ঢাকা ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




৩ মাসেই ফেটে গেল ৭৩ লাখ টাকার ভবন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৫:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ৬০ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি;
নির্মাণের তিন মাসের মাথায় শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৪১নং চরযাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। তবু ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনে চলছে পাঠদান। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ৪১নং চরযাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থানীয় পাঞ্জু শিকদার ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। টিনশেড মূল ভবনের পাশে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প-৩-এর আওতায় ২০১৭ সালে এলজিইডি বিভাগ ৭৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে। চারতলা ভবনটির একতলার নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৮ সালে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চার কক্ষের ভবনটি বুঝিয়ে দেয় ঠিকাদার। বুঝিয়ে দেয়ার পর থেকেই ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। মেসার্স আব্দুল মান্নান লস্কর নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণ করে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার মন্ডল বলেন, যে ঠিকাদার ভবনটি করেছেন তিনি বলেছেন ভবনটিতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস শুরু করতে পারেন। তাই ঠিকাদারের কথা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু করেছি। কিন্তু এরই মধ্যে ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছি আমরা।

শনিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি জানালার কলামে বড় বড় ফাটল। মেঝের ফ্লোরের পলেস্তারা উঠে গেছে। সিঁড়ি ফেটে আলাদা হয়ে গেছে। ভবনের দেয়ালেও রয়েছে অসংখ্য ফাটল। ভবনের বারান্দার গ্রিলগুলোতে বাঁশের স্টিক দিয়ে ফিক দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪১নং চরযাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৩৮ জন। শিক্ষক আছেন চারজন। ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনে চলছে পাঠদান।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও খায়্যেদা আক্তার সুমী বলেন, ভবনটি যেকোনো সময়ে ধসে যেতে পারে। যে ঠিকাদার ভবনটি নির্মাণ করেছেন তিনি অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষার একটি স্লোগান আছে ‘নিরাপদ পরিবেশে পাঠদান’। কিন্তু আমরা নিরাপদ পরিবেশে নাই, আমরা ঝুঁকিতে আছি। তাই ভবনটির সংস্কার প্রয়োজন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আসমা বেগম বলেন, ভবনের কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নতুন ভবনটিতে ফাটল ধরার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

ঠিকাদার আব্দুল মান্নান লস্করের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সহকারী ঠিকাদার সোহেল খান বলেছেন, কাজটি পায় মাদারীপুরের মেসার্স আব্দুল মান্নান লস্কর নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে আমার কাছে বিক্রি করে দেয়। আমি ঢাকায় আছি। ঢাকা থেকে এসে এ বিষয়ে কথা বলব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহ আলম মিয়া বলেন, ঠিকাদার এলজিইডিকে ভবনটি এখনো বুঝিয়ে দেয়নি। বিদ্যালয়ের ভবনে ফাটল ধরার বিষয়টি আমি শুনেছি। আমরা বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাব। কোনো অনিয়ম পেলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনটি করেছে এলজিইডি। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ে ফাটল ধরেছে বলে শুনেছি। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




৩ মাসেই ফেটে গেল ৭৩ লাখ টাকার ভবন

আপডেট সময় : ০৬:৪৫:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি;
নির্মাণের তিন মাসের মাথায় শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৪১নং চরযাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। তবু ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনে চলছে পাঠদান। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ৪১নং চরযাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থানীয় পাঞ্জু শিকদার ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। টিনশেড মূল ভবনের পাশে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প-৩-এর আওতায় ২০১৭ সালে এলজিইডি বিভাগ ৭৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে। চারতলা ভবনটির একতলার নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৮ সালে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চার কক্ষের ভবনটি বুঝিয়ে দেয় ঠিকাদার। বুঝিয়ে দেয়ার পর থেকেই ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। মেসার্স আব্দুল মান্নান লস্কর নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণ করে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার মন্ডল বলেন, যে ঠিকাদার ভবনটি করেছেন তিনি বলেছেন ভবনটিতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস শুরু করতে পারেন। তাই ঠিকাদারের কথা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু করেছি। কিন্তু এরই মধ্যে ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছি আমরা।

শনিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি জানালার কলামে বড় বড় ফাটল। মেঝের ফ্লোরের পলেস্তারা উঠে গেছে। সিঁড়ি ফেটে আলাদা হয়ে গেছে। ভবনের দেয়ালেও রয়েছে অসংখ্য ফাটল। ভবনের বারান্দার গ্রিলগুলোতে বাঁশের স্টিক দিয়ে ফিক দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪১নং চরযাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৩৮ জন। শিক্ষক আছেন চারজন। ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনে চলছে পাঠদান।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও খায়্যেদা আক্তার সুমী বলেন, ভবনটি যেকোনো সময়ে ধসে যেতে পারে। যে ঠিকাদার ভবনটি নির্মাণ করেছেন তিনি অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষার একটি স্লোগান আছে ‘নিরাপদ পরিবেশে পাঠদান’। কিন্তু আমরা নিরাপদ পরিবেশে নাই, আমরা ঝুঁকিতে আছি। তাই ভবনটির সংস্কার প্রয়োজন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আসমা বেগম বলেন, ভবনের কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নতুন ভবনটিতে ফাটল ধরার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

ঠিকাদার আব্দুল মান্নান লস্করের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সহকারী ঠিকাদার সোহেল খান বলেছেন, কাজটি পায় মাদারীপুরের মেসার্স আব্দুল মান্নান লস্কর নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে আমার কাছে বিক্রি করে দেয়। আমি ঢাকায় আছি। ঢাকা থেকে এসে এ বিষয়ে কথা বলব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহ আলম মিয়া বলেন, ঠিকাদার এলজিইডিকে ভবনটি এখনো বুঝিয়ে দেয়নি। বিদ্যালয়ের ভবনে ফাটল ধরার বিষয়টি আমি শুনেছি। আমরা বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাব। কোনো অনিয়ম পেলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনটি করেছে এলজিইডি। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ে ফাটল ধরেছে বলে শুনেছি। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।