাইল থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমার টাকা সংসারে খরচের জন্য দিতে হয় না, অন্তত নিজের টাকায় নিজের শখ পূরন করতে পারি, বরের কাছ থেকে টাকা নিতে হয় না। আমি মনে করি প্রতিটি নারী নিজের অবসর সময় হেয়ালিতে নষ্ট না করে কোনো না কোনো কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা উচিত। আমার সব সপ্ন পূরনের পাশে বর আছে আলহামদুলিল্লাহ। নিজের অভিজ্ঞতা ইচ্ছে আর উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে হাজারো সমস্যা কাটিয়ে উঠে এতটুকু আসতে পেরেছি যার জন্য শুকরিয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২

একজন সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শুনে উদ্যোক্তা হতে চায় এমন অনেক নারী উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবে। ঘরে বসে নিজের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে হোমমেড মজাদার সব খাবার তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে মিষ্টি আজাদ দিন দিন হয়ে উঠছেন একজন সফল উদ্যোক্তা। সংসার খরচে কিছুটা হলেও নিজের উপার্জিন দিয়ে হাল ধরতে পারে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। তবে চলুন জেনে নেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প:

সকালের সংবাদ ডেস্ক: আমার পেইজের নাম নাম_ Nithi’s kitchen – নিথি’র রান্নাঘর।
সবার কথায় আমিও উদ্দোক্তা হবার গল্প বলে চলে আসলাম। আমি গ্রামের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও বাবা মা কখনো পড়াশোনা নিয়ে বাধা দেন নি। নিজের জেলা থেকে অন্য জেলায় হোস্টেল এ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। পড়াশোনা শেষ হবার আগে ই বিয়ে হয়ে যায়। বর পূর্ব পরিচিত ছিলো রিলেটিভ এক দূর সম্পর্কের। যা হোক ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাড়াবো। আমার কোন ভাই নেই তিন বোন, আমিই বড়। আমাদের সমাজটাই তো এমন ভাই কেন নেই,মেয়েরা কি করবে। তাই তো এসব কারনে নিজে যাতে বাবা মাকে হেল্প করতে পারি তার জন্য ই অনেক ইচ্ছে ছিলো।
কিন্তু সব ইচ্ছের গুড়েবালি বিয়ের পর। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় আমার ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম এর সময় ই জানতে পারি মা হতে যাচ্ছি। যা হোক মেয়ে সন্তানের মা হলাম। মেয়ের ছয় মাস বয়সে ঢাকায় বরের সাথে শিফট হলাম।

আমার বরের বাবা মা কেউ ই ছিলো না। বর যখন ইন্টারে পড়ে তখন ই তার মা মারা যায় ক্যানসারে। তার দু বছর পরেই বাবা মারা যান। বরের একটা বোন ই শুধু। তার বিয়ে হয়ে শশুরবাড়ি। যেহেতু শশুর শাশুড়ি কে আমি দেখিনি,তাই একা একা ঢাকায় এসে মেয়ে কে কার কাছে রেখে জব করবো,সেটা ভেবেই জবের ইচ্ছে টা নিজের মধ্যে ই রেখে দেই। মেয়ে কে বড় করতে থাকি। বর একটা সরকারি চাকুরী করে। ভালো চাকুরী করা সত্ত্বেও কেন জানি সব গুছিয়ে উঠতে পারছিলাম না। কারন তার বাবার মায়ের অধরা সপ্ন গুলো পূরন বরকে ই একা করতে হয়।
যা হোক তবুও আলহামদুলিল্লাহ দিন গুলো ভালো কেটে যাচ্ছিল। অনলাইনে সবার বিজনেস দেখে বর সব সময়ই সাপোর্ট করতো তুমি ও বিজনেস করো,কারন জানে আমার চাকুরীর ইচ্ছে টা কত ছিলো। আমাকে বলতো তোমার টাকা আমার প্রয়োজন নেই,তুমি যাতে নিজে নিজে কিছু করতে পারো,তোমার টাকায় তুমি যাতে কাউকে গিফট দিতে পারো তার জন্য তুমি বিজনেস টা করো। আমি তোমাকে হেল্প করবো। বরের কথায় সাহস নিয়ে গত বছর একটি উদ্যোক্তা গ্রুপে জয়েন হই ২০২০ এর ২৯ জুন। ওখানেই সবাই কে দেখে অনুপ্রাণীত হয়ে আচার এর কাজ টা শুরু করি। কারন আচার আমি ভালো ই বানাই। শুরুতে কিভাবে ডেলিভারি দিবো বুঝতে পারছিলাম না,পরে ঢাকার মধ্যে বর ই ডেলিভারি দিয়ে দিতো প্রথম প্রথম। কারন বরের শুক্রবার শনিবার অফিস অফ ডে। তাই বর ই ডেলিভারি করতো, আর ঢাকার বাহিরের গুলো কুরিয়ার করে দিতাম। আলহামদুলিল্লাহ এই এক বছরে আমি প্রায় বিশ রকমের আচার সেল করেছি। রিপিট কাস্টমার ও অনেক হয়েছে।
বিভিন্ন গ্রুপ, নিজের পেইজ, প্রফাইল থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমার টাকা সংসারে খরচের জন্য দিতে হয় না, অন্তত নিজের টাকায় নিজের শখ পূরন করতে পারি, বরের কাছ থেকে টাকা নিতে হয় না। আমি মনে করি প্রতিটি নারী নিজের অবসর সময় হেয়ালিতে নষ্ট না করে কোনো না কোনো কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা উচিত। আমার সব সপ্ন পূরনের পাশে বর আছে আলহামদুলিল্লাহ। নিজের অভিজ্ঞতা ইচ্ছে আর উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে হাজারো সমস্যা কাটিয়ে উঠে এতটুকু আসতে পেরেছি যার জন্য শুকরিয়া।