ঢাকা ১২:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




উত্তারার মক্কা চক্ষু হাসপাতালের ভুল চিকিৎসার রোগী অন্ধ হওয়ার অভিযোগ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০১৯ ১৪২ বার পড়া হয়েছে

ক্রাইম ডেস্কঃ
রাজধানী ঢাকার উত্তরা এলাকায় অবস্থিত মক্কা আই হসপিটালের অপচিকিৎসায় এক রোগীর দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি বিনষ্ট হওয়ার গুরত্বর অভিযোগ উঠেছে। ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার আগে ৬০ বছর বয়সী আমেনা বেগমের চোখে ৬০% দৃষ্টিশক্তি থাকলেও তিনি এখন পুরোই অন্ধ। ভুক্তভোগীর পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে এসে চিকিৎসককে জানালে তাদের বক্তব্য, “আল্লাহ চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কিছু করার নেই”। চোখের সামান্য সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে জামালপুরের পাথালিয়া গ্রাম থেকে থেকে উত্তরা মক্কা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধ। বর্তমানে তিনি চোখেই দেখতে পায়না, অন্যের সহযোগীতা ছাড়া চলাফেরাও করতে পারছেন না।

ভুক্তভোগী বৃদ্ধা আমেনা বেগমের ছেলে আহসান হাবীব পাভেল বলেন, আমার মাকে সুস্থ করাতে গিয়ে এখন তিনি অন্ধ। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসককে এই অপচিকিৎসার জবাব দিতে হবে। প্রয়োজনে আইনী লড়াই করবেন বলেও জানান তিনি।

ভুক্তভোগী পরিবার কর্তৃক বাংলাদেশ অনলাইন প্রেসক্লাব ও সকল গণমাধ্যমের সম্পাদক বরাবর দেওয়া একটি লিখিত অভিযোগ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

লিখিত অভিযোগ এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর ২৩ জানুয়ারি আমেনা বেগমকে মক্কা আই হসপিটালের ডা. জাহিদ হাসানকে দেখানো হয়। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক তাকে জানান, “এভাস্টিন” নামের একটি ইনজেকশন দেওয়া হলে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন। যার মূল্য ২০ হাজার টাকা। সাথে আরো কিছু ওষুধ লিখে দেওয়া হয়। ওই দিনই আমেনা বেগমকে ইনজেকশনটি দেওয়া হলে তিনি বাড়ি চলে যান। বাড়ি যাওয়ার পরদিন থেকেই তার চোখের অবস্থার অবনতি হয় এবং তিনি চোখেই দেখেননা। তিনি পুরো মাত্রায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন।

চিকিৎসা নেওয়ার কয়েকদিন পরে অন্ধ আমেনা বেগমকে ওই হাসপাতালে নেওয়া হলে ডা. নাসিমা আহমেদ ফের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং চিকিৎসা পরবর্তী অবস্থার কথা শুনে উত্তর দেন, “আল্লাহ চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিলে আমাদের কি করার আছে”।

আহসান হাবীব পাভেল আরো অভিযোগ করেন, যে ইনজেকশনের দাম মক্কা হাসপাতাল ২০ হাজার টাকা নিয়েছে, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তার মূল্য ৫শ’ টাকা। অভিযোগের বিষয় হাসপাতালের পরিচালকের সাথে সাক্ষাতে জানতে চাইলে তিনি দাম্ভিককতা নিয়ে বলেন আমারা এমন বহু ঝামেলা সামলাই, আমরা কোনো ভুল করিনি পারলে নিউজ করেন, আদালতের যান আমরা বুঝবো!’

মক্কা হাসপাতালের আশপাশের বসবাসকারী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে কয়েকবছর ধরে এরা চিকিৎসার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। একটি ইনজেকশন দেওয়ায় বাধ্য করে যার মূল্য নেয় কথা বলে ২০ হাজার টাকা সাধারণ রোগীরা দিশেহারা হয়ে পরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসককে নিকট এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন এত টাকা দিয়ে চিকিৎসা করা আমাদের দেশে সবার সম্ভব নয়, যে চিকিৎসায় ২০ হাজার টাকার ইনজেকশন দিতে হয় তার অল্টারনেটিভ চিকিৎসাও রয়েছে। তবে চোখ নষ্ট হওয়ার বিষয় তিনি মেডিসিনের পার্শপ্রতিক্রিয়ার কারনে এমন সমস্যা হতে পারে।

এদিকে একাধিক সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মক্কা আই হসপিটালে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক অসহায় মানুষ চিকিৎসা করাতে এসে তাদের সামন্য কারনেই অপারেশন অথবা ২০ হাজার টাকা মুল্যের ইনজেকশন দেওয়ায় বাধ্য করে পরে সুস্থ হওয়ার বদলে উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাপটের কাছে ভুক্তভোগীরা অসহায় বিধায় তারা অপচিকিৎসা দিয়েও রয়ে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




উত্তারার মক্কা চক্ষু হাসপাতালের ভুল চিকিৎসার রোগী অন্ধ হওয়ার অভিযোগ!

আপডেট সময় : ০৫:০৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০১৯

ক্রাইম ডেস্কঃ
রাজধানী ঢাকার উত্তরা এলাকায় অবস্থিত মক্কা আই হসপিটালের অপচিকিৎসায় এক রোগীর দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি বিনষ্ট হওয়ার গুরত্বর অভিযোগ উঠেছে। ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার আগে ৬০ বছর বয়সী আমেনা বেগমের চোখে ৬০% দৃষ্টিশক্তি থাকলেও তিনি এখন পুরোই অন্ধ। ভুক্তভোগীর পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে এসে চিকিৎসককে জানালে তাদের বক্তব্য, “আল্লাহ চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কিছু করার নেই”। চোখের সামান্য সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে জামালপুরের পাথালিয়া গ্রাম থেকে থেকে উত্তরা মক্কা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধ। বর্তমানে তিনি চোখেই দেখতে পায়না, অন্যের সহযোগীতা ছাড়া চলাফেরাও করতে পারছেন না।

ভুক্তভোগী বৃদ্ধা আমেনা বেগমের ছেলে আহসান হাবীব পাভেল বলেন, আমার মাকে সুস্থ করাতে গিয়ে এখন তিনি অন্ধ। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসককে এই অপচিকিৎসার জবাব দিতে হবে। প্রয়োজনে আইনী লড়াই করবেন বলেও জানান তিনি।

ভুক্তভোগী পরিবার কর্তৃক বাংলাদেশ অনলাইন প্রেসক্লাব ও সকল গণমাধ্যমের সম্পাদক বরাবর দেওয়া একটি লিখিত অভিযোগ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

লিখিত অভিযোগ এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর ২৩ জানুয়ারি আমেনা বেগমকে মক্কা আই হসপিটালের ডা. জাহিদ হাসানকে দেখানো হয়। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক তাকে জানান, “এভাস্টিন” নামের একটি ইনজেকশন দেওয়া হলে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন। যার মূল্য ২০ হাজার টাকা। সাথে আরো কিছু ওষুধ লিখে দেওয়া হয়। ওই দিনই আমেনা বেগমকে ইনজেকশনটি দেওয়া হলে তিনি বাড়ি চলে যান। বাড়ি যাওয়ার পরদিন থেকেই তার চোখের অবস্থার অবনতি হয় এবং তিনি চোখেই দেখেননা। তিনি পুরো মাত্রায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন।

চিকিৎসা নেওয়ার কয়েকদিন পরে অন্ধ আমেনা বেগমকে ওই হাসপাতালে নেওয়া হলে ডা. নাসিমা আহমেদ ফের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং চিকিৎসা পরবর্তী অবস্থার কথা শুনে উত্তর দেন, “আল্লাহ চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিলে আমাদের কি করার আছে”।

আহসান হাবীব পাভেল আরো অভিযোগ করেন, যে ইনজেকশনের দাম মক্কা হাসপাতাল ২০ হাজার টাকা নিয়েছে, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তার মূল্য ৫শ’ টাকা। অভিযোগের বিষয় হাসপাতালের পরিচালকের সাথে সাক্ষাতে জানতে চাইলে তিনি দাম্ভিককতা নিয়ে বলেন আমারা এমন বহু ঝামেলা সামলাই, আমরা কোনো ভুল করিনি পারলে নিউজ করেন, আদালতের যান আমরা বুঝবো!’

মক্কা হাসপাতালের আশপাশের বসবাসকারী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে কয়েকবছর ধরে এরা চিকিৎসার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। একটি ইনজেকশন দেওয়ায় বাধ্য করে যার মূল্য নেয় কথা বলে ২০ হাজার টাকা সাধারণ রোগীরা দিশেহারা হয়ে পরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসককে নিকট এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন এত টাকা দিয়ে চিকিৎসা করা আমাদের দেশে সবার সম্ভব নয়, যে চিকিৎসায় ২০ হাজার টাকার ইনজেকশন দিতে হয় তার অল্টারনেটিভ চিকিৎসাও রয়েছে। তবে চোখ নষ্ট হওয়ার বিষয় তিনি মেডিসিনের পার্শপ্রতিক্রিয়ার কারনে এমন সমস্যা হতে পারে।

এদিকে একাধিক সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মক্কা আই হসপিটালে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক অসহায় মানুষ চিকিৎসা করাতে এসে তাদের সামন্য কারনেই অপারেশন অথবা ২০ হাজার টাকা মুল্যের ইনজেকশন দেওয়ায় বাধ্য করে পরে সুস্থ হওয়ার বদলে উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাপটের কাছে ভুক্তভোগীরা অসহায় বিধায় তারা অপচিকিৎসা দিয়েও রয়ে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে।