ঢাকা ০২:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




দুর্নীতি ঢাকতে সংবাদমাধ্যমের সাইনবোর্ড, এ যেনো বাত্তির নিচে অন্ধকার!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১ ১১৫ বার পড়া হয়েছে

এইচ আর শফিক: বিজ্ঞাপনের ঢাকঢোল, ফিটফাট এয়ারলাইন্স, ওয়্যারহাউজ ব্যবসা সহ ১২ টি অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের ঝুড়ি মেলে বসা ইউএস-বাংলা গ্রুপ দেশের মানুষের নিকট একটি সুপরিচিত গ্রুপ কোম্পানি হিসেবে চেনা হলেও এই সুপরিচিতির আড়ালে তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির যেন শেষ নেই।

ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি, বন্ড সুবিধা নিয়ে কালোবাজারি, বিদেশে অর্থ পাচার, নিজেদের এয়ারলাইন্সকে স্বর্ণ চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে চোরাকারবারীদের নিকট সমাদৃত করা সহ নানা গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ইউএস-বাংলা গ্রুপ। দূর্নীতি ঢাকতে সংবাদমাধ্যমের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেদের সাধু সন্ন্যাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠত করার অনবদ্য প্রচেষ্টা ইউএস-বাংলা গ্রুপের। এ যেনো বাত্তির নিচে অন্ধকার।

নিজেদের অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে শূন্য থেকে সম্পদের মহাআকাশে আহরণ করা ইউএস-বাংলা গ্রুপ মূলত ভূমিদস্যু হিসেবেই রূপগঞ্জে জনমানুষের কাছে অতি পরিচিত, পাশাপাশি কৃষকদের কাছে তারা এক আতঙ্কের নাম।
ইতিমধ্যেই একেক করে এই কোম্পানীর বিভিন্ন দুর্নীতির বদ্ধ ঝুড়ি খুলতে বসেছে। আর তাদের সকল অপকর্ম ঢাকার অস্ত্র হিসেবে ঢাকা পোস্ট নামে একটি অনলাইন ও আজকের পত্রিকা নামে একটি দৈনিক সংবাদমাধ্যমের সাইনবোর্ডে দাঁড় করিয়েছে কোম্পানিটি।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যেন ইতোমধ্যেই সোনার খনিতে রূপান্তরিত হয়েছে দেশবাসীর কাছে! স্বর্ণ চোরাচালানের এমন সংবাদে গনমাধ্যমের পৃষ্ঠা ইতিমধ্যেই চেয়ে গেছে। তবুও যেন রাষ্ট্র ও প্রশাসনের টনক নড়ছে না। দিন দিন চোরাচালানীদের নিরাপদ রুট ও পরিবহন হিসেবে অত্যন্ত সুপরিচিত হয়ে উঠেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। শুধু কি সোনা? ইউএস-বাংলা গ্রুপের আবাসন প্রকল্প আমেরিকান সিটি ফসলি জমি দখল ও বালু ভরাট করে গড়ে তুলছে আবাসন প্রকল্প। পরিবেশের জন্য যা অত্যন্ত হুমকী। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই রূপগঞ্জ এলাকায় বিস্তৃত ফসলের জমিতে গড়ে উঠেছে আমেরিকান সিটি নামক একটি আবাসন প্রকল্প। জমি না কিনেই কৃষি জমি দখল করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরদ্ধে। যা নিয়ে এটি পূর্বেই স্থানীয় কৃষকরা মানববন্ধন পর্যন্ত করেছেন।

ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সুত্রে জানা গেছে, বন্ড সুবিধা নিয়ে কালোবাজারিতে জড়িয়ে পড়েছে ইউএস-বাংলা গ্রুপ। শুল্কমুক্ত পণ্য আমদানিতে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার আড়ালে কালোবাজারিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউএস বাংলা গ্রুপের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে ভয়াবহ অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে ইউএস-বাংলা লেদার।

কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ সূত্র জানা গেছে, কালোবাজারি আর সোনা চোরাচালানের পাশাপাশি ভ্যাট ফাঁকিতেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইউএস বাংলা গ্রুপের ১২ অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আত্মসাৎ করে মাত্র কয়েক বছরে ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ’ হয়েছে এই দুর্নীতিবাজ ইউএস বাংলা গ্রুপ।

ইউএস বাংলা গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠানের একটির বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালান ও আরেকটির বিরুদ্ধে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার অপব্যবহার এবং অর্থ পাচারের তথ্য রয়েছে। এ অবস্থায় ইউএস বাংলা গ্রুপের ১২ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ফাঁকি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভ্যাট বিভাগ সূত্র।

বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি নেই। তবুও বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানি করছে তারা। এছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস যাত্রীদের জীবনকে ফেলছে মৃত্য ঝুঁকিতে।

এছাড়াও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর বিরুদ্ধে পাইলটদের চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ অনেক পুরনো। নেপালের কাঠমান্ডুতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৫১ জনের প্রাণহানির ক্ষেত্রেও সেই ফ্লাইটের আগে পাইলট আবিদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টির অভিযোগ আছে ইউএস-বাংলা এয়ালাইনসের ওপর।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের বক্তব্য সহ আরও বিস্তারিত দুর্নীতির চিত্র থাকছে পরবর্তী সংখ্যায়। চলবে………….

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




দুর্নীতি ঢাকতে সংবাদমাধ্যমের সাইনবোর্ড, এ যেনো বাত্তির নিচে অন্ধকার!

আপডেট সময় : ১১:১২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১

এইচ আর শফিক: বিজ্ঞাপনের ঢাকঢোল, ফিটফাট এয়ারলাইন্স, ওয়্যারহাউজ ব্যবসা সহ ১২ টি অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের ঝুড়ি মেলে বসা ইউএস-বাংলা গ্রুপ দেশের মানুষের নিকট একটি সুপরিচিত গ্রুপ কোম্পানি হিসেবে চেনা হলেও এই সুপরিচিতির আড়ালে তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির যেন শেষ নেই।

ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি, বন্ড সুবিধা নিয়ে কালোবাজারি, বিদেশে অর্থ পাচার, নিজেদের এয়ারলাইন্সকে স্বর্ণ চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে চোরাকারবারীদের নিকট সমাদৃত করা সহ নানা গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ইউএস-বাংলা গ্রুপ। দূর্নীতি ঢাকতে সংবাদমাধ্যমের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেদের সাধু সন্ন্যাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠত করার অনবদ্য প্রচেষ্টা ইউএস-বাংলা গ্রুপের। এ যেনো বাত্তির নিচে অন্ধকার।

নিজেদের অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে শূন্য থেকে সম্পদের মহাআকাশে আহরণ করা ইউএস-বাংলা গ্রুপ মূলত ভূমিদস্যু হিসেবেই রূপগঞ্জে জনমানুষের কাছে অতি পরিচিত, পাশাপাশি কৃষকদের কাছে তারা এক আতঙ্কের নাম।
ইতিমধ্যেই একেক করে এই কোম্পানীর বিভিন্ন দুর্নীতির বদ্ধ ঝুড়ি খুলতে বসেছে। আর তাদের সকল অপকর্ম ঢাকার অস্ত্র হিসেবে ঢাকা পোস্ট নামে একটি অনলাইন ও আজকের পত্রিকা নামে একটি দৈনিক সংবাদমাধ্যমের সাইনবোর্ডে দাঁড় করিয়েছে কোম্পানিটি।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যেন ইতোমধ্যেই সোনার খনিতে রূপান্তরিত হয়েছে দেশবাসীর কাছে! স্বর্ণ চোরাচালানের এমন সংবাদে গনমাধ্যমের পৃষ্ঠা ইতিমধ্যেই চেয়ে গেছে। তবুও যেন রাষ্ট্র ও প্রশাসনের টনক নড়ছে না। দিন দিন চোরাচালানীদের নিরাপদ রুট ও পরিবহন হিসেবে অত্যন্ত সুপরিচিত হয়ে উঠেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। শুধু কি সোনা? ইউএস-বাংলা গ্রুপের আবাসন প্রকল্প আমেরিকান সিটি ফসলি জমি দখল ও বালু ভরাট করে গড়ে তুলছে আবাসন প্রকল্প। পরিবেশের জন্য যা অত্যন্ত হুমকী। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই রূপগঞ্জ এলাকায় বিস্তৃত ফসলের জমিতে গড়ে উঠেছে আমেরিকান সিটি নামক একটি আবাসন প্রকল্প। জমি না কিনেই কৃষি জমি দখল করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরদ্ধে। যা নিয়ে এটি পূর্বেই স্থানীয় কৃষকরা মানববন্ধন পর্যন্ত করেছেন।

ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সুত্রে জানা গেছে, বন্ড সুবিধা নিয়ে কালোবাজারিতে জড়িয়ে পড়েছে ইউএস-বাংলা গ্রুপ। শুল্কমুক্ত পণ্য আমদানিতে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার আড়ালে কালোবাজারিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউএস বাংলা গ্রুপের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে ভয়াবহ অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে ইউএস-বাংলা লেদার।

কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ সূত্র জানা গেছে, কালোবাজারি আর সোনা চোরাচালানের পাশাপাশি ভ্যাট ফাঁকিতেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইউএস বাংলা গ্রুপের ১২ অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আত্মসাৎ করে মাত্র কয়েক বছরে ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ’ হয়েছে এই দুর্নীতিবাজ ইউএস বাংলা গ্রুপ।

ইউএস বাংলা গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠানের একটির বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালান ও আরেকটির বিরুদ্ধে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার অপব্যবহার এবং অর্থ পাচারের তথ্য রয়েছে। এ অবস্থায় ইউএস বাংলা গ্রুপের ১২ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ফাঁকি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভ্যাট বিভাগ সূত্র।

বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি নেই। তবুও বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানি করছে তারা। এছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস যাত্রীদের জীবনকে ফেলছে মৃত্য ঝুঁকিতে।

এছাড়াও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর বিরুদ্ধে পাইলটদের চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ অনেক পুরনো। নেপালের কাঠমান্ডুতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৫১ জনের প্রাণহানির ক্ষেত্রেও সেই ফ্লাইটের আগে পাইলট আবিদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টির অভিযোগ আছে ইউএস-বাংলা এয়ালাইনসের ওপর।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের বক্তব্য সহ আরও বিস্তারিত দুর্নীতির চিত্র থাকছে পরবর্তী সংখ্যায়। চলবে………….