ঢাকা ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




৩ কোটি টাকার ভবন নির্মাণ কাজ রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা-প্রকৌশল বিভাগ নীরব!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৫:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ৭৫ বার পড়া হয়েছে

মো. হুমাযুন কবির, গৌরীপুর ময়মনসিংহ: পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ ভেঙ্গে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০সালের ৫ জানুয়ারি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৪তলাবিশিষ্ট ভবনের প্রাক্কলিক ব্যয় ২ কোটি ৮৮লাখ টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিলা কন্সট্রাকশন শুরুতেই ভিম, পিলার নির্মাণ করে। তবে ৯মাস যাবত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন খোঁজখবর নেই। প্রকৌশল বিভাগের কোন কর্মকর্তাও কাজ তদারকি করতে আসেনি। এমন অবস্থায় পড়ে আছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের লাল খান উচ্চ বিদ্যালয়ের বহুতল ভবন নিমার্ণ কাজ। ফলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসী হতাশ।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণধিীন ভবনের রডে মরিচা ধরেছে। নির্মিত পিলারের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণত্রুটির জন্য ফাঁকা রয়েছে। মাঠে পরে রয়েছে মিক্সচার মেশিন, চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী।
এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মোঃ মঞ্জুরুল হক বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি পাঠদান শুরু হলে ক্লাসরুমের চরম সংকট দেখা দিবে। বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৬৪জন, ৭ম শ্রেণিতে ৮৫জন, ৮ম শ্রেণিতে ৯৮জন, ৯ম শ্রেণিতে ৭৭জন ও ১০ম শ্রেণিতে ৫২জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। ১৯৬৯সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়। ক্ষুব্দ অভিভাক আশরাফুল আলম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে যোগসাজশে বিল তুলে নিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিদ্যালয়ের কোন কাজ হচ্ছে না। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গৌরীপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মোঃ হাবিব উল্লাহ বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও প্রকৌশল বিভাগকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরেও কতো টাকা বরাদ্দ, কি কাজ করবে- কি কি কাজ হবে এসব বিষয়ে কোন তথ্যই দিচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকটি ভবন নির্মাণের প্রজেক্ট প্রোফাইল নির্মানাধীন এলাকায় স্থাপন বাধ্যতামূলক। এক বছর অতিক্রম করার পরেও তা করা হয়নি। প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আঁতাত করে ভবন নির্মাণেও নিম্নমানের ইট, পাথর, রড ও নিমার্ণ সামগ্রী ব্যবহার করছে।

নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রসঙ্গে শিলা কন্সট্রাকশনের প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের শুরুতেই জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে প্রায় ২/৩মাস নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিলো। তারপরেও কিছুদিন কাজ করেছি। একটু বিলম্ব হয়েছে তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করবো।

ময়মনসিংহ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপপ্রকৌশলী এটিএম গোলাম সাব্বির জানান, প্রজেক্ট প্রোফাইল স্থাপন হয়নি এটা আমার জানা ছিলো না। ৭দিনের মধ্যে এটা স্থাপন ও নির্মাণ কাজ আরম্ভ করা হবে। তিনি আরো জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৫৪০দিন মেয়াদ ছিলো, করোনাকালীন দুর্যোগের জন্য এ মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করা হবে। গ্রেডভিম নির্মাণের পরেও জমির মালিক আপত্তি দিয়েছিলো যে কারণে কয়েকদফা নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্থ হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




৩ কোটি টাকার ভবন নির্মাণ কাজ রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা-প্রকৌশল বিভাগ নীরব!

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

মো. হুমাযুন কবির, গৌরীপুর ময়মনসিংহ: পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ ভেঙ্গে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০সালের ৫ জানুয়ারি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৪তলাবিশিষ্ট ভবনের প্রাক্কলিক ব্যয় ২ কোটি ৮৮লাখ টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিলা কন্সট্রাকশন শুরুতেই ভিম, পিলার নির্মাণ করে। তবে ৯মাস যাবত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন খোঁজখবর নেই। প্রকৌশল বিভাগের কোন কর্মকর্তাও কাজ তদারকি করতে আসেনি। এমন অবস্থায় পড়ে আছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের লাল খান উচ্চ বিদ্যালয়ের বহুতল ভবন নিমার্ণ কাজ। ফলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসী হতাশ।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণধিীন ভবনের রডে মরিচা ধরেছে। নির্মিত পিলারের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণত্রুটির জন্য ফাঁকা রয়েছে। মাঠে পরে রয়েছে মিক্সচার মেশিন, চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী।
এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মোঃ মঞ্জুরুল হক বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি পাঠদান শুরু হলে ক্লাসরুমের চরম সংকট দেখা দিবে। বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৬৪জন, ৭ম শ্রেণিতে ৮৫জন, ৮ম শ্রেণিতে ৯৮জন, ৯ম শ্রেণিতে ৭৭জন ও ১০ম শ্রেণিতে ৫২জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। ১৯৬৯সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়। ক্ষুব্দ অভিভাক আশরাফুল আলম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে যোগসাজশে বিল তুলে নিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিদ্যালয়ের কোন কাজ হচ্ছে না। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গৌরীপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মোঃ হাবিব উল্লাহ বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও প্রকৌশল বিভাগকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরেও কতো টাকা বরাদ্দ, কি কাজ করবে- কি কি কাজ হবে এসব বিষয়ে কোন তথ্যই দিচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকটি ভবন নির্মাণের প্রজেক্ট প্রোফাইল নির্মানাধীন এলাকায় স্থাপন বাধ্যতামূলক। এক বছর অতিক্রম করার পরেও তা করা হয়নি। প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আঁতাত করে ভবন নির্মাণেও নিম্নমানের ইট, পাথর, রড ও নিমার্ণ সামগ্রী ব্যবহার করছে।

নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রসঙ্গে শিলা কন্সট্রাকশনের প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের শুরুতেই জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে প্রায় ২/৩মাস নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিলো। তারপরেও কিছুদিন কাজ করেছি। একটু বিলম্ব হয়েছে তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করবো।

ময়মনসিংহ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপপ্রকৌশলী এটিএম গোলাম সাব্বির জানান, প্রজেক্ট প্রোফাইল স্থাপন হয়নি এটা আমার জানা ছিলো না। ৭দিনের মধ্যে এটা স্থাপন ও নির্মাণ কাজ আরম্ভ করা হবে। তিনি আরো জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৫৪০দিন মেয়াদ ছিলো, করোনাকালীন দুর্যোগের জন্য এ মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করা হবে। গ্রেডভিম নির্মাণের পরেও জমির মালিক আপত্তি দিয়েছিলো যে কারণে কয়েকদফা নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্থ হয়েছে।