ঢাকা ০৬:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




স্কুলের উন্নয়নের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:১৬:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ৮৮ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরাদ্দের টাকা বিদ্যালয়ের সংস্কার বা উন্নয়ন না করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আত্মসাৎ করা হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সংস্কার বা উন্নয়ন কাজের কোনো চিত্র দেখা যায়নি।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়গুলোর জন্য উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার ও গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তদবির করে ২৪টি বিদ্যালয়ের জন্য দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ আনেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে পিইডিপি-৩ এর আওতায় উপজেলার ২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামত ও সংস্কারের জন্য বিদ্যালয় প্রতি দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ আসে।

সরেজমিনে নিকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে দুইটি দরজা ছাড়া কিছু দেখা যায়নি। চিতুলিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই লাখ টাকায় মাঠে মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ হলেও সেখানে মাটি ফেলানো হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দাবি, গাবসারার চেয়ারম্যান তাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন। টাকা গুলো ব্যাংকে রাখা হয়েছে। এছাড়া বাকি বিদ্যালয় গুলোতে কোনো সংস্কার বা উন্নয়ন কাজ দেখা যায়নি। গত বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বিদ্যালয় সংস্কার ও মেরামত কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের বিল-ভাউচার জমা দিতে লিখিত নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভীন। এছাড়া বিল-ভাউচারের সঙ্গে উপজেলা এলজিইডি কর্তৃক একটা প্রত্যয়নপত্র সংযুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রত্যেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের কোনো কাজ না করে ভুয়া বিল-ভাউচার জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। তবে টাকা বরাদ্দ পাওয়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দাবী, তারা বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের টাকা হাতে পাননি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কর্মকর্তার চাপে তারা ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে জমা দিয়েছেন।

উপজেলার নিকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুছ সালাম ভূইয়া বলেন, টাকা পাওয়ার বিষয়টি প্রথমে না জানলেও পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মতিন সরকারের চাপে বিল-ভাউচারের স্বাক্ষর দিতে হয়েছে। এজন্য বিদ্যালয়ের দুই কক্ষের জন্য দরজা, জানালা পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি। তবে নগদ টাকা হাতে পাইনি।

চিতুলিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন জানান, বিদ্যালয় মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ২লাখ টাকা গাবসারা চেয়ারম্যান কর্তৃক পেয়েছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান পুরো টাকা না দিয়ে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছে। টাকা বিদ্যালয় একাউন্টে জমা রাখা হয়েছে। গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, যে সকল বিদ্যালয় গুলোতে বরাদ্দ এসেছিল সেই সকল বিদ্যালয়ের সংস্কার বা উন্নয়ন কাজ একটি কমিটির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকরা সম্পূর্ণ করে তারা বিল-ভাউচার জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। এখানে বিদ্যালয়ের টাকা আমার তোলার কোন সুযোগ নেই।

নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাননি।

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনিক সাহা তথ্য দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভীন বলেন, স্থানীয় গাবসারা ও নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিভিন্ন তদবির করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তারা বরাদ্দ এনেছেন। তারাই সব করেছে। এছাড়া কয়েকটা বিদ্যালয়ে ঠিকমত কাজ হয়নি। তাদের কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। বাকিগুলো বিদ্যালয়ে কাজ হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




স্কুলের উন্নয়নের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৬:১৬:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরাদ্দের টাকা বিদ্যালয়ের সংস্কার বা উন্নয়ন না করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আত্মসাৎ করা হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সংস্কার বা উন্নয়ন কাজের কোনো চিত্র দেখা যায়নি।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়গুলোর জন্য উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার ও গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তদবির করে ২৪টি বিদ্যালয়ের জন্য দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ আনেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে পিইডিপি-৩ এর আওতায় উপজেলার ২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামত ও সংস্কারের জন্য বিদ্যালয় প্রতি দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ আসে।

সরেজমিনে নিকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে দুইটি দরজা ছাড়া কিছু দেখা যায়নি। চিতুলিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই লাখ টাকায় মাঠে মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ হলেও সেখানে মাটি ফেলানো হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দাবি, গাবসারার চেয়ারম্যান তাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন। টাকা গুলো ব্যাংকে রাখা হয়েছে। এছাড়া বাকি বিদ্যালয় গুলোতে কোনো সংস্কার বা উন্নয়ন কাজ দেখা যায়নি। গত বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বিদ্যালয় সংস্কার ও মেরামত কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের বিল-ভাউচার জমা দিতে লিখিত নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভীন। এছাড়া বিল-ভাউচারের সঙ্গে উপজেলা এলজিইডি কর্তৃক একটা প্রত্যয়নপত্র সংযুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রত্যেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের কোনো কাজ না করে ভুয়া বিল-ভাউচার জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। তবে টাকা বরাদ্দ পাওয়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দাবী, তারা বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের টাকা হাতে পাননি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কর্মকর্তার চাপে তারা ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে জমা দিয়েছেন।

উপজেলার নিকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুছ সালাম ভূইয়া বলেন, টাকা পাওয়ার বিষয়টি প্রথমে না জানলেও পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মতিন সরকারের চাপে বিল-ভাউচারের স্বাক্ষর দিতে হয়েছে। এজন্য বিদ্যালয়ের দুই কক্ষের জন্য দরজা, জানালা পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি। তবে নগদ টাকা হাতে পাইনি।

চিতুলিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন জানান, বিদ্যালয় মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ২লাখ টাকা গাবসারা চেয়ারম্যান কর্তৃক পেয়েছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান পুরো টাকা না দিয়ে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছে। টাকা বিদ্যালয় একাউন্টে জমা রাখা হয়েছে। গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, যে সকল বিদ্যালয় গুলোতে বরাদ্দ এসেছিল সেই সকল বিদ্যালয়ের সংস্কার বা উন্নয়ন কাজ একটি কমিটির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকরা সম্পূর্ণ করে তারা বিল-ভাউচার জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। এখানে বিদ্যালয়ের টাকা আমার তোলার কোন সুযোগ নেই।

নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাননি।

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনিক সাহা তথ্য দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভীন বলেন, স্থানীয় গাবসারা ও নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিভিন্ন তদবির করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তারা বরাদ্দ এনেছেন। তারাই সব করেছে। এছাড়া কয়েকটা বিদ্যালয়ে ঠিকমত কাজ হয়নি। তাদের কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। বাকিগুলো বিদ্যালয়ে কাজ হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।