ঢাকা ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




জাহালমের জেল খাটার খলনায়ক সালেক কোথায়?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ ১২১ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ;

বিনা অপরাধে জাহালমের জেল খাটার কাহিনীর খলনায়ক আবু সালেককে হন্যে হয়ে খুঁজছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সালেক এখন পলাতক। তিনি কোথায় আছেন, তা জানে না দেশের কোনো সংস্থা। তবে আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের মূল হোতা সালেক ঠাকুরগাঁও থেকে ভারতের শিলিগুড়ি গিয়েছেন। পরে সেখান থেকে নেপালে চলে গেছেন। বর্তমানে তিনি সপরিবারে নেপালেই আছেন।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী পলাতক সালেক গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর তিনি দেশত্যাগ করেছেন কি-না তা নিশ্চিত তথ্য নেই কারও কাছে। তবে সালেক গোপনে সীমান্ত পার হয়ে পালিয়ে গেছেন বলে সংশ্নিষ্টদের ধারণা।

সূত্র জানায়, দুদক সালেককে খুঁজে বের করার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ, র‌্যাব, বিমান, স্থলবন্দর, কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠির সঙ্গে সালেকের একাধিক ছবি ও প্রয়োজনীয় ফোন নম্বরও পাঠানো হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংসহ বিভিন্নভাবে সালেকের খোঁজ করছে। এখন পর্যন্ত তার সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানা যায়নি।

বারবার ভারত সফর : অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিংদিয়া গ্রামের সালেক ২০১৭ সালে বাল্যবন্ধু সালাউদ্দিনের সঙ্গে ভারতের শিলিগুড়ি গিয়েছিলেন। তারা ৪-৫ দিন হোটেলে থাকার পর দেশে চলে আসেন। সালাউদ্দিন ঠাকুরগাঁও সদরে দলিল লেখক হিসেবে কর্মরত আছেন।

গত বছরের এপ্রিল অথবা মে মাসে সালেক আবারও শিলিগুড়ি যান। তখন তিনি একা যান। সেখানে গিয়ে তিনি একসময়ের ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা হাওয়াল নামের একজনের বাসায় ওঠেন। হাওয়াল ২০০৩ সালে ঠাকুরগাঁও থেকে শিলিগুড়ি চলে যান। পরে শিলিগুড়ি শহরের শিবমন্দিরের পাশে বাড়ি করেন। এরপর সালেক মাঝে মাঝেই শিলিগুড়ি ও নেপাল ভ্রমণ করেছেন। ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সালেকের বিরুদ্ধে মামলার পর আদালতে চার্জশিট দেওয়া হলে গ্রেফতারের জন্য তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এর পরই তিনি নেপালে পাড়ি জমান বলে একাধিক সূত্র জানায়।

সালেকের বিস্ময়কর উত্থান : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল কুদ্দুস ও সালেহা বেগমের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সালেক তৃতীয়। ২০০২ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের ভূল্লী কলেজে এইচএসসির ছাত্র ছিলেন। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় বাবা-মায়ের বকাঝকা শুনে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন। সালেক তার গ্রামে গিয়ে বলতেন, ঢাকায় তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ করেন।

২০১১-১২ সালের দিকে তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের শিংদিয়ায় যান নতুনরূপে। সেই বেকার সালেক আর নেই। বাড়ি নির্মাণ, জমি কেনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালুর কাজ শুরু করে দেন জোরেশোরে। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠেন পরীক্ষায় ফেল করা, বেকার ও বাবা-মায়ের বকুনি খাওয়া ছেলেটি। তাকে দেখে তখন এলাকার মানুষ বিস্মিত হয়েছিলেন।

বিপুল সম্পদ : প্রতারণা-জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতে সালেকের সঙ্গে ব্যাংকের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সালেকের ওই সময়ের সাঙ্গোপাঙ্গরা জড়িত ছিল। সংঘবদ্ধ ওই চক্রের সদস্যের সংখ্যা ১০-১২ জন হবে বলে সংশ্নিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সালেক আঠারটি ব্যাংকের ৩৩টি শাখায় ৩৩টি ভুয়া হিসাব খুলে সোনালী ব্যাংক ঢাকাস্থ মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখার ১৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, এ টাকা শুধু সালেকের একার পকেটে ওঠেনি। ভাগ নিয়েছে চক্রের সদস্যরাও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মধ্যে সালেকের ভাগে পড়েছে বড়জোর ৪-৫ কোটি টাকা। এই টাকায় ২০১১-২০১২ সালের দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় নিজের শিংদিয়া গ্রামে তিনি আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই সময় জমি কিনেছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের পর। তিনি ব্যাংকের টাকায় ঠাকুরগাঁওয়ের ভূল্লী এলাকায় ছয়টি দলিলে কয়েক বিঘা জমি কেনেন। জালিয়াতির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর কিছু জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।

২০১২ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বোদা বাজারে এস. কে. ইলেক্ট্রনিক্স নামে তিনি একটি শো-রুম চালু করেছিলেন। এই শো-রুমে টিভি, ফ্রিজসহ নানা ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বেচাকেনা হতো। বর্তমানে দোকানটি বন্ধ। জানা গেছে, সালেকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের খোঁজে দুদকের একটি টিম কাজ করছে। তার নামে-বেনামের ব্যাংক হিসাবের অনুসন্ধান করতে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে ওই টিম।

সালেকের বাবার বিস্ময় : সালেকের বাবা আবদুল কুদ্দুস সংবাদ মাধমকে বলেন, ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের খবর জানাজানির পর ছেলে তাকে একবার ফোন করেছিল। বলেছিল- এসব কিছু না। এরপর আর কোনোদিন ফোনও করেনি, বাড়িতেও আসেনি। সালেকের বাবা আরও বলেন, তিনি সোনালী ব্যাংকের ভূল্লী শাখা থেকে ১১ হাজার টাকার ঋণ নিয়েছিলেন। তার জন্য দুই বিঘা জমি জামানত দিতে হয়েছে। তবে সালেককে ব্যাংক এত টাকা দিল কিসের ওপর ভর করে। এই কাজ সালেকের একার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এই অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও শাস্তি চান তিনি।

জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংকের মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখা থেকে প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদক ৩৩টি মামলার চার্জশিট পেশ করেছে আদালতে। সংশ্নিষ্ট ব্যাংকার, গ্রাহক ও জাহালমের গ্রামের বাড়ির এলাকার দু’জন ইউপি চেয়ারম্যানের সাক্ষ্য অনুযায়ী ২৬টি মামলায় সালেকের পরিবর্তে জাহালমকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছিল কমিশন। ওই ২৬ মামলায় তিন বছর বিনা অপরাধে কারাভোগ করেছেন জাহালম। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট জাহালমের মুক্তির আদেশ দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




জাহালমের জেল খাটার খলনায়ক সালেক কোথায়?

আপডেট সময় : ১১:৪৮:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯

সকালের সংবাদ;

বিনা অপরাধে জাহালমের জেল খাটার কাহিনীর খলনায়ক আবু সালেককে হন্যে হয়ে খুঁজছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সালেক এখন পলাতক। তিনি কোথায় আছেন, তা জানে না দেশের কোনো সংস্থা। তবে আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের মূল হোতা সালেক ঠাকুরগাঁও থেকে ভারতের শিলিগুড়ি গিয়েছেন। পরে সেখান থেকে নেপালে চলে গেছেন। বর্তমানে তিনি সপরিবারে নেপালেই আছেন।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী পলাতক সালেক গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর তিনি দেশত্যাগ করেছেন কি-না তা নিশ্চিত তথ্য নেই কারও কাছে। তবে সালেক গোপনে সীমান্ত পার হয়ে পালিয়ে গেছেন বলে সংশ্নিষ্টদের ধারণা।

সূত্র জানায়, দুদক সালেককে খুঁজে বের করার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ, র‌্যাব, বিমান, স্থলবন্দর, কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠির সঙ্গে সালেকের একাধিক ছবি ও প্রয়োজনীয় ফোন নম্বরও পাঠানো হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংসহ বিভিন্নভাবে সালেকের খোঁজ করছে। এখন পর্যন্ত তার সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানা যায়নি।

বারবার ভারত সফর : অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিংদিয়া গ্রামের সালেক ২০১৭ সালে বাল্যবন্ধু সালাউদ্দিনের সঙ্গে ভারতের শিলিগুড়ি গিয়েছিলেন। তারা ৪-৫ দিন হোটেলে থাকার পর দেশে চলে আসেন। সালাউদ্দিন ঠাকুরগাঁও সদরে দলিল লেখক হিসেবে কর্মরত আছেন।

গত বছরের এপ্রিল অথবা মে মাসে সালেক আবারও শিলিগুড়ি যান। তখন তিনি একা যান। সেখানে গিয়ে তিনি একসময়ের ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা হাওয়াল নামের একজনের বাসায় ওঠেন। হাওয়াল ২০০৩ সালে ঠাকুরগাঁও থেকে শিলিগুড়ি চলে যান। পরে শিলিগুড়ি শহরের শিবমন্দিরের পাশে বাড়ি করেন। এরপর সালেক মাঝে মাঝেই শিলিগুড়ি ও নেপাল ভ্রমণ করেছেন। ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সালেকের বিরুদ্ধে মামলার পর আদালতে চার্জশিট দেওয়া হলে গ্রেফতারের জন্য তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এর পরই তিনি নেপালে পাড়ি জমান বলে একাধিক সূত্র জানায়।

সালেকের বিস্ময়কর উত্থান : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল কুদ্দুস ও সালেহা বেগমের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সালেক তৃতীয়। ২০০২ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের ভূল্লী কলেজে এইচএসসির ছাত্র ছিলেন। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় বাবা-মায়ের বকাঝকা শুনে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন। সালেক তার গ্রামে গিয়ে বলতেন, ঢাকায় তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ করেন।

২০১১-১২ সালের দিকে তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের শিংদিয়ায় যান নতুনরূপে। সেই বেকার সালেক আর নেই। বাড়ি নির্মাণ, জমি কেনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালুর কাজ শুরু করে দেন জোরেশোরে। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠেন পরীক্ষায় ফেল করা, বেকার ও বাবা-মায়ের বকুনি খাওয়া ছেলেটি। তাকে দেখে তখন এলাকার মানুষ বিস্মিত হয়েছিলেন।

বিপুল সম্পদ : প্রতারণা-জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতে সালেকের সঙ্গে ব্যাংকের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সালেকের ওই সময়ের সাঙ্গোপাঙ্গরা জড়িত ছিল। সংঘবদ্ধ ওই চক্রের সদস্যের সংখ্যা ১০-১২ জন হবে বলে সংশ্নিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সালেক আঠারটি ব্যাংকের ৩৩টি শাখায় ৩৩টি ভুয়া হিসাব খুলে সোনালী ব্যাংক ঢাকাস্থ মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখার ১৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, এ টাকা শুধু সালেকের একার পকেটে ওঠেনি। ভাগ নিয়েছে চক্রের সদস্যরাও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মধ্যে সালেকের ভাগে পড়েছে বড়জোর ৪-৫ কোটি টাকা। এই টাকায় ২০১১-২০১২ সালের দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় নিজের শিংদিয়া গ্রামে তিনি আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই সময় জমি কিনেছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের পর। তিনি ব্যাংকের টাকায় ঠাকুরগাঁওয়ের ভূল্লী এলাকায় ছয়টি দলিলে কয়েক বিঘা জমি কেনেন। জালিয়াতির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর কিছু জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।

২০১২ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বোদা বাজারে এস. কে. ইলেক্ট্রনিক্স নামে তিনি একটি শো-রুম চালু করেছিলেন। এই শো-রুমে টিভি, ফ্রিজসহ নানা ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বেচাকেনা হতো। বর্তমানে দোকানটি বন্ধ। জানা গেছে, সালেকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের খোঁজে দুদকের একটি টিম কাজ করছে। তার নামে-বেনামের ব্যাংক হিসাবের অনুসন্ধান করতে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে ওই টিম।

সালেকের বাবার বিস্ময় : সালেকের বাবা আবদুল কুদ্দুস সংবাদ মাধমকে বলেন, ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের খবর জানাজানির পর ছেলে তাকে একবার ফোন করেছিল। বলেছিল- এসব কিছু না। এরপর আর কোনোদিন ফোনও করেনি, বাড়িতেও আসেনি। সালেকের বাবা আরও বলেন, তিনি সোনালী ব্যাংকের ভূল্লী শাখা থেকে ১১ হাজার টাকার ঋণ নিয়েছিলেন। তার জন্য দুই বিঘা জমি জামানত দিতে হয়েছে। তবে সালেককে ব্যাংক এত টাকা দিল কিসের ওপর ভর করে। এই কাজ সালেকের একার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এই অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও শাস্তি চান তিনি।

জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংকের মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখা থেকে প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদক ৩৩টি মামলার চার্জশিট পেশ করেছে আদালতে। সংশ্নিষ্ট ব্যাংকার, গ্রাহক ও জাহালমের গ্রামের বাড়ির এলাকার দু’জন ইউপি চেয়ারম্যানের সাক্ষ্য অনুযায়ী ২৬টি মামলায় সালেকের পরিবর্তে জাহালমকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছিল কমিশন। ওই ২৬ মামলায় তিন বছর বিনা অপরাধে কারাভোগ করেছেন জাহালম। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট জাহালমের মুক্তির আদেশ দেন।