ঢাকা ১১:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়িতে ধস, ইউএনও ওএসডি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০০:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১ ৯৭ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ ডেস্ক; মুজিববর্ষ উপলক্ষে বগুড়ার শেরপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সাতটি বাড়ির বাথরুম ও রান্নাঘরসহ একাংশ ধসে গেছে। অন্য অংশগুলোও ঝুঁকিতে রয়েছে। বাড়িগুলো নির্মাণে স্থান নির্বাচনে অবহেলা, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও শেরপুর উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত আলী শেখকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করেছে। তিনি বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত আছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। বুধবার (৭ জুলাই) এ নিয়ে জেলায় নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, খালের মাটি ধসের কারণে কয়েকটি বাড়ির বাথরুম ও রান্নাঘর ভেঙে যায়। বর্তমানে সেগুলো মেরামতের কাজ চলছে। এখানে নির্বাহী কর্মকর্তার কোনও দুর্নীতি ছিল না। তারপরও তিনি কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকায় তাকে ওএসডি করা হয়েছে। নির্মাণ কমিটির অন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে ও শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২-এর আওয়ায় শেরপুর উপজেলায় দুই কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে দুই শতক করে খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে দরিদ্র ভূমিহীন ১৬৩ পরিবারকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। দুটি কক্ষ, রান্নাঘর, টয়লেটসহ প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয় এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের খানপুর বুড়িগাড়ি এলাকায় খালের কিনারে ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২২টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। গত জানুয়ারিতে বাড়িগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে খালের মাটি সরে যাওয়ায় গত ২২ জুনের আগে সুবিধাভোগী হায়দার আলী, আবদুল কাদের, বাদশা মিয়া, শেফালী বেগম, নদীয়ার চাঁদ, মোকছেদ আলী, সোনা উদ্দিনের বাড়ির বাথরুম, রান্নাঘরগুলো খালে ভেঙে পড়ে যায়। সুবিধাভোগী শেফালী বেগমসহ কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ভেঙে পড়ার শঙ্কায় তার ওই ঘরে থাকছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তড়িঘড়ি করে খালের কিনারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া খালের মাটি কেটে বাড়ির চারপাশে দেওয়া হয়। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি খালে ধসে যাওয়ায় ঘরগুলোর এ অবস্থা হয়েছে। তারা এজন্য তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী শেখ এবং কমিটির অন্যদের স্থান নির্ধারণে অদূরদর্শিতা, অবহেলা ও দুর্নীতিকে দায়ী করেন।

প্রকল্পের ঘর ধসে যাওয়ার খবর পেয়ে নবাগত শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম গত ২২ জুন ওই জায়গা পরিদর্শন করেন। তিনি মাটি ধসে যাওয়া বন্ধ করতে বাঁশের পাইলিং করতে এবং বাথরুম ও রান্নাঘর সংস্কারের নির্দেশ দেন।

খানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রঞ্জু জানান, ধস বন্ধে ধালের ধারে বাঁশের পাইলিং দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভেঙে পড়া বাথরুম ও রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ করার কাজ চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম বুধবার বিকালে জানান, প্রথম প্রকল্পের কয়েকটি বাড়ির বাথরুম ধসে যাওয়ার খবর পেয়েই পরিদর্শন এবং মেরামতের নির্দেশ দেন তিনি। বিষয়টি প্রকল্প পরিচালককেও অবহিত করা হয়। প্রতিরক্ষা গাইড ওয়াল নির্মাণ ও ধসে যাওয়া বাথরুমগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। শিগগিরই কাজ শেষ হবে। লিয়াকত আল শেখের ওএসডি হওয়া সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়িতে ধস, ইউএনও ওএসডি

আপডেট সময় : ১২:০০:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১

সকালের সংবাদ ডেস্ক; মুজিববর্ষ উপলক্ষে বগুড়ার শেরপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সাতটি বাড়ির বাথরুম ও রান্নাঘরসহ একাংশ ধসে গেছে। অন্য অংশগুলোও ঝুঁকিতে রয়েছে। বাড়িগুলো নির্মাণে স্থান নির্বাচনে অবহেলা, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও শেরপুর উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত আলী শেখকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করেছে। তিনি বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত আছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। বুধবার (৭ জুলাই) এ নিয়ে জেলায় নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, খালের মাটি ধসের কারণে কয়েকটি বাড়ির বাথরুম ও রান্নাঘর ভেঙে যায়। বর্তমানে সেগুলো মেরামতের কাজ চলছে। এখানে নির্বাহী কর্মকর্তার কোনও দুর্নীতি ছিল না। তারপরও তিনি কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকায় তাকে ওএসডি করা হয়েছে। নির্মাণ কমিটির অন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে ও শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২-এর আওয়ায় শেরপুর উপজেলায় দুই কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে দুই শতক করে খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে দরিদ্র ভূমিহীন ১৬৩ পরিবারকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। দুটি কক্ষ, রান্নাঘর, টয়লেটসহ প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয় এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের খানপুর বুড়িগাড়ি এলাকায় খালের কিনারে ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২২টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। গত জানুয়ারিতে বাড়িগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে খালের মাটি সরে যাওয়ায় গত ২২ জুনের আগে সুবিধাভোগী হায়দার আলী, আবদুল কাদের, বাদশা মিয়া, শেফালী বেগম, নদীয়ার চাঁদ, মোকছেদ আলী, সোনা উদ্দিনের বাড়ির বাথরুম, রান্নাঘরগুলো খালে ভেঙে পড়ে যায়। সুবিধাভোগী শেফালী বেগমসহ কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ভেঙে পড়ার শঙ্কায় তার ওই ঘরে থাকছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তড়িঘড়ি করে খালের কিনারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া খালের মাটি কেটে বাড়ির চারপাশে দেওয়া হয়। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি খালে ধসে যাওয়ায় ঘরগুলোর এ অবস্থা হয়েছে। তারা এজন্য তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী শেখ এবং কমিটির অন্যদের স্থান নির্ধারণে অদূরদর্শিতা, অবহেলা ও দুর্নীতিকে দায়ী করেন।

প্রকল্পের ঘর ধসে যাওয়ার খবর পেয়ে নবাগত শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম গত ২২ জুন ওই জায়গা পরিদর্শন করেন। তিনি মাটি ধসে যাওয়া বন্ধ করতে বাঁশের পাইলিং করতে এবং বাথরুম ও রান্নাঘর সংস্কারের নির্দেশ দেন।

খানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রঞ্জু জানান, ধস বন্ধে ধালের ধারে বাঁশের পাইলিং দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভেঙে পড়া বাথরুম ও রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ করার কাজ চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম বুধবার বিকালে জানান, প্রথম প্রকল্পের কয়েকটি বাড়ির বাথরুম ধসে যাওয়ার খবর পেয়েই পরিদর্শন এবং মেরামতের নির্দেশ দেন তিনি। বিষয়টি প্রকল্প পরিচালককেও অবহিত করা হয়। প্রতিরক্ষা গাইড ওয়াল নির্মাণ ও ধসে যাওয়া বাথরুমগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। শিগগিরই কাজ শেষ হবে। লিয়াকত আল শেখের ওএসডি হওয়া সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।